সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জানাজা-দাফন ঘিরে ৫০ প্লাটুন আনসার ও টিডিপি মোতায়েন করা হয়েছে। বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর উপ-পরিচালক ও গণসংযোগ কর্মকর্তা মো. আশিকউজ্জামান এ তথ্য জানান।
আশিকউজ্জামান জানান, জানাজা উপলক্ষে সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পূর্বপরিকল্পিত ও সমন্বিত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। এরই অংশ হিসেবে বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিটের মোট ১ হাজার ৫০০ সদস্যকে দায়িত্বপূর্ণ স্থানে মোতায়েন করা হয়।
নিরাপত্তা দায়িত্বের আওতায় ৩০০ জন আনসার ব্যাটালিয়ন সদস্য, ১ হাজার জন অঙ্গীভূত আনসার এবং ২০০ জন নগর প্রতিরক্ষা দল (টিডিপি) সদস্য মোতায়েন করা হয়। তারা জানাজাস্থল, আশপাশের সড়ক, প্রবেশ ও বহির্গমন পথ এবং গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে দায়িত্ব পালন করেন, যেন জনসাধারণ নির্বিঘ্নে ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতায় অংশগ্রহণ করতে পারেন।
সামগ্রিক নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনায় আনসার ও টিডিপি সদস্যরা ভিড় নিয়ন্ত্রণ, শৃঙ্খলা রক্ষা, যানবাহন ব্যবস্থাপনা এবং জরুরি পরিস্থিতিতে তাৎক্ষণিক সহায়তা প্রদানে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। সমন্বিত দায়িত্ব পালনের ফলে কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই শান্তিপূর্ণ পরিবেশে জানাজা সম্পন্ন হয়, যা বাহিনীর পেশাদারত্ব ও সক্ষমতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মতে, জাতীয়ভাবে গুরুত্বপূর্ণ ও আবেগঘন এ ধরনের আয়োজনে আনসার ও টিডিপির দায়িত্বশীল উপস্থিতি জননিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি রাষ্ট্রীয় শৃঙ্খলা বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ভবিষ্যতেও এ ধরনের জনসমাগমপূর্ণ কর্মসূচিতে বাহিনীর সদস্যরা সর্বোচ্চ পেশাদারত্ব ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন অব্যাহত রাখবে বলে তারা আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
এদিকে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানাতে এবং তার জানাজায় অংশ নিতে পাকিস্তানের স্পিকার ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, ভুটানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, মালদ্বীপের প্রেসিডেন্টের বিশেষ দূত ও দেশটির উচ্চশিক্ষামন্ত্রী, শ্রীলঙ্কা ও নেপাল সরকারের একজন প্রতিনিধিসহ বেশ কয়েকটি দেশের মন্ত্রী ও বিশেষ দূত ঢাকায় আসছেন।
সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর জানাজা ও দাফন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে এবং নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিতে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউসহ রাজধানীতে ২৭ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।জানাজার পর বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে শহীদ রাষ্ট্রপতি, বীর মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমানের পাশে বেগম খালেদা জিয়াকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত করা হবে। এ সময় বেগম খালেদা জিয়ার পরিবারের সদস্য, রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি, সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা, বিদেশি অতিথি, রাষ্ট্রদূত ও বিএনপি মনোনীত রাজনীতিবিদরা উপস্থিত থাকবেন।
দাফনকাজ নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করার জন্য সেখানে নির্ধারিত ব্যক্তির বাইরে কাউকে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে না। দাফনকাজ সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত শেরেবাংলা নগরের জিয়া উদ্যানে জনসাধারণের চলাচল সীমিত রাখা হবে।
প্রায় ৮০ বছর বয়সী তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন হৃদরোগ ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিস, লিভার সিরোসিস, কিডনির জটিলতাসহ নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন। গত ২৩ নভেম্বর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি সেখানেই চিকিৎসাধীন ছিলেন।
এসএস/এসএন