বলিউডের পর্দায় যিনি বরাবরই শক্তপোক্ত শরীর আর নিয়মানুবর্তিতার প্রতীক, সেই জন আব্রাহাম আবারও আলোচনায়। উপলক্ষ তার জন্মদিন। দেখতে দেখতে ৫৩ বছরে পা রাখলেন অভিনেতা, আর সেই সঙ্গে প্রকাশ্যে এল তাঁর জীবনদর্শন, বিশ্বাস আর শৃঙ্খলার কথা, যা বহু অনুরাগীকেই নতুন করে ভাবতে বাধ্য করেছে।
মডেলিং দিয়ে কেরিয়ার শুরু করা জন প্রথমবার বড় পর্দায় নজর কাড়েন ‘জিসাম’ ছবিতে বিপাশা বসুর বিপরীতে। সেই সময় বলিউড পেয়েছিল এক অন্য ধাঁচের নায়ক, যার উপস্থিতি, শরীরী ভাষা আর আত্মবিশ্বাস আলাদা করে চোখে পড়েছিল। এত বছর পেরিয়েও বয়স যে তাঁর কাছে শুধুই একটি সংখ্যা, তা আজও অনায়াসে প্রমাণ করেন জন।
নিজেকে তিনি নাস্তিক বলেই পরিচয় দেন। ঈশ্বরে বিশ্বাস না থাকলেও জীবনের একটি বিষয়কেই তিনি ধর্ম হিসেবে মানেন, আর সেটি হল শরীরচর্চা। দীর্ঘ ৩৫ বছর ধরে নিয়মিত জিমে যাওয়াকে জীবনের অঙ্গ করে তুলেছেন অভিনেতা। তাঁর কথায়, নিজের শরীর দেখানোর জন্য নয়, সুস্থ থাকার জন্যই এই অভ্যাস। এমনকি মাইগ্রেনের যন্ত্রণার দিনেও তিনি জিমে যান, যদিও সেদিন হালকা ব্যায়ামেই নিজেকে সীমাবদ্ধ রাখেন।
শরীরচর্চার পাশাপাশি জীবনযাপনের ক্ষেত্রেও জন বরাবর কঠোর নিয়ম মেনে চলেন। গত পঁচিশ বছর ধরে মিষ্টি স্পর্শ করেননি তিনি। ধূমপান ও মদ্যপান থেকেও নিজেকে দূরে রেখেছেন। নিরামিষাশী জীবনযাপন আর শৃঙ্খলাবদ্ধ রুটিনই নাকি তাঁর ফিট থাকার মূল চাবিকাঠি। সহঅভিনেতাদের অনেকেই দাবি করেছেন, এই কারণেই আজও ক্যামেরার সামনে অনাবৃত ঊর্ধ্বাঙ্গে আত্মবিশ্বাসী জন।
উনিশশো বাহাত্তরের সতেরোই ডিসেম্বর মুম্বইয়ে জন্ম জন আব্রাহামের। তাঁর বাবা আব্রাহাম জন কেরালার একজন স্থপতি এবং মা ফিরোজা ইরানি পারসি সম্প্রদায়ের। ব্যক্তিগত জীবন বরাবরই আড়ালে রাখতে পছন্দ করেন অভিনেতা। দীর্ঘদিন বিপাশা বসুর সঙ্গে সম্পর্কের পর সেই অধ্যায় শেষ হয়, পরে তিনি ব্যাঙ্ককর্মী প্রিয়া রাঞ্চালকে বিয়ে করেন।
কাজের দিক থেকেও সক্রিয় জন। সাম্প্রতিক সময়ে মুক্তি পেয়েছে তাঁর অভিনীত ছবি ‘দ্য ডিপ্লোম্যাট’ ও ‘তেহরান’। কেরিয়ারের ঝুলিতে রয়েছে ‘ধুম’, ‘দোস্তানা’, ‘পাঠান’, ‘গরম মসলা’, ‘সত্যমেব জয়তে’, ‘নিউ ইয়র্ক’-এর মতো একাধিক জনপ্রিয় ছবি।
সব মিলিয়ে জন্মদিনে জন আব্রাহাম শুধু বয়স বাড়ালেন না, বরং আবারও মনে করিয়ে দিলেন বিশ্বাসের পথ আলাদা হতে পারে, কিন্তু শৃঙ্খলা আর স্বাবলম্বী জীবনযাপনই তাঁর কাছে সবচেয়ে বড় ধর্ম।
আরপি/এসএন