পুলিশের জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়েছে : সলিমুল্লাহ খান

শিক্ষাবিদ ও গবেষক অধ্যাপক ড. সলিমুল্লাহ খান বলেছেন, পুলিশের জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়েছে। তারা যে অবস্থানে থাকার কথা ছিল, সেখানে নেই।

তিনি বলেন, আমাদের বুকের ওপর হাত রেখে স্বীকার করতে হবে-পুলিশ আজ সে জনপ্রিয়তা ধরে রাখতে পারেনি। পুলিশের আইনি কাঠামোতে পদে পদে সমস্যা আছে, সেসব নিয়ে আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১ মে) দুপুরে রাজধানীর রাজারবাগে পুলিশ সপ্তাহ উপলক্ষ্যে আয়োজিত বিশেষ আলোচনা সভা ‘নাগরিক ভাবনায় জনতার পুলিশ: নিরাপত্তা ও আস্থার বন্ধন’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে তিনি মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে এসব কথা বলেন।

ড. সলিমুল্লাহ খান বলেন, পুলিশ শুধু রাষ্ট্রযন্ত্রের অংশ নয়, সমাজেরও অংশ। যদি পুলিশের সঙ্গে জনতার বিভক্তি তৈরি হয়, তাহলে তা রাষ্ট্র ও সমাজের বিভক্তিতে রূপ নেয়। এ সমস্যা সমাধানের একমাত্র পথ গণতন্ত্র।

তিনি বলেন, পুলিশ ও জনতার সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করতে হলে উদার মনোভাব, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সাবেক আইজিপি আব্দুল কায়ুম বলেন, এত বড় একটা পরিবর্তন হয়ে গেল একটা গণ-অভ্যুত্থান হয়ে গেল। বাচ্চা ছেলেরা তারা তাদের আশা-আকাঙ্ক্ষার কথা বলেছে, তারা নতুন একটি বাংলাদেশ গড়তে চায়। একটা সুযোগ সৃষ্টি হয়েছিল স্বাধীনতার পর। কিন্তু সঠিকভাবে আমরা এগোতে পারিনি আমরা ব্যর্থ হয়েছি। এই যে একটা সম্ভাবনার ধার উন্মোচিত হয়েছে, অনেক আশা-আকাঙ্ক্ষা অনেক স্বপ্ন এই স্বপ্ন যেন ব্যর্থ না হয়। সেজন্য সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, ২০০৯ থেকে ২৪ পর্যন্ত আমরা যা দেখলাম তা কল্পনা করা যায় না, ধারণা করা যায় না। আগেও গণতন্ত্র ছিল না কিন্তু আমরা সেবা দিতে পেরেছি কিন্তু গত ১৫ বছরের মতো আমরা দারোয়ানে পরিণত হইনি। গণতন্ত্র থাকলে যে সুবিধাটা হয় সেটা হচ্ছে যে পাঁচ বছর পর আপনাকে ভোটারদের কাছে যেতে হবে এবং মেন্ডেট নিতে হবে আপনি যা ইচ্ছা তাই করতে পারবেন না। ২০০৯ সালের নির্বাচনে যে খুব নিখুঁত হয়েছে তা বুকে হাত দিয়ে বলতে পারব না। তার পরবর্তী তিনটা নির্বাচনে যা হয়েছে তা আমরা সবাই জানি। যখন একচ্ছত্র ক্ষমতা এসে যায় তখন প্রশাসন ভেঙে পড়ে। এটা ভয় খুন-গুম ওর সন্ত্রাস দ্বারা সম্ভব হয়েছে। এ সময়টাতে শুধুমাত্র এক শ্রেণীর পুলিশ কর্মকর্তা না সকল সেক্টরের এক শ্রেণীর কর্মকর্তা অতি উৎসাহিত হয়ে কাজ করেছে।

সাবেক আইজিপি মোহাম্মদ নুরুল হুদা পুলিশ সংস্কার কমিশনকে ব্যর্থ উল্লেখ করে বলেন, সংস্কার কমিশন পুলিশের বিষয়ে বলছে অনেক বিষয় পরীক্ষা নিরীক্ষা দরকার। পরীক্ষা-নিরীক্ষা যদি দরকার এই কথা বলা হয় তাহলে এই সংস্কার কমিশনের কি দরকার। এই পুলিশ কমিশন ১৮৬১ সালের পুলিশ আইন নিয়ে কিছু বলে না গন্ডগোল কিন্তু ওইখানেও আছে। রাজনৈতিক সদিচ্ছা যদি না থাকে তাহলে পুলিশ কিভাবে কাজ করবে।

তিনি বলেন, পুলিশের সঙ্গে জনগণের সম্পর্ক কিন্তু ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া। এটা বদলানো পুলিশের হাতে নেই। পুলিশের অনেক অফিসাররা দুর্নীতিতে জড়িয়েছে। আমাকে একজন আইজিপি বলেছিলেন ঘুষ খাওয়ার থেকে শ্বশুরবাড়ি থাকা ভালো।

পুলিশ সদরদপ্তরের এআইজি (মিডিয়া) ইনামুল হক সাগরের উপাস্থপনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, নিউ এইজের সম্পাদক নুরুল হুদা, এপেক্স কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাসির মঞ্জু, কর্ম কমিশনের সদস্য অধ্যাপক সায়মা চৌধুরী, নির্বাচন কমিশনের সদস্য ডা. জাহেদ করিম।

আরএম/টিএ  


Share this news on: