ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের উত্তাপ যে শুধু রাজনীতি বা কূটনীতিতেই সীমাবদ্ধ নয়, তা ফের প্রমাণ করল রুপোলি পর্দা। রণবীর সিং অভিনীত ও আদিত্য ধর পরিচালিত ছবি ‘ধুরন্ধর’ মুক্তির পর থেকেই আলোচনার কেন্দ্রে। পাকিস্তানের প্রাচীন শহর লিয়ারির গ্যাংস্টার দুনিয়া, সন্ত্রাস আর এক ভারতীয় গুপ্তচরের অভিযান এই প্রেক্ষাপটেই গড়ে উঠেছে ছবির কাহিনি। বক্স অফিসে সাফল্য, দর্শকের প্রশংসা এবং আন্তর্জাতিক চর্চার মাঝেই বিতর্কের মুখে পড়েছে এই ছবি।
‘ধুরন্ধর’-এ লিয়ারিকে হিংসা ও অপরাধের কেন্দ্র হিসেবে দেখানো হয়েছে এই অভিযোগে ক্ষুব্ধ পাকিস্তানের সিন্ধ সরকার। সেই ক্ষোভ এবার প্রকাশ পেল অভিনব পথে। সিন্ধ সরকারের তরফে ঘোষণা করা হয়েছে নতুন ছবি ‘মেরা লিয়ারি’। করাচির লিয়ারির বাসিন্দাদের দৈনন্দিন জীবন, সংস্কৃতি ও শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের গল্প তুলে ধরাই এই ছবির উদ্দেশ্য বলে দাবি করা হয়েছে। তবে সময় ও বক্তব্য মিলিয়ে অনেকেই মনে করছেন, ‘ধুরন্ধর’-এর জবাব দিতেই এই ছবির জন্ম।
সিন্ধ প্রদেশের তথ্যমন্ত্রী শারজিল ইনাম মেমন প্রকাশ্যে দাবি করেছেন, বলিউড ছবিতে লিয়ারিকে একপেশে ও নেতিবাচকভাবে তুলে ধরা হয়েছে। তাঁর বক্তব্য, লিয়ারি শুধু গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বা রক্তপাতের জায়গা নয়, বরং প্রতিভা, সংস্কৃতি ও সম্প্রীতির শহর। সেই ভাবমূর্তি ফিরিয়ে আনতেই ‘মেরা লিয়ারি’ নির্মাণের উদ্যোগ।
জানা গিয়েছে, আগামী বছরের মে মাসে সিন্ধ ভাষায় মুক্তি পাবে এই ছবি। অভিনয়ে থাকছেন আয়েশা ওমর, দানির মোবীন, সামিয়া মুমতাজ ও নায়ার এজাজ। গল্প ও পরিচালনায় আবু আলিহা। যদিও নির্মাতারা এখনই সম্পূর্ণ কাহিনি প্রকাশ করেননি, তবু ছবির ঘোষণাই ভারতীয় নেটদুনিয়ায় রীতিমতো ঠাট্টা-বিদ্রুপের জন্ম দিয়েছে। অনেকেই বলছেন, এই ‘সিনে জবাব’ আদৌ কতটা প্রভাব ফেলতে পারবে, তা সময়ই বলবে।
এদিকে ‘ধুরন্ধর’ নিয়ে বিতর্ক নতুন নয়। পাকিস্তান বিরোধী প্রেক্ষাপটের কারণে মধ্যপ্রাচ্যের একাধিক দেশে ছবিটি মুক্তি পায়নি। তবু স্পাই থ্রিলারের ভিড়ে আলাদা স্বাদ এনে দর্শকের মন জিতেছে আদিত্য ধরের এই ছবি। বাস্তব রাজনীতি, ইতিহাস আর কল্পনার মিশেলে তৈরি এই সিনেমাই যেন দুই দেশের মধ্যে নতুন এক ‘সিনেযুদ্ধ’-এর সূচনা করল।
আরপি/টিকে