১৬ ডিসেম্বর জাতির অহংকার, আনন্দ আর বেদনার এক মহাকাব্যিক দিন : তারেক রহমান

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, ‘১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ স্বাধীনতার ঘোষক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ডাকে শুরু হওয়া স্বাধীনতাযুদ্ধ ওই বছর ১৬ ডিসেম্বর বিজয় অর্জিত হয় পাক হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করার মাধ্যমে। দেশের অদম্য বীর মুক্তিযোদ্ধারা জীবন বাজি রেখে এ বিজয় ছিনিয়ে আনেন। তাই ১৬ ডিসেম্বর জাতির অহংকার, আনন্দ আর বেদনার এক মহাকাব্যিক দিন।’

১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে আজ সোমবার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে এসব কথা বলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।

তারেক রহমান তার পোস্টে বলেন, ‘৯ মাস মুক্তিযুদ্ধের পরে জাতি ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিজয় অর্জন করে। আমি এদিনে দেশবাসীসহ প্রবাসী বাংলাদেশিদের জানাই শুভেচ্ছা। সুখ, শান্তি, সমৃদ্ধি ও কল্যাণে ভরে উঠুক তাদের জীবন। এই দিনে ৯ মাসব্যাপী স্বাধীনতাযুদ্ধের সমাপ্তি ঘটে এবং বাংলাদেশ নামের একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের সৃষ্টি হয়।

বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধে যারা শহীদ হয়েছেন সেসব বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদের প্রতি জানাই গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি। আমি স্বাধীনতাযুদ্ধের বীর শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করি।

বিদেশি শৃঙ্খল থেকে মুক্ত করতে যেসব মা-বোন সর্বোচ্চ ত্যাগ শিকার করেছেন আমি জানাই তাদের সশ্রদ্ধ সালাম।’

তিনি বলেন, ‘শোষণমুক্ত ও সামাজিক ন্যায়বিচারভিত্তিক গণতান্ত্রিক নীতিমালার ওপর বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার প্রত্যয় ছিল নতুন রাষ্ট্রের মর্মমূলে।

কিন্তু অমানবিক ফ্যাসিস্ট গোষ্ঠী বারবার সেই প্রত্যয়কে মাটিচাপা দিয়ে সর্বনাশা দুঃশাসন জনগণের ওপর চাপিয়ে দেয়। থামিয়ে দেয় বহুদলীয় গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রা।’

চক্রান্তকারীদের নীলনকশা এখনো চলমান উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, ‘আগ্রাসী শক্তি আমাদের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব অবজ্ঞা করার ঔদ্ধত্য দেখায়। ওই অপশক্তির এ দেশীয় এজেন্টরা আমাদের অর্জিত স্বাধীনতা বিপন্ন করার চক্রান্তজাল বুনে চলেছে। এরা ১৬ গত বছর ধরে একের পর এক প্রহসনের একতরফা নির্বাচন করে জনমতকে তাচ্ছিল্য করেছে।

এ দেশের মানুষের সব গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নেয়। নাগরিক স্বাধীনতা অদৃশ্য করে মানুষকে করে অধিকারহারা। এ দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র নিরুদ্দেশ করা হয়। নিরুদ্দেশ করা হয় সংবাদপত্রসহ বাক ও ব্যক্তি স্বাধীনতা।’

তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্রহীন দেশে নিরঙ্কুশ ক্ষমতার দাপটে সর্বত্র হতাশা, ভয় আর নৈরাজ্যের অন্ধকার নেমে আসে। ক্ষমতা জবরদখলকারীরা জনগণের ওপর নৃশংস আক্রমণ চালিয়ে অসংখ্য মানুষকে অদৃশ্য ও হত্যা করে এবং লাখ লাখ মানুষকে মিথ্যা মামলায় কারারুদ্ধ করে। পরিস্থিতি ভয়ংকর নৈরাজ্যময় হয়ে ওঠে। যিনি জীবনের দীর্ঘ সময় গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছেন সেই অবিসংবাদিত নেত্রীকে অন্যায়ভাবে বন্দি করে অন্ধকার কারাগারে রাখা হয়েছিল। অমানবিক নিপীড়ক শাসকগোষ্ঠী ক্ষমতা চিরস্থায়ীভাবে ধরে রাখার জন্য একের পর এক গণবিরোধী পদক্ষেপ নিতে থাকে।’

জুলাই অভ্যুত্থানের প্রসঙ্গ তুলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘ফ্যাসিস্টদের হাত থেকে প্রিয় মাতৃভূমির স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা এবং গণতন্ত্রকে বিপদমুক্ত করতে মহান বিজয় দিবসের প্রেরণায় বলীয়ান হয়ে আমাদের জাতীয় ঐক্য গড়ে ওঠে এবং ২৪-এর জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার দুনিয়া-কাঁপানো আন্দোলনে তারা পরাজিত হয়। পতন হয় ইতিহাসের এক নিষ্ঠুরতম একনায়কের। দেশে আবার স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের সুরক্ষা ও বহুদলীয় গণতন্ত্রের পুনরুজ্জীবনের প্রত্যাশা জেগে ওঠে।’

তিনি আরো বলেন, ‘এই মুহূর্তে নির্বিঘ্নে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে জনকল্যাণমুখী জবাবদিহিমূলক সরকার গঠনের পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। একটি বৈষম্যহীন বাংলাদেশের জন্য এই বিজয়ের দিনে আমাদের অঙ্গীকার হোক-আমরা বিভাজন ভুলে, হিংসা ভুলে মানুষ হিসেবে মানুষের পাশে থাকব। মহান বিজয় দিবসে আমি দেশবাসী সবার প্রতি সেই আহ্বান জানাই। বিজয় দিবস উপলক্ষে আমি সব কর্মসূচির সাফল্য কামনা করছি। আল্লাহ্ হাফেজ, বাংলাদশ জিন্দাবাদ।’

পিএ/এসএন

Share this news on:

সর্বশেষ

img
কলকাতার বিশৃঙ্খলার জন্য মেসিকেই দায়ী করলেন গাভাস্কার Dec 17, 2025
img
থাইল্যান্ডের নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী মনোনয়ন পেলেন থাকসিনের ভাতিজা Dec 17, 2025
img
ইসলামাবাদে বাংলাদেশ হাইকমিশনে বিজয় দিবস উদযাপন Dec 17, 2025
img
আত্মসম্মানেই জীবনের আসল সৌন্দর্য: সুস্মিতা সেন Dec 17, 2025
img
জুলাই ঐক্যের ‘মার্চ টু ইন্ডিয়ান হাইকমিশন’ কর্মসূচি বিকেলে Dec 17, 2025
img
বিরতির পর সাহসী চরিত্রে প্রত্যাবর্তন অভিনেত্রী রুকমার! Dec 17, 2025
img
বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে প্রাণ হারাল বিএনপি নেতা Dec 17, 2025
img
আচরণবিধি ভঙ্গ করে নেতাকর্মীদের শোডাউন, বিএনপির প্রার্থীকে শোকজ Dec 17, 2025
img
রণংদেহি মিতিনে ফিরলেন কোয়েল মল্লিক! Dec 17, 2025
img
অ্যাওয়ার্ড পেলেই কেউ সুপারস্টার হয়ে যায় না : শাকিল খান Dec 17, 2025
img
আমি অতি সাধারণ একজন মানুষ : রুমানা রশীদ Dec 17, 2025
img
পর্তুগালে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসে মহান বিজয় দিবস উদযাপন Dec 17, 2025
img
ভিডিও জগতে বড় ধরনের আপডেট আনল অ্যাডোবি Dec 17, 2025
img
১১ পেশায় যুক্ত হতে পারবেন না এমপিও শিক্ষকরা Dec 17, 2025
img
বিশ্বে দূষিত শহরের তালিকায় শীর্ষে সারায়েভো, ৫ম অবস্থানে ঢাকা Dec 17, 2025
img
যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞায় আরও ৫ দেশ Dec 17, 2025
img

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায়

সালমান-আনিসুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন নিয়ে শুনানি আজ Dec 17, 2025
img
আজ শুষ্ক থাকবে ঢাকার আবহাওয়া Dec 17, 2025
img
নারীর আত্মনির্ভরতার পক্ষে সরব রচনা ব্যানার্জী Dec 17, 2025
img
মৌলভীবাজারে আ.লীগ নেতা ডা. হরিপদ রায় গ্রেপ্তার Dec 17, 2025