ইসলামের বিধান ও মুসলমানদের প্রতীক দাড়ি-টুপিকে ‘রাজাকারের প্রতীক’ বানিয়ে ঘৃণা চর্চার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে সংবাদমাধ্যমে এক বিবৃতি দিয়েছেন হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী।
বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, আমরা দেখতে পাচ্ছি, বিজয় দিবসকে উপলক্ষ করে দেশের বিভিন্ন স্থানে ইসলামের বিধান ও মুসলমানদের প্রতীক দাড়ি-টুপিকে রাজাকারের প্রতীক বানিয়ে ঘৃণার চর্চা আবারও শুরু হয়েছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। জাতিকে বিভাজনকারী এই ঘৃণাজীবীদের প্রতিহত করুন।
পতিত ফ্যাসিস্ট হাসিনার শাসনামলে মুসলমানের পরিচয় ও নাম-নিশানাকে ঘৃণার লক্ষ্যবস্তু বানিয়ে ইসলাম নির্মূলের রাজনীতি করা হয়েছিল। জুলাই বিপ্লবীরা শান্তি ও সহাবস্থানের পথ বেছে নেওয়ার সুযোগে হিন্দুত্ববাদী অপশক্তি ও বাম সেকুলাররা আবারও উৎপাত শুরু করেছে। তারা বিভাজন সৃষ্টি করে দেশকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্র করলে আমরা চুপচাপ বসে থাকব না।
মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী বলেন, আমাদের ভুলে গেলে চলবে না যে, কথিত ‘রাজাকার’ বয়ান ধসে যাওয়ায় ফ্যাসিস্ট হাসিনার পতন ঘটেছিল।
ভারতীয় বয়ানে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রত্যাখ্যান করেছে জুলাইয়ের নতুন বিপ্লবী প্রজন্ম। একাত্তরের মহান জনযুদ্ধকে আধিপত্যবাদী শক্তির হাতে যারা তুলে দিয়েছিল, তারা ক্ষমতার স্বার্থে স্ব-জাতির সঙ্গে বেঈমানি করেছে।
ফলে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিসহ দেশটির শীর্ষ রাজনীতিকরা আজ আমাদের বিজয় দিবস ছিনতাই করার সাহস দেখাতে পারছেন। একাত্তরে আমাদের রক্তাক্ত জনযুদ্ধ ও বিজয় একান্তই আমাদের।
তিনি আরও বলেন, ভারতীয় বয়ানে ‘মুক্তিযুদ্ধ’-এর প্রচারকরা মূলত ফ্যাসিবাদ ও আধিপত্যবাদের দালাল। তারা একাত্তরকে ব্লাসফেমিতে পরিণত করেছে। এমনকি কোনো বিতর্কিত তথ্য বা সংখ্যা নিয়েও প্রশ্ন তোলা যাবে না!
একাত্তরের জনযুদ্ধ কারো একার পিতার সম্পত্তি নয়। সাতচল্লিশের উত্তরসূরি একাত্তর, যেভাবে একাত্তরের উত্তরসূরি চব্বিশ। সাতচল্লিশ, একাত্তর ও চব্বিশ আমাদের আজাদীর সিলসিলা।
কোনোটিকে অস্বীকার করার সুযোগ নেই। আমাদের এখন বরং সত্য ইতিহাস চর্চা করতে হবে। যুগ যুগ ধরে চলমান ভারতীয় হিন্দুত্ববাদী প্রোপাগান্ডা মোকাবেলা করতে হবে। বদরুদ্দীন উমর বলে গেছেন, ‘স্বাধীনতাযুদ্ধের লিখিত ইতিহাস প্রায় ৯০ ভাগই মিথ্যা।’ এ বিজয়ের মাসে আমরা একাত্তরের জনযুদ্ধ ও বিজয় নিয়ে নির্মোহ ইতিহাস নতুন প্রজন্মের সামনে তুলে ধরতে বিদগ্ধ ইতিহাসবিদদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানাই।
আইকে/টিএ