আবু সাঈদ ঘটনার মামলায় চলছে বিশেষ তদন্ত কর্মকর্তার সাক্ষ্য

চব্বিশের জুলাই অভ্যুত্থানের প্রথম শহীদ রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক ভিসি হাসিবুর রশীদসহ ৩০ আসামির বিরুদ্ধে ২০তম দিনের সাক্ষ্য দিচ্ছেন বিশেষ তদন্ত কর্মকর্তা ও প্রসিকিউটর তানভীর হাসান জোহা।

বুধবার (১০ ডিসেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেলে এ সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়।
প্যানেলের বাকি সদস্যরা হলেন- অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মঞ্জুরুল বাছিদ এবং জেলা ও দায়রা জজ নূর মোহাম্মদ শাহরিয়ার কবীর।

এ দিন বেলা সোয়া ১১টার পর সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। ২৩ নম্বর সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দেন তদন্ত সংস্থার রেকর্ড সংরক্ষণকারী এসআই মো. কামরুল হোসেন। এরপর তানভীর হাসান জোহার সাক্ষ্য শুরু হয়।

গতকাল (মঙ্গলবার) ২২ নম্বর সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ। জবানবন্দিতে জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের পুরো ঘটনা বর্ণনা দেন হাসনাত আবদুল্লাহ। সমন্বয়কদের তুলে নিয়ে কোথায় রাখা হয়েছিল তা বলতে গিয়ে নতুন এক সেইফ হাউজের কথা জানান। এছাড়া বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সময় টিভি, ডিবিসি, ৭১ টিভিসহ কয়েকটি টেলিভিশন চ্যানেলের ‘নোংরা ভূমিকা’ পালন করেছে বলে উল্লেখ করেন। তাদের সামনে বসেই স্ক্রল বলতেন গোয়েন্দা কর্মকর্তারা। আর সেই কথাই টিভি চ্যানেলে প্রচার করা হতো বলেও ট্রাইব্যুনালের কাছে অভিযোগ করেন এই জুলাইযোদ্ধা।

পরে তাকে জেরা করেন আইনজীবী আমিনুল গণি টিটো, কনস্টেবল সুজন ও এএসআই আমির হোসেনের পক্ষে শুনানি করেন আজিজুর রহমান দুলু।

এ মামলায় গ্রেপ্তার ছয়জন হলেন- এএসআই আমির হোসেন, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) সাবেক প্রক্টর শরিফুল ইসলাম, কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায়, ছাত্রলীগ নেতা ইমরান চৌধুরী, রাফিউল হাসান রাসেল ও আনোয়ার পারভেজ। বাকিরা পলাতক রয়েছেন।

চলতি বছরের ২৭ আগস্ট সূচনা বক্তব্যের মাধ্যমে এ মামলার আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হয়। সূচনা বক্তব্য উপস্থাপন করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। ৬ আগস্ট ৩০ আসামির বিরুদ্ধে ফর্মাল চার্জ (আনুষ্ঠানিক অভিযোগ) গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। তবে এ মামলায় বেরোবির সাবেক ভিসিসহ ২৪ জন এখনও পলাতক রয়েছেন। তাদের পক্ষে গত ২২ জুলাই সরকারি খরচে চারজন আইনজীবী নিয়োগ দেওয়া হয়। ৩০ জুলাই পলাতক আসামিদের পক্ষে শুনানি করেন রাষ্ট্রনিযুক্ত চার আইনজীবী। এর মধ্যে পাঁচজনের হয়ে লড়েন আইনজীবী সুজাদ মিয়া। নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ নেতাদের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মামুনুর রশীদ। এছাড়া শুনানি করেন আইনজীবী ইশরাত জাহান ও শহিদুল ইসলাম।

২৯ জুলাই তিন আসামির পক্ষে শুনানি হয়। এর মধ্যে শরিফুলের হয়ে লড়েন আইনজীবী আমিনুল গণি টিটো। কনস্টেবল সুজনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী আজিজুর রহমান দুলু ও ইমরানের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী সালাহউদ্দিন রিগ্যান। ২৮ জুলাই এ মামলার ৩০ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের ওপর শুনানি শেষ করে প্রসিকিউশন। ৩০ জুন আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে নেন ট্রাইব্যুনাল। আর ২৪ জুন মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন তদন্ত সংস্থার কর্মকর্তারা। এ মামলায় মোট সাক্ষী ৬২ জন।

ইএ/এসএন

Share this news on:

সর্বশেষ

img
হাদিকে হত্যাচেষ্টার মধ্য দিয়ে ফ্যাসিস্টরা মাথাচাড়া দিতে চাচ্ছে : মির্জা ফখরুল Dec 14, 2025
img
আর কারো বাকস্বাধীনতা খর্ব করতে দেওয়া হবে না: মো. শহিদুল ইসলাম Dec 14, 2025
img

আসিফ নজরুল

যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের দুর্নীতি অনিয়মের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেব Dec 14, 2025
img
শুটিংয়ের মাঝেই চলছে বিয়ের পরিকল্পনা অভিনেত্রী মধুমিতার! Dec 14, 2025
img
থাইল্যান্ডের সীমান্তবর্তী প্রদেশে কারফিউ জারি Dec 14, 2025
img
মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতি তুলে ধরতে বধ্যভূমি সংরক্ষণ করা জরুরি : চসিক মেয়র Dec 14, 2025
img
পুরাতন বিমানবন্দর ও আশপাশের এলাকায় ড্রোন ওড়ানো নিষেধ Dec 14, 2025
img
চট্টগ্রামে ট্রাক উল্টে প্রাণ গেল ২ জনের, আহত আরও ৪ Dec 14, 2025
img
পরিচিতি আর বন্ধুত্ব এক নয়: পরমব্রত চ্যাটার্জি Dec 14, 2025
img
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে ইসির বৈঠক আজ বিকেলে Dec 14, 2025
img
৬ মাসে ১৮ কেজি কমিয়ে চমকে দিলেন বাঁধন Dec 14, 2025
img
তারেক রহমানকে এমন সংবর্ধনা দেয়া হবে যা কোনো নেতাকে দেয়া হয়নি: মির্জা ফখরুল Dec 14, 2025
img
আলাভেস ম্যাচের আগে এমবাপ্পেসহ ১২ খেলোয়াড় নিয়ে বিপাকে মাদ্রিদ কোচ Dec 14, 2025
img
‘বনলতা এক্সপ্রেস’ এর যাত্রী হলেন কারা? Dec 14, 2025
img
শেখ হাসিনা-সেনা কর্মকর্তাসহ অভিযোগ গঠনের আদেশ ২১ ডিসেম্বর Dec 14, 2025
img
সুদানে সন্ত্রাসী হামলায় হতাহত ১৪ বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীর পরিচয় প্রকাশ করল আইএসপিআর Dec 14, 2025
img
জামিন না মঞ্জুর, শতদ্রুকে ১৪ দিনের পুলিশি হেফাজতে পাঠাল বিধাননগর মহকুমা আদালত Dec 14, 2025
img
জুনিয়র বৃত্তি পরীক্ষা নিয়ে জরুরি নির্দেশনা Dec 14, 2025
img
লিবিয়ার ডাকের চেয়ারম্যানের সঙ্গে রাষ্ট্রদূতের বৈঠক Dec 14, 2025
img
হাদির সর্বশেষ অবস্থা জানালো চিকিৎসক Dec 14, 2025