নীলফামারী হানাদারমুক্ত দিবস আজ

নীলফামারী হানাদারমুক্ত দিবস আজ ১৩ ডিসেম্বর, শনিবার। ১৯৭১ সালের আজকের দিনে শত্রুমুক্ত হয় নীলফামারী। ওড়ানো হয় লাল সবুজের পতাকা। জয় বাংলা ধ্বনিতে বিজয়োল্লাস করতে থাকেন আবাল-বৃদ্ধ-বনিতা।

নীলফামারীর দামাল ছেলেরা দেশকে হানাদারমুক্ত করতে ৭ মার্চ ঝাঁপিয়ে পড়েন। ৯ মাসের মুক্তিযুদ্ধে ক্যাপ্টেন এম এ বাশার, আলী হাসান, আহমদুল হক প্রধান, আনজারুল হক ধীরাজ, জাহরুল ইসলাম, মোজাম্মেল হক, মিজানুর রহমান, মির্জা হাবিবুর রহমানসহ ১৭ জন বীরযোদ্ধা শহীদ হন নীলফামারীতে।

যুদ্ধের সময়ে পাক হানাদাররা নীলফামারী সরকারি কলেজ, কলেজ ছাত্রাবাস ও ভোকেশনাল ট্রেনিং ইন্সটিটিউটে গড়ে তোলেন সেনা ক্যাম্পের শক্ত ঘাঁটি। বিভিন্ন এলাকা থেকে নারী-পুরুষদের ধরে ঘাঁটিগুলোতে করা হতো নির্মম নির্যাতন ও ধর্ষণ। অনেককে ধারালো অস্ত্রো খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এমনকি হাত পিঠমোড়া দিয়ে চোখ বেঁধে গুলি করে হত্যার পর ৭ থেকে ৮টি লাশ একটি গর্তে পুতে রাখা হয়েছিল। এভাবেই পাক হানাদাররা যুদ্ধের নামে হত্যাযজ্ঞসহ নির্যাতন ও ধর্ষণে মেতে ওঠে।

নীলফামারী জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল আবেদীন ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল গনি বলেন, ১০ ডিসেম্বর থেকে মিত্রবাহিনী আকাশ ও স্থলপথে পাকহানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে আক্রমণ শুরু করে। ১১ ও ১২ ডিসেম্বর মিত্রবাহিনীর আক্রমণ আরও তীব্র হয়। এতে নীলফামারী শহরের বিভিন্ন ক্যাম্পে পাক হানাদার বাহিনী ও তার দোসররা ভীত হয়ে পিছু হটে এবং সৈয়দপুর সেনা ব্যারাকে ফিরে যায়।

তারা আরও জানান, পাকসেনাদের পালিয়ে যাওয়ার খবর আশপাশের এলাকায় অবস্থানরত মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে পৌঁছায়। মুক্তিযোদ্ধারা ১৩ ডিসেম্বর সকালে সমবেতভাবে বিভিন্ন দিক দিয়ে জয় বাংলা স্লোগান দিয়ে শহরে প্রবেশ শুরু করেন।

প্রথমে তারা বাটার মোড়ে থামেন। সেখান থাকা আরও লোকজন নিয়ে স্লোগানে আকাশ-বাতাস প্রকম্পিত করে বর্তমান চৌরাঙ্গী মোড়ে সমবেত হয়। সেখানে নীলফামারীকে হানাদারমুক্ত ঘোষণা করে স্বাধীন বাংলার পতাকা ওড়ান মুক্তিযোদ্ধারা।

বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল গনি বলেন, আমরা আজকের দিনে প্রিয় নীলফামারী হানাদারমুক্ত করতে পেরেছি, সেদিন আমাদের জন্য ছিল খুব আনন্দের। আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি, এখন সবার রক্ষা করা দায়িত্ব।

টিজ/টিএ 

Share this news on:

সর্বশেষ

img
সরকার চাইলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই দুর্বৃত্তদের ধরতে পারে: রুমিন ফারহানা Dec 14, 2025
জয়া-রুনাকে নিয়ে চুমকির বক্তব্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া নেটপাড়ায় Dec 14, 2025
দুই বছর অপেক্ষার পর ধামাকা এন্ট্রি দিয়ে ফিরলেন ফারিয়া Dec 14, 2025
সমুদ্রসৈকতে মিমের আবেদনময়ী লুক নেটমহলে তোলপাড় Dec 14, 2025
মেসির কাছে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইলেন মমতা ব্যানার্জি Dec 14, 2025
img
‘প্রতি সপ্তাহে কোরিয়া যাই’- ফের আলোচনায় তান্যা মিত্তল Dec 14, 2025
img
শহীদ বুদ্ধিজীবীরা ছিলেন বুদ্ধিবৃত্তিক লড়াইয়ে সম্মুখসারির যোদ্ধা : প্রধান উপদেষ্টা Dec 14, 2025
img
হানিমুন শেষে উচ্ছ্বসিত সামান্থা, স্বামীর সঙ্গে খুনসুটির মুহূর্ত ভাইরাল Dec 14, 2025
img
মায়ের পদবি নয়, নিজের নামেই অন্বেষা Dec 14, 2025
img
মেসিকে না দেখার ক্ষোভে উত্তাল জনতা, উদ্যোক্তাকে তোপ টলিউডের Dec 14, 2025
img
অপরাধের রাজনৈতিক ট্যাগ প্রকৃত আসামিকে আড়াল করে : তাহেরি Dec 14, 2025
img
খালেদা জিয়া রাজনৈতিক অঙ্গনের জীবন্ত কিংবদন্তী : কবীর ভূইয়া Dec 14, 2025
img
শহীদ বুদ্ধিজীবীদের অবিচল সাহস দেশের ইতিহাসে চিরস্মরণীয় : রাষ্ট্রপতি Dec 14, 2025
img
প্রথম ডেটে সারারাত পিয়ানো বাজিয়েছিলেন বীর, নায়িকার মন্তব্য Dec 14, 2025
img
হাদির ওপর হামলা নির্বাচন বানচালের গভীর ষড়যন্ত্র : শেখ বাবলু Dec 14, 2025
img
হাদিকে গুলি করা দুর্বৃত্ত গোয়েন্দাদের নজরে! Dec 14, 2025
img
ডাকসু ভিপি সাদিক কায়েমের দুঃখ প্রকাশ Dec 14, 2025
img
চট্টগ্রামে সোমবার অনুষ্ঠিত হবে হৃদরোগ কনফারেন্স Dec 14, 2025
img
ঢাকা বিভাগের ইজতেমায় ক্রিকেটার মিরাজ Dec 14, 2025
img
অন্যের হাসিতেই জীবনের পরম সার্থকতা দেখেন গায়িকা Dec 14, 2025