জামায়াতের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিলেন সাঈদীপুত্র মাসুদ সাঈদী। আজ মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিনে পিরোজপুর-১ (সদর, নাজিরপুর, ইন্দুরকানী) আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর প্রভাবশালী নেতা শহীদ মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ছেলে ও জামায়াত মনোনীত প্রার্থী মাসুদ সাঈদী।
সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) বিকেলে জেলা জামায়াতে ইসলামীর নেতৃবৃন্দকে সঙ্গে নিয়ে মাসুদ সাঈদী জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র জমা দেন। এসময় সাঈদীর আরেক ছেলে শামীম সাঈদীও মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
মাসুদ সাঈদী পিরোজপুর-১ (সদর, নাজিরপুর, ইন্দুরকানী) আসনে লড়বেন এবং পিরোজপুর-২ (নেছারাবাদ, কাউখালী, ভান্ডারিয়া) আসনে লড়বেন শামীম সাঈদী।
মনোনয়নপত্র জমা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পিরোজপুর-১ আসনের প্রার্থী মাসুদ সাঈদী বলেন, ‘আজ আমি ও আমার বড় ভাই শামীম সাঈদী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছি। আসলে এই মনোনয়নপত্র জমা দেওয়াটা আমাদের জন্য খুবই কষ্টের। কারণ এই আসনে (পিরোজপুর-১) আমার শহীদ আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর নির্বাচন করার কথা ছিল।
আমার এখানে নির্বাচন করার কথা ছিল না। আমাদের একটি কষ্টের ইতিহাস আছে, জনগণ সেগুলো জানেন এবং জনগণ নিশ্চয়ই সে বিষয়ে যথাসময়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেবেন।’
তিনি বলেন, ‘আমরা নির্বাচনে এসেছি মূলত এই প্রজন্মের মানুষ বাংলাদেশকে নিয়ে যেভাবে ভাবে, বাংলাদেশকে নিয়ে যেভাবে স্বপ্ন দেখে, আমরা সেই বাংলাদেশ তৈরি করতে চাই। আমরা একটি শোষণ-বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়তে চাই। আমরা একটি আধিপত্যবাদমুক্ত বাংলাদেশ চাই, দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ চাই। সেই বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে আমরা কাজ করতে চাই এবং ইনশাআল্লাহ জনগণ যথোপযুক্ত সময়ে তাদের রায় দিয়ে দেশ গড়ার স্বপ্ন পূরণে আমাদের পাশেই থাকবেন।’
এনসিপির সঙ্গে জামায়াতের জোট করার বিষয়ে মাসুদ সাঈদী বলেন, ‘এটি তো হওয়ারই ছিল। কারণ এই প্রজন্মের যে দাবি, সেটি তো জামায়াতে ইসলামীরও দাবি। আমরা গত ১৭ বছর ধরে আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছি। এই এনসিপি আমাদের আন্দোলনের ১৭ বছর পরে আন্দোলন করেছে, যদিও আমরা আন্দোলনে সফল হতে পারিনি। আল্লাহর দয়ায় এই ছাত্রদের মাধ্যমে আমরা একটি সুমহান বিজয় পেয়েছি।
জামায়াত এনসিপির ঐক্য তো হওয়ারই কথা ছিল, কারণ এনসিপি আধিপত্যবাদবিরোধী আন্দোলন করছে, আমরাও করছি। এনসিপি ইসলামী মূল্যবোধে বিশ্বাসী, আমরাও তাই। এনসিপি জনগণের অধিকারে বিশ্বাস করে, আমরাও তাই করি। এনসিপি সন্ত্রাসমুক্ত, চাঁদাবাজমুক্ত বাংলাদেশ চায়, আমরাও তাই চাই। সুতরাং এনসিপির সঙ্গে আমাদের এই জোট হওয়া অনিবার্য ছিল।
সাঈদীর আরেক পুত্র পিরোজপুর-২ আসনে জামায়াতের প্রার্থী শামীম সাঈদী বলেন, আমরা আশাবাদী যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার একটি সুন্দর নির্বাচন আমাদের উপহার দেবে। জনগণ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করার সুযোগ পাবে। সামনে একটি ভালো দিনের আশায় জনগণ অপেক্ষা করছে। সারা বাংলাদেশ থেকে পরিবর্তনের আওয়াজ শোনা যাচ্ছে এবং ইনশাআল্লাহ দেশে পরিবর্তন আসবেই।
মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় মাসুদ সাঈদী ও শামীম সাঈদীর সঙ্গে ছিলেন তাদেরই ছোট ভাই নাসীম সাঈদী, পিরোজপুর জেলা জামায়াতের আমীর তোফাজ্জল হোসাইন ফরিদ, নায়েবে আমীর মাওলানা আব্দুর রব, জেলা সেক্রেটারী জহিরুল হক, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি সিদ্দিকুল ইসলাম, জেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারী মাওলানা আব্দুর রাজ্জাক, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের জেলা সভাপতি মো. ইমরান হোসেন প্রমুখ।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পিরোজপুর-১ আসন থেকে ৫ জন প্রার্থী মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করলেও শেষ পর্যন্ত বিএনপির মনোনীত প্রার্থী অধ্যক্ষ আলমগীর হোসেন এবং জামায়াতে ইসলামীর মনোনীত প্রার্থী মাসুদ সাঈদীসহ মোট দুজন মনোনয়ন জমা দেন। এ ছাড়া পিরোজপুর-২ আসনে ৮ জন প্রার্থী মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন, যার মধ্যে ৭ জন শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন দাখিল করেছেন।