এটি খুবই পরিচিত একটি সমস্যা অনেকদিন আলমারিতে বা তাকে তুলে রাখার পর প্রিয় চামড়ার জুতা জোড়া বের করে দেখা গেল, তার চামড়া শক্ত হয়ে গেছে বা অপ্রত্যাশিত ফাটল ধরেছে। মূলত চামড়া একটি প্রাকৃতিক উপাদান, যা নিয়মিত যত্ন না পেলে তার স্বাভাবিক তেল ও আর্দ্রতা হারাতে শুরু করে। এই কারণেই চামড়ার জুতা নিষ্প্রাণ ও শক্ত হয়ে ওঠে এবং ফাটল ধরার সমস্যা দেখা যায়।
জুতার মধ্যে থাকা প্রাকৃতিক তেল তার নমনীয়তা বজায় রাখার জন্য অপরিহার্য। দীর্ঘদিন ব্যবহার না করলে এবং পর্যাপ্ত হাওয়া চলাচল না হলে এই তেল শুকিয়ে যেতে শুরু করে। আবার, অতিরিক্ত শুষ্ক বা খুব বেশি আর্দ্র পরিবেশে চামড়ার উপাদান ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
জমে থাকা ধুলাও চামড়ার ওপরের স্তরকে দুর্বল করে তোলে, ফলে চামড়ায় সহজেই ফাটল ধরার ঝুঁকি বাড়ে।
চামড়ার জুতা ভালো রাখতে কিছু সহজ পরিচর্যার প্রয়োজন। প্রথমত, জুতা তুলে রাখার আগে অবশ্যই ভালোভাবে পরিষ্কার করতে হবে। নরম কাপড় ব্যবহার করে ধুলা মুছে নেওয়া বাঞ্ছনীয়।
প্রয়োজনে হালকা ভেজা কাপড় ব্যবহার করা যেতে পারে, তবে ভেজা অবস্থায় জুতা সংরক্ষণ করা একেবারেই উচিত নয় অবশ্যই ভালোভাবে শুকিয়ে নিতে হবে।
চামড়ার নমনীয়তা ধরে রাখার জন্য মাসে অন্তত একবার লেদার কন্ডিশনার বা ভালো মানের সু-পলিশ ব্যবহার করা জরুরি। এই কন্ডিশনিং প্রক্রিয়ায় চামড়ার হারানো প্রাকৃতিক তেল ফিরে আসে এবং ফাটল ধরার ঝুঁকি উল্লেখযোগ্য ভাবে কমে যায়। সংরক্ষণের ক্ষেত্রে জুতা কখনো প্লাস্টিকের ব্যাগে মুড়ে রাখবেন না, কারণ এতে বাতাস চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এর বদলে তুলা বা কাপড়ের তৈরি সু-ব্যাগ ব্যবহার করুন।
জুতার স্বাভাবিক আকার ঠিক রাখতে সম্ভব হলে জুতার ভেতরে সু-ট্রি অথবা কাগজ ভরে রাখা ভালো। জুতা সংরক্ষণের জায়গাটির আর্দ্রতা নিয়ন্ত্রণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। খুব স্যাঁতসেঁতে জায়গায় রাখলে চামড়ায় ছত্রাক ধরতে পারে, আবার অতিরিক্ত শুকনা জায়গায় রাখলে তা ফেটে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।
তাই আলমারি বা শেলফে জুতার পাশে মাঝে মাঝে সিলিকা জেল বা নিমপাতা রাখতে পারেন।
সবশেষে, যদি দীর্ঘদিন জুতা না-ও পরা হয়, তবুও মাসে অন্তত একবার তা বের করে রোদ-হাওয়ায় রাখা দরকার। তবে খেয়াল রাখতে হবে কড়া বা তীব্র রোদে সরাসরি জুতা না রাখাই ভালো, এতে চামড়া শক্ত হয়ে যেতে পারে। নিয়মিত বাতাস ও মৃদু রোদ লাগলে চামড়ার জুতা দীর্ঘদিন ভালো থাকে।