ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধের অবসান ঘটাতে একটি সমঝোতার অংশ হিসেবে তার দেশ ন্যাটোতে যোগদানের আকাঙ্ক্ষা থেকে সরে এসেছে। এর পরিবর্তে পশ্চিমা দেশগুলোর কাছ থেকে নিরাপত্তা নিশ্চয়তা গ্রহণে সম্মত হয়েছে ইউক্রেন। বার্লিনে যুক্তরাষ্ট্রের দূতদের সঙ্গে বৈঠকের আগে তিনি এ কথা বলেন। খবর
এই সিদ্ধান্তকে ইউক্রেনের একটি বড় নীতিগত পরিবর্তন হিসেবে দেখা হচ্ছে। পরমাণু শক্তিধর প্রতিবেশী রাশিয়ার কাছ থেকে সুরক্ষার নিশ্চয়তা হিসেবে দেশটি দীর্ঘদিন ধরে ন্যাটোতে যোগদানের চেষ্টা চালিয়ে আসছিল। এমনকি ন্যাটোতে যোগ দেয়ার বিষয়টিকে সংবিধানেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল।
ইউক্রেনের নতুন সিদ্ধান্ত রাশিয়ার দাবির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ। পুতিন বরাবরই ইউক্রেনের ন্যাটোতে যোগদানের বিরোধিতা করে এসেছেন। এদিকে ন্যাটোর বাসনা ছাড়লেও রাশিয়ার কাছে কোনও ভূখণ্ড ছেড়ে দেয়ার পক্ষে নন জেলেনস্কি।
রোববার (১৪ ডিসেম্বর) হোয়াটসঅ্যাপে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘শুরু থেকেই ইউক্রেনের আকাঙ্ক্ষা ছিল ন্যাটোতে যোগ দেওয়া, কারণ এটি নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দেয়। তবে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের কয়েকটি মিত্র দেশ এই লক্ষ্যে আমাদের সমর্থন দেয়নি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আশা করি, রাশিয়ার আগ্রাসন ঠেকাতে এখন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে আমাদের জন্য আর্টিকেল-৫ এর মতো নিরাপত্তা নিশ্চয়তা এবং ইউরোপীয় মিত্র দেশগুলোর পাশাপাশি কানাডা ও জাপানের মতো অন্যান্য দেশের নিরাপত্তা প্রতিশ্রুতিই যথেষ্ট হবে।’ তবে এই নিরাপত্তা নিশ্চয়তাগুলো যেন আইনগতভাবে বাধ্যতামূলক হয়, সে বিষয়ে জোর দিয়েছেন তিনি।
এদিকে রাশিয়া বলেছে, চলমান যুদ্ধ বন্ধ করতে ইউক্রেনকে একটি নিরপেক্ষ রাষ্ট্র হতে হবে এবং দেশটিতে কোনো ন্যাটো সেনা মোতায়েন করা যাবে না। রুশ সূত্রগুলো জানিয়েছে, চলতি বছরের শুরুতে প্রধান পশ্চিমা শক্তিগুলোর কাছ থেকে ন্যাটো আর পূর্বদিকে সম্প্রসারিত না করার দাবি জানিয়েছেন পুতিন।
জেলেনস্কি অবশ্য ইউক্রেনের নিরাপত্তার জন্য ন্যাটো সদস্যপদকে অপরিহার্য হিসেবে বর্ণনা করেছিলেন। তবে রাশিয়ার সঙ্গে ইউক্রেনের পুরোদমে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর পশ্চিমা মিত্ররা ন্যাটোতে দেশটিকে অন্তর্ভুক্তির প্রশ্নে গড়িমসি শুরু করে। শেষ পর্যন্ত জেলেনস্কিকে দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক বিভিন্ন নিরাপত্তা নিশ্চয়তার বদলে ন্যাটোর খায়েশ ছাড়তে হলো।
এবি/টিকে