হোয়াইট হাউসের নতুন সিদ্ধান্তে বদলে গেল মার্কিন মধ্যপ্রাচ্য নীতি

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন তাদের ২০২৫ ন্যাশনাল সিকিউরিটি স্ট্র্যাটেজি প্রকাশ করেছে। ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ শিরোনামের এ নথিতে জানানো হয়েছে, ওয়াশিংটন আর বিদেশে সামরিক হস্তক্ষেপ বা সরকার পতনের অভিযানে জড়াবে না। বরং মধ্যপ্রাচ্যকে সংকট নয়, বিনিয়োগের নতুন অংশীদার হিসেবে গড়ে তোলাই হবে মূল লক্ষ্য।

২৯ পৃষ্ঠার কৌশলগত নথি বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান নিরাপত্তা অগ্রাধিকার হবে সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ, অভিবাসন রোধ, দেশীয় শিল্পভিত্তি রক্ষা এবং প্রযুক্তিগত শ্রেষ্ঠত্ব ধরে রাখা। এর পাশাপাশি পশ্চিম গোলার্ধে মার্কিন প্রভাব পুনঃস্থাপনকেও সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।

মধ্যপ্রাচ্যের জন্য নতুন কাঠামো
নথিতে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র আর অতীতের মতো ‘অন্তহীন যুদ্ধ’ চালাবে না; তবে কোনো শত্রুভাবাপন্ন শক্তিকে মধ্যপ্রাচ্য নিয়ন্ত্রণের সুযোগও দেবে না। নতুন নীতিতে মধ্যপ্রাচ্যের ঐতিহ্যগত গুরুত্ব বিশেষ করে তেলের ওপর নির্ভরতা হ্রাস পেয়েছে। এখন অঞ্চলটিকে পারমাণবিক জ্বালানি, এআই, প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি ও বৈশ্বিক সাপ্লাই চেইন বিস্তারের জায়গা হিসেবে দেখা হচ্ছে।

সিরিয়া: চারপক্ষীয় সমীকরণ
কৌশলে সিরিয়াকে ‘স্থিতিশীলতার ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চল’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এখানে শান্তির জন্য চারপক্ষীয় কাঠামো যুক্তরাষ্ট্র, আরব মিত্র, তুরস্ক ও ইসরায়েল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে নথিতে উল্লেখ আছে। ইসরায়েলের সিরিয়ায় হামলা স্থগিতের আহ্বান জানালেও ওয়াশিংটন দামেস্কের নতুন নেতৃত্বকে প্রশংসা করেছে।

ইরাককে গুরুত্বহীন করা
মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের দুই দশকের অন্যতম বড় ফাইল ছিল ইরাক। কিন্তু নতুন কৌশলে দেশটিকে কার্যত অগ্রাধিকারের বাইরে রাখা হয়েছে, যা ওয়াশিংটনের নীতি পরিবর্তনের বড় ইঙ্গিত।

গালফে নীতি পরিবর্তন
গালফ অঞ্চলে দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্র মানবাধিকার ও গণতন্ত্র ইস্যুতে চাপ প্রয়োগ করে আসছিল। ট্রাম্প প্রশাসন প্রথমবারের মতো স্বীকার করেছে যে এই ‘চাপের কূটনীতি’ কার্যকর হয়নি। নতুন নীতিতে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র এখন অঞ্চলের নেতৃত্বকে তাদের নিজস্ব ব্যবস্থায় গ্রহণ করবে। একইসঙ্গে যে কোনো সংস্কার চাপিয়ে না দিয়ে স্থানীয়ভাবে শুরু হলে তাতে সহযোগিতা করবে।

তথ্যসূত্র : শাফাক নিউজ
এসএস/টিকে

Share this news on:

সর্বশেষ

img
অনন্যার কাছে ‘জেন জি’ ভাষা শিখলেন Dec 18, 2025
img
নাম-খ্যাতি বাড়লেও সংযম হারানো যাবে না: রঞ্জিত মল্লিক Dec 18, 2025
img
উচ্চ পর্যায়ের নির্দেশেই সরকারি বাসায় অবস্থান করছেন আসিফ-মাহফুজ Dec 18, 2025
img
সাংবাদিক আনিস আলমগীরকে অবিলম্বে মুক্তি দিন: অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল Dec 18, 2025
img
রেস অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের ১২ ফান্ড তদন্তে বিএসইসির ৬ কমিটি Dec 18, 2025
img
ভেনেজুয়েলার তেল যুক্তরাষ্ট্রের সম্পদ, দাবি করেছেন ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ সহকারী Dec 18, 2025
img
নতুন চুক্তি করে মায়ামিতেই থাকছেন সুয়ারেজ Dec 18, 2025
img
চট্টগ্রামের চকবাজার তেলিপট্টিতে আগুন Dec 18, 2025
img
ইউনাইটেড ছাড়লে স্পেনিশ বা ইতালিয়ান ক্লাবে খেলতে চান ব্রুনো ফের্নান্দেস Dec 18, 2025
img

জুলাই হত্যাযজ্ঞ

কাদের-আরাফাতসহ ৭ নেতার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল Dec 18, 2025
img
‘ধুরন্ধর’ অক্ষয় খান্নার হয়ে কি বললেন স্মৃতি ইরানি? Dec 18, 2025
img
প্রাক্তন স্ত্রী রীতা ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে মামলা করলেন কুমার শানু Dec 18, 2025
img
লেভানদোভস্কির ‘অবিশ্বাস্য’ রেকর্ডে চোখ কেইনের Dec 18, 2025
img
ঢাকায় ফের চালু ভারতীয় ভিসা সেন্টার Dec 18, 2025
img
‘পোস্টাল ভোট বিডি’ অ্যাপে প্রবাসীদের নিবন্ধন ছাড়াল ৪ লাখ ৮৩ হাজার Dec 18, 2025
img
ইউক্রেন ইস্যুতে কোনো আপস করবেন না পুতিন Dec 18, 2025
img
নেটপ্রভাবী থেকে নায়িকা, প্রীতি সরকারের নতুন অধ্যায়! Dec 18, 2025
img
শুধু পড়াশোনা করে কেউ মানুষ হয় না: যীশু সেনগুপ্ত Dec 18, 2025
img
নেইমারকে বিশ্বকাপ পর্যন্ত রাখতে চায় সান্তোস Dec 18, 2025
img
তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস Dec 18, 2025