চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) শামীম উদ্দিন খানের মুক্তিযুদ্ধের শহীদ বুদ্ধিজীবীদের নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয়ের জিরো পয়েন্ট বা প্রধান ফটকের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেছে স্থানীয় বিএনপি ও ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা।
সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে আসেন তারা। মিছিলটি জিরো পয়েন্ট এলাকায় পৌঁছালে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তাকর্মীরা মূল ফটক আটকে দেন। এরপর ফটকের সামনে বসেই বিক্ষোভ শুরু করেন তারা।
বিক্ষোভে অংশ নেয়া এক বিএনপি কর্মী বলেন, ‘গতকাল উপ-উপাচার্য শামীম উদ্দিন খান যে বক্তব্য দিয়েছেন, আমরা তার প্রতিবাদে এখানে এসেছি। যতক্ষণ না প্রশাসন এখানে আসছে, আমরা সরব না।’
বিক্ষোভের নেতৃত্বে থাকা চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রদলের সভাপতি তকিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্যের বক্তব্যের প্রেক্ষিতে গতকাল ছাত্রদল প্রতিবাদ জানিয়েছে। আমরাও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশে শিবিরের অবস্থানের কথা জানতে পেরে আমরা এখানে এসেছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ বিষয়ের সঙ্গে আমাদের সম্পৃক্ততা নেই। আমরা এখনই চলে যাচ্ছি।’
এ কথা বলে রাত ৮টা ৭ মিনিটে তিনিসহ সবাই স্থান ত্যাগ করেন। বিক্ষোভকারীরা সরে যাওয়ার পরপরই মূল ফটক খুলে দেয়া হয়।
এ বিষয়ে সহকারী প্রক্টর সাঈদ বিন কামাল চৌধুরী বলেন, ‘বহিরাগত প্রবেশ রোধ করতে আমরা গেটে তালা দিয়েছিলাম এবং সেখানে নিরাপত্তাকর্মী পাঠিয়েছি।’
প্রশাসনিক ভবনে তালা, অবরুদ্ধ ছিলেন কর্মকর্তারা এর আগে, উপ-উপাচার্য শামীম উদ্দিন খানের নিঃশর্ত ক্ষমা ও পদত্যাগের দাবিতে সোমবার দুপুর ১টায় প্রশাসনিক ভবনের সব ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছয়টি ছাত্র সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। এতে ভবনের ভেতরে আটকা পড়েন রেজিস্ট্রার অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম, উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক শামীম উদ্দিন খান, উপ-উপাচার্য (প্রশাসনিক) অধ্যাপক মো. কামাল উদ্দিন ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদসহ অনেকে।
এরও আগে, একই দাবিতে রোববার (১৪ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৯টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলচত্বর ও প্রশাসনিক ভবনের সামনে চবি ছাত্রদল ও বামপন্থী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা বিক্ষোভ সমাবেশ করেন।
উত্তাল ক্যাম্পাস ও বিতর্কিত সেই মন্তব্য রোববার শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান বলেন, ‘যে সময় আমি (পাকিস্তানি বাহিনী) দেশ থেকে পালানোর জন্য চেষ্টা করছি, আমি জীবিত থাকব না মৃত থাকব, সে বিষয়ে কোনো ফয়সালা হয়নি; সে সময় পাকিস্তানি যোদ্ধারা বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করবে, এটি আমি মনে করি রীতিমতো অবান্তর।’
তার এই মন্তব্যের পরই উত্তাল হয়ে ওঠে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা তার পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন।
এবি/টিকে