ডাকাতি আতঙ্কে ভুগছেন নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলার বাসিন্দারা। তাদের রাত শুরু হয় ডাকাতির ভয় দিয়ে আর ঘুম ভাঙে কোথাও ডাকাতি হচ্ছে মাইকে সেই ঘোষণা শুনে। গত এক সপ্তাহের মধ্যে উপজেলা জুড়ে ১০টি ডাকাতির ঘটনা ঘটে। ডাকাতির আক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে এলাকাবাসী রাত জেগে পাহারা দিচ্ছেন।
জানা গেছে, রোববার (৪ এপ্রিল) রাত আড়াইটার দিকে ২০-২৫ জন মুখোশধারী ডাকাত হানা দেয় মাহমুদপুর ইউনিয়নের আগুয়ান্দী এলাকায়। ওই এলাকার মন্টুর ছেলে শ্রী জুমন দাস, রুস্তম আলীর ছেলে মামুন, অপর ব্যক্তি শ্রী বাবু এবং আ. মজিদের ছেলে ডা. মান্নানের ঘরে এক যোগে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। ২০/২৫ জনের মুখোশ পরিহিত অস্ত্রধারী ডাকাত দল ওই বাড়ির প্রতিটি ঘরের দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে ঘরে থাকা লোকজনদেরকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি ও মারপিট করে এবং মান্নানের ছেলে মফিজুলের স্ত্রী বৃষ্টি আক্তারের (২৬) কান ধারালো অস্ত্র দিয়ে কেটে গুরুতর আহত করে নগদ ২ লাখ টাকা, আড়াই ভরি ওজনের স্বর্ণালংকার ও ৬টি মোবাইল ফোন লুটে নিয়ে চলে যায়।
এর আগে শনিবার (৩ মে) রাতে উচিৎপুরা ইউনিয়নের টেগুরিয়াপাড়া এলাকায় আল আমিনের বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। ডাকাত দল ঘরের দরজা ভেঙে ঘরে প্রবেশ করে অস্ত্রের মুখে পরিবারের সবাইকে জিম্মি করে নগদ এক লাখ টাকা, সাড়ে চার ভরি ওজনের স্বর্ণালংকার, চারটি মোবাইল ফোনসহ অন্যান্য মালপত্র লুটে নেয়।
বৃহস্পতিবার (১ মে) রাত ৩টার দিকে ডাকাতি হয় উপজেলার বিশনন্দী ইউনিয়নের দয়াকান্দা গ্রামের কান্দাপাড়ার বাসিন্দা আব্দুল হেকিম মিয়ার বাড়িতে। একই কায়দায় ১৫-২০ জনের মুখোশধারী ডাকাত দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে। হেকিম মিয়া বলেন, অস্ত্রের মুখে তার পরিবারের সবাইকে জিম্মি করে ডাকাতরা লুটপাট চালায়। সব মিলিয়ে তার বাড়ি থেকে নগদ ২৪ হাজার টাকা, এক ভরি স্বর্ণালংকার, দুটি মোবাইল ফোনসহ মূল্যবান জিনিসপত্র লুট হয়েছে।
২৭ এপ্রিল রোববার রাত আড়াইটার দিকে ডাকাতি হয়েছে ব্রাহ্মন্দী ইউনিয়নের বড় বিনাইরচর এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা বি এম কামরুজ্জামানের বাড়িতে। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ১৮-২০ জন মুখোশধারী ডাকাত তার বাড়ির পাঁচটি ঘরের দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকছে। পরে তারা দুই ভরি ওজনের স্বর্ণালংকার, নগদ ২০ হাজার টাকা, আইফোনসহ পাঁচটি অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোন লুটে নেয়। হঠাৎ করে এলাকায় চুরি ডাকাতি বৃদ্ধি পাওয়ায় জনমনে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে।
আড়াইহাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার নাসিরউদ্দিন বলেন, প্রতিটি ঘটনা পুলিশ তদন্ত করে দেখছে। ইতিমধ্যে আরমান নামে এক ডাকাতকে আটক করে জনতা গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেছে এবং একটি মামলাও হয়েছে। বাকি ঘটনাগুলোর বিষয়ে কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি।
নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (সি সার্কেল) মেহেদী ইসলাম বলেন, ওসি বদলি হওয়ার সুযোগে নিয়ে হয়তো ডাকাতদল সক্রিয় হয়েছে। আমরা ঘটনাগুলো তদন্ত করে ব্যবস্থা নিচ্ছি। আশা করি ডাকাতি বন্ধ হয়ে যাবে।
আরআর/এসএন