জনপ্রিয়তার দিক থেকে হাঁস ও মুরগির ডিমের কুসুম সমান তালে টিকে থাকলেও, কোনটি স্বাস্থ্যের জন্য বেশি উপকারী—সেই প্রশ্নে এখনও দ্বিধায় ভোগেন স্বাস্থ্যসচেতনরা।
যেমন মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কালজয়ী উপন্যাস ‘পুতুলনাচের ইতিকথা’য় কুসুম চরিত্রের মন আছে কি নেই, তা নিয়ে যেমন দীর্ঘ বিতর্ক হয়েছে, তেমনি হাঁস ও মুরগির কুসুমের পুষ্টিগুণ নিয়েও তর্ক শেষ হয়নি এখনো। কোনটির উপকারিতা বেশি—সে প্রশ্নে আজও চলছে মতবিরোধ।
এ প্রসঙ্গে পুষ্টিবিদ অর্পিতা দেবরায় বলেন, ‘হাঁস এবং মুরগির ডিমে উপকারিতার দিক থেকে বিশেষ ফারাক নেই। তবে হাঁসের ডিমে ‘ট্রিপ্টোফ্যানোমিটার’-এর পরিমাণ বেশি। এই উপাদান শরীরের জন্য বিশেষ ভালো নয়।
কারণ হজমের গোলমাল হতে পারে। ‘ট্রিপ্টোফ্যানোমিটার’-এর প্রোটিন সহজে ভাঙতে পারে না ঠিকঠাক হজম হয় না। তাই হাঁসের বেশিক্ষণ ধরে সেদ্ধ করতে হবে। ২০-২৫ মিনিট সেদ্ধ করলে ট্রিপ্টোফ্যানোমিটার নিস্ক্রিয় হয়ে যায়। অন্য দিকে মুরগির ডিমে এই উপাদান কম থাকে বলে, বেশি সময় ধরে সেদ্ধ না করলেও চলে।’ এটা ঠিক যে হাঁস এবং মুরগির ডিমের মধ্যে উপকারিতায় বিস্তর ফারাক নেই। গবেষণা জানাচ্ছে, উভয় ডিমেই সেলেনিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, ক্যালশিয়াম, আয়রন, ফসফরাস, নিয়াসিন, রাইবোফ্লোভিন, প্যান্টোথেনিক অ্যাসিড, ফোলেট, ভিটামিন বি৬, ভিটামিন ডি, ভিটামিন ই, ভিটামিন এ থাকে। তবে ফ্যাট এবং এনার্জির পরিমাণের দিক থেকে খানিকটা তফাত রয়েছে।‘
১০০ গ্রামে হাঁসের ডিমে এনার্জি থাকে ১৮৫ ক্যালোরি। অন্য দিকে মুরগির ডিমে রয়েছে ১৪৯ ক্যালোরি। আবার ১০০ গ্রাম হাঁসের ডিমে স্যাচুরেটেড ফ্যাট রয়েছে ৩.৬৮ গ্রাম। আর মুরগির ডিমে স্যাচুরেটেড ফ্যাটের পরিমাণ ৩.১ গ্রাম। পুষ্টিবিদেরা জানাচ্ছেন, কেউ যদি হাই প্রোটিন ডায়েট করতে চান, তা হলে হাঁসের ডিম খেতে পারেন। তবে হার্টের সমস্যা, কোলেস্টেরল, ইউরিক অ্যাসিড থাকলে কুসুমের বদলে ডিমের সাদা অংশ খাওয়া জরুরি।
আরএ/টিএ