চিকিৎসকের ত্যাগ ও রোগীর লড়াই টিকিয়ে রেখেছে স্বাস্থ্য খাত, স্বাস্থ্য শিক্ষার ডিজি

বাংলাদেশের চিকিৎসা ব্যবস্থা মূলত চিকিৎসকদের নিরলস পরিশ্রম ও সাধারণ মানুষের আর্থিক ত্যাগের মাধ্যমে টিকে আছে—এ মন্তব্য করেছেন স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) অধ্যাপক ডা. মো. নাজমুল হোসেন।

রোববার (৪ মে) রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে আয়োজিত বাংলাদেশ সোসাইটি অব নিউরোসার্জনসের (বিএসএনএস) তিন দিনব্যাপী চতুর্থ অন্তর্বর্তীকালীন বৈজ্ঞানিক সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।

ডা. নাজমুল হোসেন বলেন, নানা সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও চিকিৎসকরা নিউরোসার্জারিসহ জটিল চিকিৎসা ক্ষেত্রে আধুনিক প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। চিকিৎসা পেশা কেবল চাকরি নয়, এটি একটি নৈতিক দায়িত্ব। দলমত নির্বিশেষে সেবার মানসিকতা নিয়ে কাজ করাই একজন চিকিৎসকের প্রকৃত পরিচয়।

চিকিৎসকদের আত্মত্যাগের বিপরীতে সাধারণ মানুষকে কঠিন আর্থিক চাপে পড়তে হচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

দেশের স্বাস্থ্য শিক্ষার মান নিয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করে ডিজি বলেন, আমাদের মেডিকেল শিক্ষকরা আন্তরিকভাবে পাঠদান করেন, যা ভবিষ্যতে আরও শক্তিশালী স্বাস্থ্য ব্যবস্থা গঠনে সহায়ক হবে।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. শাহিনুল আলম বলেন, দেশে প্রতি বছর প্রায় ৫০ লাখ মানুষ চিকিৎসা খরচের ভারে দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে যাচ্ছে। অনেকে সুদে টাকা এনে চিকিৎসা করান, পরে ঋণ পরিশোধ করতে জমিজমা বিক্রি করে দেন।

তিনি বলেন, অধিক রোগীর কারণে বাংলাদেশ গবেষণার জন্য একটি সম্ভাবনাময় ক্ষেত্র হয়ে উঠছে। উন্নত দেশে যন্ত্রপাতি থাকলেও পর্যাপ্ত রোগী না থাকায় সেখানে গবেষণার সুযোগ সীমিত। দেশের বিশাল জনসংখ্যা। প্রচুর রোগী রয়েছে। এখানে চাইলেই রিসার্চ করা যায়। অনেক উন্নত দেশে আধুনিক যন্ত্রপাতি আছে কিন্তু রোগী কম। এক্ষেত্রে বাংলাদেশের চিত্র আলাদা।

সভায় জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে নিহত শহীদদের স্মরণে নীরবতা পালন করা হয়। সেইসঙ্গে অনুষ্ঠানে সোসাইটির পক্ষ থেকে বৈজ্ঞানিক সম্মেলন, লাইভ সার্জারি, থ্রিডি অ্যানাটমি সেশন এবং অ্যান্ডো ভাস্কুলার সিমুলেশন কর্মশালার আয়োজন করা হয়।

এতে বাংলাদেশ সোসাইটি অব নিউরোসার্জনসের আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. মওদুদুল হক, সদস্য সচিব ডা. মোহাম্মদ নুরুজ্জামান খান এবং অন্তর্বর্তীকালীন সভা বাস্তবায়ন কমিটির চেয়ারপারসন অধ্যাপক ডা. মাঈনুল হক সরকারসহ দেশি-বিদেশি ৩০০ জনের বেশি নিউরোসার্জন উপস্থিত ছিলেন।

আরএ/টিএ

Share this news on: