রাতে ঘুম আসে না দিনে শরীর ক্লান্ত, কীভাবে মুক্তি মিলবে?

রাতের বেলা সময় মতো শুতে গেলেও চোখে ঘুম আসতে চায় না। আর ভোরে চোখ থেকে ঘুম কিছুতেই যেতে চায় না। প্রতিদিন এই সমস্যার কারণে মারাত্মকভাবে শারীরিক ক্লান্তি দেখা দেয়। অন্যদিকে রাতে ঘুমের জন্যও শরীর প্রস্তুত হতে পারে না।

আজকাল এই এক সমস্যা হয়েছে। রাতে সময় মতো শুতে গেলেও ঘুম আসতে চায় না। আর ভোরে চোখ থেকে ঘুম কিছুতেই যেতে চায় না। জোর করে যদি বা ঘুম ভাঙে, তাতে সারাদিন তন্দ্রাচ্ছন্ন ভাব এবং ক্লান্তি দূর হয় না কিছুতেই। আর এই সমস্যা সবচেয়ে বেশি দেখা যায় তরুণদের মধ্যে। বিশেষজ্ঞরা এই ধরনের সমস্যার পিছনে নানা কারণ চিহ্নিত করেছেন এবং সমাধানের উপায়ও জানিয়েছেন।

বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রথমেই জানা দরকার রাতে কেন ঘুম আসে না, অথচ সকালে এত ঘুম পায় কেন?

সার্কাডিয়ান রিদম
প্রতিদিন এই সমস্যার কারণে মারাত্মকভাবে শারীরিক ক্লান্তি দেখা দেয়। অন্যদিকে রাতে ঘুমের জন্যও শরীর প্রস্তুত হতে পারে না। মিশিগান মেডিক্যাল স্কুলের নিউরোলজি বিভাগের গবেষকদের দাবি, যাঁরা রাতে ঘুমাতে পারছেন না বা সকালে তন্দ্রাচ্ছন্ন থাকছেন, তাঁদের সমস্যার মূল কারণ হতে পারে 'স্লিপ হাইজিন' বা ঘুমের অভ্যাসের সমস্যা।

গবেষকদের মতে, সাধারণত শরীরের ঘুম-জাগার চক্র বা সার্কাডিয়ান রিদম যদি ঠিক ভাবে কাজ না করে, তা হলে রাতে ভালো ঘুমের অভাব দেখা দেয়। বিশেষ করে যদি ঘুমনো এবং জেগে ওঠার সময় যদি নির্দিষ্ট না হয়, তা হলে সমস্যা বেশি হয়।

কম ঘুমের লক্ষণ
ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের গবেষকদের দাবি, এই ধরনের ঘুমের সমস্যা কখনও কখনও নিজের অজান্তেই তৈরি হয়ে যায়। বিশেষত তরুণদের মধ্যে এই সমস্যা দেখা দিলে অনেকে একে আলস্যের লক্ষণ বলে দাগিয়ে দেন। যদিও বাস্তবে এটি কোনও ইচ্ছাশক্তির অভাব নয়। বরং এটি কম ঘুম বা পর্যাপ্ত ঘুম না হওয়া অথবা কোনও অস্বাস্থ্যকর ঘুমের অভ্যাসের ফল।

ঘুমের সঠিক অভ্যাস তৈরি
ঘুমের অভ্যাসের সমস্যার সমাধানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপায় হলো, 'ঘুমের প্যাটার্ন ট্র্যাক' করা। বিশেষজ্ঞদের মতে, রাতে ঘুমের সময় এবং সকালে ওঠার সময় সম্পর্কে মস্তিষ্কের সঠিক ধারণা থাকতে হবে। এটি বুঝতে পারলে সহজেই সমাধান হতে পারে।

দেখা গেছে রাতে ভালো ঘুম না আসার কারণ হলো শরীরের 'সার্কাডিয়ান রিদম'-এর পরিবর্তন। এই পরিবর্তন যদি কেউ সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে না পারেন, তা হলে সকালে তন্দ্রাচ্ছন্নতা এবং রাতের ঘুমে সমস্যা হতে পারে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ঘুমের সময়সূচি ঠিক করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হলো রাতের ঘুমের জন্য শরীরকে প্রস্তুত করা। এবং এই পরিবর্তন আনতে হবে ধীরে ধীরে।

ঘুমের সময়সূচি পরিবর্তন করতে হলে, প্রতিদিন রাতে ১৫ থেকে ৩০ মিনিট আগে বিছানায় যেতে হবে। তবে শেষ রাতে ঘুমোতে যাওয়ার চেষ্টা কিংবা সাপ্তাহিক ছুটির দিন অতিরিক্ত ঘুমিয়ে পড়া কিন্তু ঘুমের সঠিক রুটিনে বাধা সৃষ্টি করতে পারে।

সঠিক ঘুমের জন্য দরকার ভালো পরিবেশ। রাতে ভালো ঘুমের জন্য বিছানা এবং ঘরের পরিবেশ উপযুক্ত হওয়া জরুরি। শোওয়ার আগে ফোন, টিভি, ল্যাপটপের ব্যবহার কমানো, ঘর পুরোপুরি অন্ধকার বা মৃদু আলোয় আলোকিত রাখা, ঘুমের আগে বই পড়া কিংবা ধ্যান করার মতো প্রশান্তির কাজগুলি দারুণ উপকারী।

আরএ

Share this news on:

সর্বশেষ

img
বাংলাদেশে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনে আগ্রহী চীন Apr 30, 2025
img
গ্যাস আমদানির সব দেনা দুই মাস আগেই পরিশোধ করল পেট্রোবাংলা Apr 30, 2025
img
ফেসবুকে ঘুরে বেড়াচ্ছে তাণ্ডবের শুটিংয়ের দৃশ্য, থাকছে না গোপনীয়তা Apr 30, 2025
img
পহেলগাম ঘটনায় স্তব্ধ আমির, স্থগিত ‘সিতারে জমিন পর’-এর ট্রেলার মুক্তি Apr 30, 2025
img
সূর্যের তাপ কমিয়ে পৃথিবীকে শীতল করার চেষ্টা যুক্তরাজ্যের Apr 30, 2025
img
বুয়েট ক্লাবের কনসার্ট থেকে বাদ, অভিযোগ তুললেন ন্যান্সি Apr 30, 2025
img
‘সরকার ৫ মিনিটও সময় পাবে না’—নারী নীতি ইস্যুতে সরকারের বিরুদ্ধে চরমোনাই পীর Apr 30, 2025
img
কাশ্মীর হামলায় মর্মাহত ভারতী সিং, বললেন— “বিমানেও কেঁদেছি” Apr 30, 2025
img
শেখ হাসিনা পরিবারের পাঁচ সদস্যের বাড়ি-জমি ক্রোকের আদেশ Apr 30, 2025
img
ইউনুস সাহেব দয়া করে তাড়াতাড়ি নির্বাচনটা দেন: মির্জা ফখরুল Apr 30, 2025