২৩টি সংসদীয় আসনে নির্বাচন করেও পরাজয়ের কোনো রেকর্ড নেই বেগম জিয়ার

বিএনপি চেয়ারপারসন ও দেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া ১৯৯১ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত মোট ২৩টি সংসদীয় আসনে নির্বাচন করেছেন। তবে কোনোটিতেই তিনি পরাজিত হননি।

বেগম খালেদা জিয়ার জন্ম ১৯৪৫ সালের ১৫ আগস্ট, দিনাজপুরে। তার বাবা ইস্কান্দার মজুমদারের বাড়ি ফেনী জেলার পরশুরামের শ্রীপুর গ্রামে। মা তৈয়বা বেগমের জন্ম পঞ্চগড় জেলার বোদা উপজেলার চন্দনবাড়ীতে। তাদের তিন মেয়ে ও দুই ছেলের মধ্যে খালেদা জিয়া তৃতীয়। জন্মের পর তাঁর নাম রাখা হয়েছিল ‘খালেদা খানম’। অত্যন্ত সুন্দর ছিলেন বলে বাড়ির লোকেরা তাকে ‘পুতুল’ বলে ডাকতেন। সেটিই তার ডাকনাম হয়ে যায়।

সেনাবাহিনীর তরুণ ও চৌকস কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন জিয়াউর রহমানের সঙ্গে ১৯৬০ সালের ৫ আগস্ট দিনাজপুরের মুদিপাড়ার পৈতৃক বাড়িতে খালেদা খানমের বিয়ে সম্পন্ন হয়। বিয়ের পর থেকে তিনি ‘বেগম খালেদা জিয়া’ নামেই পরিচিত হয়ে ওঠেন।

রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান শহীদ হওয়ার মধ্য দিয়ে খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক জীবন শুরু। জিয়াউর রহমানের প্রয়াণের পরে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) সাংগঠনিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ে। একপর্যায়ে ১৯৮২ সালের ৪ জানুয়ারি তিনি বিএনপির সদস্যপদ গ্রহণ করেন। শুরু হয় তার রাজনৈতিক জীবন।

খালেদা জিয়া রাজনৈতিক জীবনের প্রথম থেকেই দলীয় শৃঙ্খলা ও নেতৃত্ব সমুন্নত রাখার পাশাপাশি এইচ এম এরশাদের স্বৈরশাসনবিরোধী গণ-আন্দোলনের ভেতর দিয়ে তার নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠিত করেন। প্রথমেই তিনি দলের শীর্ষপদ পাননি। রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার ভেতর দিয়ে ভাইস চেয়ারপারসন, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসনের পর ১৯৮৪ সালে তিনি দলের চেয়ারপারসনের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তিনি নিজের ৪৩ বছরের রাজনৈতিক জীবনের ৪১ বছর দেশের একটি প্রধান রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতা হিসেবে নেতৃত্ব দিয়েছেন।

১৯৮৬ সালে তিনি জাতির কাছে দেওয়া অঙ্গীকার পূরণ করে জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করায় ‘আপসহীন নেত্রী’ হিসেবে পরিচিত হয়ে ওঠেন। ১৯৮৭ সাল থেকে তিনি ‘এরশাদ হটাও’ শীর্ষক এক দফা আন্দোলন শুরু করেন। তার নেতৃত্বে দীর্ঘ রাজনৈতিক আন্দোলন ও সংগ্রামের চড়াই-উতরাইয়ের পথ পেরিয়ে ১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিজয়ী হয়। দেশের প্রথম ও বেনজির ভুট্টোর পর মুসলিম বিশ্বের দ্বিতীয় নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে খালেদা জিয়া ১৯৯১ সালের ২০ মার্চ সন্ধ্যায় বঙ্গভবনে অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দীন আহমদের কাছে শপথ গ্রহণ করেন।

তিনি ১৯৯৬ সালে দ্বিতীয় এবং ২০০১ সালে তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। এ ছাড়া ১৯৯৬ ও ২০০৯ সালে জাতীয় সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা হিসেবে নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি।

৮০ বছর বয়সী বেগম খালেদা জিয়া মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ সময় ভোর ৬টার দিকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।

এসকে/টিকে

Share this news on:

সর্বশেষ

img
বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে সাকিবের শোক Dec 30, 2025
img
খালেদা জিয়া কখনো আপসের চোরাবালিতে যাননি: দুদু Dec 30, 2025
img
চীনের জনগণ সর্বদা সর্বোচ্চ সম্মানের সঙ্গে বেগম জিয়াকে স্মরণ করবে: চীনা রাষ্ট্রদূত Dec 30, 2025
যে অভ্যাস মানলে জীবন ব-দ-লে যাবে | ইসলামিক টিপস Dec 30, 2025
নবিজীর তরুন বয়েসের একটা চমৎকার ঘটনা | ইসলামিক জ্ঞান Dec 30, 2025
img
আপসহীনতার মূর্ত প্রতীকে পরিণত হয়েছিলেন খালেদা জিয়া: আখতার Dec 30, 2025
img
এত শ্রদ্ধা, সম্মান, ভালোবাসায় বেগম জিয়ার বিদায় বিশেষ মুহূর্ত: আসিফ নজরুল Dec 30, 2025
img
খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে ইইউ-ফ্রান্স-যুক্তরাজ্য ও অস্ট্রেলিয়ার শোক Dec 30, 2025
img
বেগম খালেদা জিয়ার জানাজা বুধবার বাদ জোহর Dec 30, 2025
img
রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা হবে বেগম খালেদা জিয়াকে Dec 30, 2025
img

জাতির উদ্দেশে ভাষণ

ধৈর্য ও শৃঙ্খলা বজায় রাখার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার Dec 30, 2025
img
বেগম খালেদা জিয়া অন্যায়ের কাছে কোনোদিন মাথা নত করেনি: ড. মঈন খান Dec 30, 2025
img
আগামীকাল থেকে ৩ দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা, বুধবার সাধারণ ছুটি Dec 30, 2025
img
বেগম জিয়ার মৃত্যুতে জিএম কাদেরের শোক Dec 30, 2025
img
খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে তারকাদের শোক প্রকাশ Dec 30, 2025
img
খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে ইসির শোক প্রকাশ Dec 30, 2025
img
বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে ডাকসুর শোক প্রকাশ Dec 30, 2025
img
খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে তামিম-ইমরুলের মন্তব্য Dec 30, 2025
img
খালেদা জিয়া ছিলেন পাকিস্তানের নিবেদিত বন্ধু: শাহবাজ শরীফ Dec 30, 2025
img
খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের শোক প্রকাশ Dec 30, 2025