গাজায় ত্রাণ বিতরণ চুক্তির কাছাকাছি যুক্তরাষ্ট্র-ইসরাইল

অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় হামাসের নিয়ন্ত্রণ ছাড়াই ফিলিস্তিনিদের কাছে মানবিক সাহায্য বিতরণ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র, ইসরাইল ও একটি নতুন আন্তর্জাতিক ফাউন্ডেশনের প্রতিনিধিরা একটি চুক্তির কাছাকাছি পৌঁছেছে। শুক্রবার (২ মে) সংবাদমাধ্যম অ্যাক্সিওস এ তথ্য জানিয়েছে।

দুই ইসরাইলি কর্মকর্তা ও একজন মার্কিন সূত্রের বরাত দিয়ে অ্যাক্সিওস জানিয়েছে, ইসরাইলি কর্মকর্তারা বলছেন, নতুন এই ত্রাণ বিতরণ ব্যবস্থা হামাসকে দুর্বল করে দেবে। কারণ সাহায্য বিতরণ তাদের রাজস্ব থেকে বঞ্চিত করবে এবং তাদের ওপর জনগণের নির্ভরতা হ্রাস করবে।

এই নতুন সাহায্য বিতরণ উদ্যোগের কার্যক্রম পরিচালিত হবে একটি আন্তর্জাতিকভাবে নিয়ন্ত্রিত ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে, যার নেতৃত্বে থাকবেন মানবিক কর্মীরা। গাজার অভ্যন্তরে কিছু কম্পাউন্ড তৈরি করা হবে। বেসামরিক নাগরিকরা প্রতি সপ্তাহে একবার সেখানে যেতে পারবেন এবং প্রতি পরিবারের জন্য পর্যাপ্ত সাহায্য প্যাকেজ নিতে পারবেন।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে ফিলিস্তিনি উপত্যকায় খাদ্য ও ওষুধ সরবরাহের অনুমতি দেওয়ার কথা বলার প্রায় এক সপ্তাহ পর এই প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়েছে।

ইসরাইলের কৌশলগত মন্ত্রী রন ডার্মারের নেতৃত্বে এই নতুন ব্যবস্থা তৈরির প্রচেষ্টা চলছে।

অ্যাক্সিওস মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের এক কর্মকর্তার উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছেন, এই নতুন ব্যবস্থা ‘উদযাপন করার মতো’।

ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, ট্রাম্প ও সচিব রুবিও আশা করেন, সব জাতিসংঘ এবং আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থাগুলো হামাসের এই গুরুত্বপূর্ণ সম্পদগুলোতে অ্যাক্সেস না পাওয়া নিশ্চিত করার জন্য মেকানিজম ফ্রেমওয়ার্কের মধ্যে কাজ করবে। ’

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরাইলে হামলা চালায় ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস। এদিন তারা ১২০০ মানুষকে হত্যা করে প্রায় ২৫১ জনকে জিম্মি করে নিয়ে যায়।

হামাসের হামলার প্রতিশোধে ওই দিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরাইলি সেনাবাহিনী। ১৫ মাসেরও বেশি সময় ধরে টানা অভিযান চালানোর পর যুক্তরাষ্ট্র ও মধ্যস্থতাকারী অন্যান্য দেশগুলোর চাপে গত ১৯ জানুয়ারি থেকে গাজায় যুদ্ধবিরতি শুরু হয়। গত দেড় বছরে উপত্যকায় মোট নিহত ও আহতের সংখ্যা পৌঁছেছে যথাক্রমে ৫২ হাজার ৪১৮ জন বেশি এবং ১ লাখ ১৮ হাজার ৯১ জনে। এই নিহত এবং আহতদের ৫৬ শতাংশই নারী ও শিশু।

তবে বিরতির দু’মাস শেষ হওয়ার আগেই গত ১৮ মার্চ থেকে ফের গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করে দখলদার ইসরাইল। দ্বিতীয় দফার এ আগ্রাসনে ২০০০-এর বেশি ফিলিস্তিনিকে হত্যা করা হয়েছে। এছাড়া আহত হয়েছেন পাঁচ হাজারেরও বেশি।
গাজায় ফের হামলা শুরুও আগেই ২ মার্চ থেকে উপত্যকাটিতে ত্রাণ প্রবেশ বন্ধ করে দেয় দখলদার বাহিনী। যার ফলে ক্ষুধা-তৃষ্ণায় মানবেতর জীবনযাপন করছে অবরুদ্ধ উপত্যকাটির বাসিন্দারা।

এফপি/এসএন

Share this news on:

সর্বশেষ