পাকিস্তান-ভারতের পরমাণু যুদ্ধ ২০২৫ সালে, যুক্তরাষ্ট্রের গবেষণা

কাশ্মিরে সম্প্রতিক রক্তক্ষয়ী হামলার জেরে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে ফের যুদ্ধের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে আলোচনায় এসেছে ২০১৯ সালের এক গবেষণা, যেখানে বলা হয়েছিল—২০২৫ সালের মধ্যেই পরমাণু শক্তিধর এই দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধ বেধে যেতে পারে। ওই গবেষণা অনুসারে, যুদ্ধ শুরু হলে প্রথম ধাক্কায় সাড়ে ১২ কোটির বেশি মানুষের মৃত্যু হতে পারে, পরে পরিবেশ বিপর্যয়ের কারণে আরও বহু কোটি মানুষ অনাহারে প্রাণ হারাতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রের রাটগার্স বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অ্যালান রোবোকের নেতৃত্বে পরিচালিত ওই গবেষণায় কাশ্মিরকেন্দ্রিক বিরোধকে সম্ভাব্য যুদ্ধের মূল কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। গবেষকরা কয়েকটি কাল্পনিক দৃশ্য-কল্প তৈরি করেন, যার মধ্যে রয়েছে ভারতীয় পার্লামেন্টে হামলা বা কাশ্মিরে সামরিক অভিযানকে কেন্দ্র করে যুদ্ধ শুরু হওয়ার সম্ভাবনা।

সম্প্রতি ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরের পেহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর পাকিস্তান আশঙ্কা প্রকাশ করেছে, ভারত দ্রুত পাল্টা হামলা চালাতে পারে। এই পরিস্থিতিতে গবেষণা রিপোর্টটি নতুন করে গুরুত্ব পাচ্ছে।

রোবোক বলেন, “পরমাণু অস্ত্র থাকা মানেই যুদ্ধের আশঙ্কা থেকেই যায়।” তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন, যুদ্ধ হলে তা শুধু উপমহাদেশ নয়, পুরো বিশ্বেই জলবায়ু ও খাদ্য নিরাপত্তার বিপর্যয় ডেকে আনবে।

তবে ভারতীয় সেনাবাহিনীর সাবেক কর্মকর্তা মেজর জেনারেল দীপঙ্কর ব্যানার্জি এই গবেষণাকে 'কাল্পনিক' বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, "যুদ্ধ হতে পারে, তবে তা সময় বা গবেষণায় নির্ধারিত হয় না।"

পাকিস্তানের পারমাণবিক বিজ্ঞানী ড. পারভেজ হুডভাই অবশ্য যুদ্ধের আশঙ্কা উড়িয়ে দেননি। তিনি বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে উত্তেজনা চলতে থাকলে কোনও এক সময় দুর্ঘটনাবশতও যুদ্ধ লেগে যেতে পারে।”

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, জলবায়ু পরিবর্তন, পানি সংকট এবং সন্ত্রাসবাদসহ আরও নানা কারণে উপমহাদেশে পরমাণু যুদ্ধের ঝুঁকি থেকেই যাচ্ছে। জাতিসংঘের এক চুক্তি অনুসারে পরমাণু অস্ত্র বিস্তার রোধে বিশ্বজুড়ে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানানো হলেও ভারত ও পাকিস্তান এখনও তাতে সই করেনি।


এসএস/এসএন

Share this news on: