জুলাই হত্যা মামলার নথি চুরি করে তিনটি ভুয়া মামলা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে ঢাকার সিএমএম আদালতে। মামলাকে ব্যবহার করে চাঁদাবাজির কথা জানিয়ে সাক্ষ্য দেন স্থানীয় এক জনপ্রতিনিধি। সিনিয়র আইনজীবীরা বলছেন, শুরু থেকেই জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের মামলার দায়িত্ব সরকারিভাবে নেয়া হলে সুযোগ পেত না এসব অসাধু চক্র। হয়রানি বন্ধ করতে গণ-অভ্যুত্থানের সব মামলা ও গ্রেফতারের তদন্তের পরামর্শ তাদের।
জুলাই হত্যা মামলা নিয়ে বাণিজ্যের অভিযোগ ওঠেছে আদালতের এক শুনানিতে। সাক্ষ্য দেন ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার বাহ্রা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মামলার পর বাড়িছাড়া আসামিরা। যোগাযোগ করা হলে একজন জানান, টাকা হাতানো ও ব্যক্তিগত শত্রুতাসহ বিভিন্ন উদ্দেশে মিথ্যা মামলা করা হয়েছে।
আইনজীবী অ্যাডভোকেট মাহবুব রানার অভিযোগ, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে ইফাত, সাগর ও রাসেল- এই তিনটি হত্যার আলাদা মামলা করা হয়। একটি চক্র মামলাগুলোর দলিল-দস্তাবেজ আদালত থেকেই সংগ্রহ করে। পরে একই হত্যাকাণ্ডকে ভিন্ন ঘটনাস্থল দেখিয়ে করা হয় মামলার আবেদন।
অভিযুক্ত তিনটি মামলারই বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট জোবায়ের আল মাহমুদ। ভুয়া নথিপত্র দিয়ে মামলা দায়েরের জন্য তার কাছে ব্যাখ্যা চান আদালত। বাদীর ভুয়া এনআইডি জমা দেয়াসহ মিথ্যার আশ্রয় নিলেও তা বুঝতে পারেননি বলে দাবি এ আইনজীবীর।
তিনি বলেন, মামলা বাণিজ্যের কথা বাংলাদেশের একজন বলতে পারবে? ওটা তো মামলার আদেশই হয়নি! আমার পেশাদারিত্বের জায়গা থেকে আমি মামলা করেছি। বাদী আদালতে উপস্থিত হয়েছে। পরে মামলা খারিজ করে দিয়েছে।
জুলাই গণ-ভ্যুত্থানের সব মামলা সরকারের পক্ষ থেকে দায়ের হলে প্রতারক চক্রের উত্থান হত না বলে মন্তব্য সিনিয়র আইনজীবী সৈয়দ মো. জয়নাল আবেদীন মেসবাহের।
এ আইনজীবী বলেন, আইন মন্ত্রণালয় এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ে সঠিক তথ্য নিয়ে মামলা করা হলে আজকে এ চাঁদাবাজি চলত না। প্রতি এলাকায় কারা খেলছে, কারা মামলা দিচ্ছে-- সেটা ওপেন সিক্রেট!
মিথ্যা মামলার মাধ্যমে হয়রানি বন্ধ করতে জুলাই আন্দোলনের মামলা ও গ্রেফতারের বিষয়ে তদন্তের পরামর্শও দেন তিনি।
টিজে/টিকে