জামায়াতে ইসলামীতে যোগদান করায় পটুয়াখালীর বাউফলে বিএনপির এক নেতাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির উপজেলা কমিটির সদস্য উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়ন বিএনপির দায়িত্বপ্রাপ্ত ওই নেতার নাম মো. হেলাল উদ্দিন মুন্সি।
মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) বিকেলে উপজেলার সূর্য্যমনি ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড এলাকায় জামায়াত আয়োজিত এক উঠোন বৈঠকে স্থানীয় নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের উপস্থিতিতে তিনি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীতে আনুষ্ঠানিক যোগদানের ঘোষণা দেন। এ ঘোষণার পরপরই উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব আপেল মাহমুদ ফিরোজ স্বাক্ষরিত এক এক চিঠির মাধ্যমে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়।
এদিকে বিএনপির ওই নেতা হেলাল উদ্দিন মুন্সীর জামায়াতে যোগদানকে কেন্দ্র করে স্থানীয় রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে। দীর্ঘদিন বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকার পর তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীতে যোগদান করেছেন। ব্যার্থ হলেও এরআগে তিনি একবার নাজিরপুর ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বর পদে ও একবার চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করেছেন।
জামায়াতে যোগদানের ওই উঠোন বৈঠকে জামায়াতের কেন্দ্রিয় কর্মপরিষদ সদস্য বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা মহনগরী দক্ষিনের সেক্রেটারি ত্রয়োদ্বশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পটুয়াখালী-২ (বাউফল) আসনের জামায়াত মনোনিত প্রার্থী ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ প্রদান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে এক সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে হেলাল উদ্দিন মুন্সী বলেন, প্রায় ২৫ বছর ধরে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলাম। বর্তমানে বিএনপির থানা কমিটির সদস্য এবং নাজিরপুর ইউনিয়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত। এখন থেকে জামায়াতে ইসলামীতে যুক্ত হয়ে ইসলামের খেদমতে বাকি জীবন উৎসর্গ করতে চাই।
এ সময় তিনি সকলের দোয়া কামনা করেন এবং ভবিষ্যতে নাজিরপুর ইউনিয়ন জামায়াতের পক্ষে উল্লেখযোগ্য জনসমর্থন গড়ে উঠবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ নবাগত ওই নেতাকে স্বাগত জানিয়ে ইসলামী আদর্শের ভিত্তিতে সমাজ গড়তে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানান এবং এ ধরনের যোগদান সংগঠনকে আরও শক্তিশালী করবে বলেও মন্তব্য করেন।
এ ব্যাপারে হেলাল উদ্দিন মুন্সির বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। তার মোবাইলফোনে একাধিকবার কল করা হলে কেটে দেন তিনি। বিএনপির উপজেলা কমিটির সদস্য নাজিরপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি অধ্যাপক জসীম উদ্দিন বলেন, হেলাল উদ্দিন মুন্সি ১৯৯৬ সনে নৌকা মার্কা ও ২০০১ সালে লাঙ্গল মার্কার সক্রিয় কর্মী ছিলেন। একবার পকেট কমিটির মাধ্যমে ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক হন। নিজেকে সভাপতি হিসেবে প্রচার করলেও এবারে সে ফাকফোকর দিয়ে ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতি হন, সভাপতি নয়। জামায়াতে যোগদানে উপজেলা বিএনপি তাকে বহিস্কার করেছে।বিএনপি অনেক বড় দল। আমি মনে করি কোন কর্মীর দল ত্যাগে বিএনপি দলের ওপর কোন প্রভাব পড়বে না।
জামায়াতের উপজেলা সেক্রেটারি অধ্যাপক খালিদুর রহমান বলেন, ‘চিন্তা, বিশ্বাস ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা গণতন্ত্রের মূলভিত্তি। আদর্শ বিবেচনায় কেউ যদি দলত্যাগ করে গণতন্ত্রে তার বৈধতা আছে। আমি মনেকরি এখানে তাই ঘটেছে। স্বেচ্ছায় স্বাধীন সিদ্ধান্ত ব্যক্তির স্বাধিকার প্রয়োগ।
এবি/টিকে