বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সংকটে থাকা পাকিস্তানকে আরও ১২০ কোটি ডলার ঋণ অনুমোদন করেছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। মঙ্গলবার আইএমএফের নির্বাহী বোর্ড এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, পাকিস্তানের অর্থনৈতিক সংস্কার কর্মসূচি দ্বিতীয় দফায় পর্যালোচনার পর নতুন এই ঋণ প্রদানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শর্ত অনুযায়ী, অনুমোদিত অর্থের মধ্যে ১০০ কোটি ডলার ব্যয় করতে হবে নিয়মিত অর্থনৈতিক কার্যক্রমে এবং বাকি ২০ কোটি ডলার ব্যয় করতে হবে জলবায়ু–সংক্রান্ত দুর্যোগ মোকাবিলা ও অবকাঠামো উন্নয়নে।
আইএমএফ এর আগে ২০২৪ সালে দুই দফায় পাকিস্তানকে মোট ৩৩০ কোটি ডলার ঋণ দেয়। শর্ত ছিল, ৩৭ মাসে কিস্তিতে এসব অর্থ পরিশোধ করবে দেশটি। নতুন ১২০ কোটি ডলার যুক্ত হওয়ায় আইএমএফের প্রতি পাকিস্তানের মোট দায় আরও বৃদ্ধি পেল।
পাকিস্তান দীর্ঘদিন ধরেই আইএমএফের ওপর নির্ভরশীল। তবে করোনার পর বৈদেশিক রিজার্ভ কমে যাওয়ায় সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেশটিকে ঋণ পেতে আরও কঠোর শর্ত ও দীর্ঘ আলোচনার মুখোমুখি হতে হচ্ছে।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ এক বিবৃতিতে আইএমএফের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেছেন, আইএমএফের এই ঋণ মঞ্জুর প্রমাণ করছে যে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক সংস্কার সঠিক পথে আছে।
সংস্কার কর্মসূচিতে সহযোগিতা করার জন্য পাকিস্তানের সেনা ও প্রতিরক্ষাবাহিনীর প্রধান ফিল্ড মার্শাল অসিম মুনিরকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন শেহবাজ এবং বিশেষভাবে প্রশংসা করেছেন কেন্দ্রীয় সরকারের অর্থমন্ত্রী মুহম্মদ আওরঙ্গজেবের। তিনি বলেছেন, এই ঋণের কিস্তি প্রাপ্তির পেছনে মুহম্মদ আওরঙ্গজেবের ‘অক্লান্ত পরিশ্রমের’ বড় ভূমিকা আছে।
২০২৪ ও ২০২৫ সালে প্রবল বর্ষণ ও তার ফলে সৃষ্ট বন্যা-ভূমিধসে ব্যাপকভাবে আর্থিক ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়েছে পাকিস্তান। আইএমএফের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, প্রাকৃতিক দুর্যোগজনিত কারণে বার বার প্রতিবন্ধকতা এলেও পাকিস্তান নিজেদের রিজার্ভ বৃদ্ধি থেকে মনযোগ সরায়নি।
বর্তমানে দেশটির ডলারের রিজার্ভের পরিমাণ ১ হাজার ৪৫০ কোটি ডলার এবং নিকট ভবিষ্যতে এই পরিমাণ আরও বাড়বে, এমন ইঙ্গিত সম্পর্কে নিশ্চয়তা পাওয়া যাচ্ছে।
ঋণের কিস্তি মঞ্জুরের ক্ষেত্রে রিজার্ভবৃদ্ধির এই ব্যাপারটি প্রধান নিয়ামক হিসেবে কাজ করেছে বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে আইএমএফ।
সূত্র: রয়টার্স
এমআর