পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) মানবাধিকার সেলের সভাপতি ফারহাতুল্লাহ বাবর দেশটিতে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। গত শনিবার তিনি রাজনৈতিক দলগুলোকে আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, যেন তারা ফেডারেল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সিকে (এফআইএ) ছয় মাস অন্তর সংসদে একটি প্রতিবেদন পেশ করতে বাধ্য করে — যেটা আইন অনুযায়ী বাধ্যতামূলক।
বিশ্ব সংবাদমাধ্যম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে দেওয়া এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, এটা অত্যন্ত হতাশাজনক যে ‘রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারস’-এর তথ্য অনুযায়ী পাকিস্তান সেই ৪২টি দেশের কাতারে চলে গেছে, যেখানে হয় সংবাদমাধ্যমের কোনো স্বাধীনতা নেই, অথবা থাকলেও সাংবাদিকতা একটি অত্যন্ত বিপজ্জনক পেশা হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।
তিনি বলেন, একই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতায় পাকিস্তানের র্যাংকিং আরও নিচে নেমে ১৫৮-তে পৌঁছেছে, যেটি আফগানিস্তানসহ কিছু সংকটময় দেশের সমপর্যায়ে ফেলেছে আমাদের।
ফারহাতুল্লাহ বাবর বলেন, পাকিস্তানের এই দুর্নামজনক অবস্থান তাকে ফিলিস্তিনের (যার র্যাংক ১৬৩) সমান জায়গায় এনে দাঁড় করিয়েছে, যেখানে গত ১৮ মাসে ইসরায়েলি বাহিনী প্রায় ২০০ জন সাংবাদিককে হত্যা করেছে, যাদের মধ্যে ৪২ জনকে তাদের পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে হত্যা করা হয়েছে।
তিনি আরো জানান, ২০২৫ সাল সাংবাদিকদের জন্য অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনকভাবে শুরু হয়েছে। বছরটি শুরুতেই ‘প্রিভেনশন অব ইলেকট্রনিক ক্রাইমস অ্যাক্ট’ (পেকা) সংশোধনের মাধ্যমে অনলাইন রিপোর্টিং করা সাংবাদিকদের ভয়ভীতি, হয়রানি এবং বিচারিক প্রক্রিয়ার অপব্যবহারের মুখে ফেলে দেওয়া হয়েছে। এসব কর্মকাণ্ড এফআইএ সম্পূর্ণ দায়মুক্তির সঙ্গে করে যাচ্ছে।
তিনি রাজনৈতিক দল ও সংসদ সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, তারা যেন পেকা আইনের ৫৩ নম্বর ধারা বাস্তবায়নে পদক্ষেপ নেন এবং এফআইএকে ছয় মাস অন্তর সংসদে তাদের কার্যক্রম সংক্রান্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বাধ্য করেন। এই দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হওয়ায় এফআইএ সাংবাদিকদের নির্যাতন ও অপমান করার সুযোগ পাচ্ছে সম্পূর্ণ দায়মুক্তির সঙ্গে — যা মেনে নেওয়া যায় না এবং চলতে দেওয়া যায় না।
পিপিপি মানবাধিকার সেল আরো বলেছে, সংবাদমাধ্যমের অর্থনৈতিক ভিত্তি দুর্বল হয়ে পড়ায় সংবাদপত্রের স্বাধীনতা হুমকির মুখে পড়েছে। তারা সরকারের পক্ষ থেকে কিছু সংবাদমাধ্যমের উপর বিজ্ঞাপন দেওয়ার ক্ষেত্রে ইচ্ছাকৃত নিষেধাজ্ঞা আরোপ করাকে কঠোরভাবে নিন্দা জানিয়েছে।
বিশেষ করে তাদের বিরুদ্ধে, যারা সরকারি সত্য এবং সরকারি বর্ণনাকে অন্ধভাবে অনুসরণ করতে অস্বীকৃতি জানায়।
আরআর/এসএন