মার্কিন নীতির প্রতিবাদে কোকাকোলা বর্জনের ঢেউ ইউরোপেও !

গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলি আগ্রাসনের জেরে বিশ্বব্যাপী কোকাকোলা বর্জনের যে প্রবণতা শুরু হয়েছে, তা এবার পৌঁছেছে ইউরোপের দেশ ডেনমার্কেও। দেশটিতে কোকাকোলা বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠান কার্লসবার্গ জানিয়েছে, স্থানীয় ভোক্তারা যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক এই ব্র্যান্ডটি বর্জন করতে শুরু করেছেন। এতে কোকাকোলার বিক্রিতে পড়েছে ধস।

মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) বার্তাসংস্থা রয়টার্স প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, কার্লসবার্গের প্রধান নির্বাহী জ্যাকব অ্যারাপ-অ্যান্ডারসেন এক আয় সংক্রান্ত সম্মেলনে বলেন, ডেনিশ ভোক্তাদের মধ্যে মার্কিন ব্র্যান্ড বর্জনের একটি স্পষ্ট প্রবণতা দেখা যাচ্ছে, যার ফলে স্থানীয় প্রতিদ্বন্দ্বীরা বাজারে জায়গা করে নিচ্ছে।

কার্লসবার্গ শুধুমাত্র কোক নয়, ক্রোনেনবার্গ বিয়ার এবং টুবোর্গ সোডার মতো কোমল পানীয়ও বিক্রি করে থাকে। তারা জানিয়েছে, ডেনমার্কে কোকের বিক্রিতে ‘সামান্য’ পতন দেখা গেছে। তবে অ্যারাপ-অ্যান্ডারসেনের মতে, এটি মার্কিন শুল্কনীতি, পররাষ্ট্রনীতি কিংবা টেসলার মালিক ইলন মাস্কের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদস্বরূপ চলমান একটি বড় পরিসরের প্রতিক্রিয়ার অংশ।

এমনকি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যখন গ্রিনল্যান্ড যুক্তরাষ্ট্রের দখলে নেওয়ার প্রস্তাব দেন, তখন থেকেই ডেনিশদের মধ্যে মার্কিন ব্র্যান্ড বর্জনের আহ্বান জোরালো হয়।

ডেনমার্কে কোক এবং পেপসির বোতলজাত কাজ কার্লসবার্গের অধীনেই হয় এবং এগুলো ডেনিশ ব্রুয়ারিগুলোতে স্থানীয় শ্রমিকদের মাধ্যমে উৎপাদিত হয়। সে কারণে অ্যারাপ-অ্যান্ডারসেনের দাবি, এই পণ্যগুলো অনেকটাই ‘ডেনিশ ব্র্যান্ড’ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।

তিনি আরও বলেন, কার্লসবার্গ কোনো বর্জন আন্দোলনের পক্ষ বা বিপক্ষে অবস্থান নেয় না, তবে ভোক্তাদের সিদ্ধান্তকে প্রতিষ্ঠানটি সম্মান করে।

রয়টার্স জানায়, কোকাকোলা এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। তবে কোম্পানির প্রধান নির্বাহী জেমস কুইন্সি বলেছেন, তারা বর্জনের এই প্রভাব কাটিয়ে উঠতে কাজ করছে। বিশেষ করে দক্ষিণ যুক্তরাষ্ট্রে ব্যবসার ওপর এর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।

উল্লেখ্য, ইসরায়েল-হামাস সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্রের একচেটিয়া সমর্থনের প্রতিবাদে গত বছর পাকিস্তান, মিসরসহ বহু মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশে কোকাকোলার বিক্রি ব্যাপকভাবে হ্রাস পেয়েছিল। এবার সেই প্রভাব ছড়িয়ে পড়েছে ইউরোপের ডেনমার্কেও।

এফপি/টি

Share this news on:

সর্বশেষ

জয়া-রুনাকে নিয়ে চুমকির বক্তব্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া নেটপাড়ায় Dec 14, 2025
দুই বছর অপেক্ষার পর ধামাকা এন্ট্রি দিয়ে ফিরলেন ফারিয়া Dec 14, 2025
সমুদ্রসৈকতে মিমের আবেদনময়ী লুক নেটমহলে তোলপাড় Dec 14, 2025
মেসির কাছে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইলেন মমতা ব্যানার্জি Dec 14, 2025
img
‘প্রতি সপ্তাহে কোরিয়া যাই’- ফের আলোচনায় তান্যা মিত্তল Dec 14, 2025
img
শহীদ বুদ্ধিজীবীরা ছিলেন বুদ্ধিবৃত্তিক লড়াইয়ে সম্মুখসারির যোদ্ধা : প্রধান উপদেষ্টা Dec 14, 2025
img
হানিমুন শেষে উচ্ছ্বসিত সামান্থা, স্বামীর সঙ্গে খুনসুটির মুহূর্ত ভাইরাল Dec 14, 2025
img
মায়ের পদবি নয়, নিজের নামেই অন্বেষা Dec 14, 2025
img
মেসিকে না দেখার ক্ষোভে উত্তাল জনতা, উদ্যোক্তাকে তোপ টলিউডের Dec 14, 2025
img
অপরাধের রাজনৈতিক ট্যাগ প্রকৃত আসামিকে আড়াল করে : তাহেরি Dec 14, 2025
img
খালেদা জিয়া রাজনৈতিক অঙ্গনের জীবন্ত কিংবদন্তী : কবীর ভূইয়া Dec 14, 2025
img
শহীদ বুদ্ধিজীবীদের অবিচল সাহস দেশের ইতিহাসে চিরস্মরণীয় : রাষ্ট্রপতি Dec 14, 2025
img
প্রথম ডেটে সারারাত পিয়ানো বাজিয়েছিলেন বীর, নায়িকার মন্তব্য Dec 14, 2025
img
হাদির ওপর হামলা নির্বাচন বানচালের গভীর ষড়যন্ত্র : শেখ বাবলু Dec 14, 2025
img
হাদিকে গুলি করা দুর্বৃত্ত গোয়েন্দাদের নজরে! Dec 14, 2025
img
ডাকসু ভিপি সাদিক কায়েমের দুঃখ প্রকাশ Dec 14, 2025
img
চট্টগ্রামে সোমবার অনুষ্ঠিত হবে হৃদরোগ কনফারেন্স Dec 14, 2025
img
ঢাকা বিভাগের ইজতেমায় ক্রিকেটার মিরাজ Dec 14, 2025
img
অন্যের হাসিতেই জীবনের পরম সার্থকতা দেখেন গায়িকা Dec 14, 2025
img
পার্শ্ববর্তী দেশের উস্কানিতে আ.লীগের দালালরা নির্বাচন বানচালের চেষ্টা চালাচ্ছে : খোকন Dec 14, 2025