যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইউক্রেনের খনিজসম্পদ বিষয়ক চুক্তিটি দীর্ঘ টানাপোড়েনের ফল। এটি মূলত ইউক্রেনের পক্ষ থেকে বাইডেন প্রশাসনের সময় প্রস্তাব করা হলেও চূড়ান্ত হয়েছে ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদের শুরুর দিকে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, কিয়েভ ও ওয়াশিংটনের মাঝে এই চুক্তি একধরনের রাজনৈতিক ‘ব্যান্ড-এইড’ হিসেবে কাজ করেছে। প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি চাপে থাকায় চুক্তিতে স্বাক্ষরের বিকল্প ছিল না তার সামনে। চুক্তিটি মূলত প্রতীকী হলেও এর মাধ্যমে ট্রাম্প প্রশাসন দেখাতে চেয়েছে—যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেন থেকে কিছু ‘পাচ্ছে’। অপরদিকে ইউক্রেনও চেয়েছে ট্রাম্পের হোয়াইট হাউসের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করতে।
চুক্তির পাঠ্যাংশে উল্লেখ আছে, “রাশিয়ার পূর্ণমাত্রার আগ্রাসনে ইউক্রেনে যে ব্যাপক ধ্বংস হয়েছে”— এটি স্পষ্টভাবে স্বীকার করেছে হোয়াইট হাউস, যা অতীতে অনেক সময় এড়িয়ে যাওয়া হতো।
এছাড়া, কীভাবে ইউক্রেন যুক্তরাষ্ট্র থেকে অস্ত্র কিনবে, সেই কাঠামোও উল্লেখ আছে নথিতে। এতে বলা হয়েছে, সামরিক সহায়তা পেলে ইউক্রেন সেই পরিমাণ অর্থ তহবিল থেকে ব্যয় করবে, যা মূলধনের অংশ হিসেবে বিবেচিত হবে।
তবে ট্রাম্প প্রশাসন আসলেই ইউক্রেনকে প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র বা অন্যান্য অস্ত্র দেবে কি না—সে বিষয়ে এখনো অনিশ্চয়তা রয়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, চুক্তিটি ট্রাম্পের মস্কো ঘনিষ্ঠতা ও ইউরোপ-মার্কিন সম্পর্কের টানাপোড়েনের মাঝে এক নতুন ভারসাম্য নির্দেশ করে। রাশিয়া এখনো যুক্তরাষ্ট্র-ইউক্রেনের প্রস্তাবিত ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতি প্রত্যাখ্যান করে চলেছে, যা ট্রাম্পের মনোভাব পরিবর্তনে ভূমিকা রেখেছে বলে মনে করা হচ্ছে।
তবে বিশ্লেষণ বলছে, এই চুক্তির প্রতীকী গুরুত্ব যতই থাকুক, এর তাৎক্ষণিক বাস্তব প্রভাব খুবই সীমিত। ইউক্রেনের মতো একটি দুর্নীতিপ্রবণ ও অস্বচ্ছ খাত-নির্ভর ব্যবস্থায় এই উচ্চ-প্রোফাইল চুক্তি কতটা কার্যকর হবে—তা নিয়ে রয়েছে বিস্তর সংশয়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, যুদ্ধ শেষ হলে চুক্তিটি বিশৃঙ্খল রূপ নিতে পারে। কারণ ইউক্রেনের প্রশাসনিক বাস্তবতা ও রাজনৈতিক পরিবর্তনগুলোর মধ্যে এই চুক্তির দীর্ঘমেয়াদি ভবিষ্যৎ এখনো অনিশ্চিত।
এসএস