সচিবালয়ের নন-ক্যাডার কর্মকর্তাদের বদলিতে নতুন বিধিমালা আনতে যাচ্ছে সরকার, যা কার্যকর হলে কেউ আর দীর্ঘদিন এক কর্মস্থলে থাকতে পারবেন না।
এই নিয়মে সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জেলা বা উপজেলা পর্যায়ে এবং মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সচিবালয়ে বদলি করা যাবে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে এই বিধিমালা কার্যকরে উদ্যোগ নিয়েছে।
২০১৮ সালের ডিসি সম্মেলনে মাঠ প্রশাসনের কর্মীদের জন্য সচিবালয়ের মতোই নিয়োগবিধি তৈরি করার প্রস্তাব ওঠে। সে ধারাবাহিকতায় গত ৩০ এপ্রিল আট সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে, যাদের ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
এদিকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় হতে কমিটি গঠনের পরিপ্রেক্ষিতে চরম ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদ। একইসঙ্গে প্রস্তাবিত নতুন বিধিমালা কার্যকর করা হলে আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন সচিবালয়ের কর্মচারীরা।
মঙ্গলবার বিকালে এক জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: ‘যার সঙ্গে ইচ্ছা দেখা করব, কে কী বলল যায়-আসে না’
পরিষদের সভাপতি মো. বাদিউল কবীরের সভাপতিত্বে ও সংগঠনের মহাসচিব নিজাম উদ্দিন আহমেদে পরিচালনায় এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সংগঠনটির সহপ্রচার সম্পাদক মো. আরিফ হোসাইন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, বাংলাদেশ সচিবালয়ের ননক্যাডার কর্মকর্তাদের পদোন্নতির বিদ্যমান সুযোগ হতে চিরতরে বঞ্চিত করার মানসে সুকৌশলে মাঠ পর্যায়ের কর্মচারীদের সঙ্গে একীভূত করে অভিন্ন নিয়োগবিধিমালা প্রণয়নের জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় হতে একটি কমিটি গঠনের বিষয়ে চরম ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করেন।
তারা বলেন, প্রাপ্যতা অনুযায়ী আমাদের কোনো বিষয়ই এ পর্যন্ত সমাধান করা হয়নি অথচ নতুন আইন করে তাদের প্রাপ্যতা থেকে বঞ্চিত করার জন্য জোরাল কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। যা সচিবালয়ে কর্মচারীগণ সর্বশক্তি নিয়োগ করে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে প্রতিহত করবে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করা হয়, ফ্যাসিবাদের পতনের পর যেখানে বৈষম্যহীন বাংলাদেশ সরকারের উপদেষ্টামন্ডলী নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছে সেখানে সচিবালয়ে বৈষম্য সৃষ্টির নতুন কলাকৌশল অবলম্বন করা হচ্ছে। এ কার্যক্রম বাস্তবায়িত হলে সচিবালয়ের কর্মচরীগণ চরম বৈষম্যের কবলে পতিত হবে। সচিবালয়ের কর্মচারীদের ন্যায্য প্রাপ্তির দাবি উপস্থাপন করা হলে তাদেরকে শাস্তিমূলকভাবে বিভিন্ন জেলা শহরে বদলিসহ নানা ধরণের হয়রানীমূলক কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে। অপরদিকে কর্মকর্তাদের এক তরফা অন্যায্য সুবিধা আদায়ের পথ সুগম হবে। সরকারের চলমান সাফল্য ও স্থিতিশীলতা বিনষ্টকরার সুক্ষ ষড়যন্ত্র হিসেবে কতিপয় ফ্যাসিস্ট কর্মকর্তা ৫ আগস্টের পর নিজেদের অবস্থান পরিবর্তন করে বিভিন্ন ধরণের কুপরামর্শের মাধ্যমে কর্মচারীগণকে অস্থিতিশীল করাসহ সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার অপপ্রয়াসে লিপ্ত। বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের নেতৃবৃন্দ সব স্তরের কর্মচারীদের সঙ্গে নিয়ে সব অপপ্রয়াস রুখে দিয়ে ন্যায্য প্রাপ্য আদায়ে বদ্ধ পরিকর। এ লক্ষ্যে ব্যাপক গণসংযোগের জন্য সবাইকে কার্যক্রম পরিচালনার অনুরোধ জানানো হয়।
সভায় অংশ নেন, তৌহিদুর রহমান, মো. বাবুল আক্তার, মো. বিপুল, মো. আবুল হোসেন, নুরুজ্জামাল, সুমন মিজানুর রহমান, বেলাল হোসেন, আরিফুর রহমান, আরিফ হুসাইন, শাহীন গোলাম রব্বানী, সাব্বির আহম্মেদ, মো. আরিফ, রুহুল আমিন, আব্দুল কাদের, সোহেল রানা, শাহাদাৎ হোসেন, শামীম, রিপন মিয়া এবং নাছিমুল আলমসহ প্রমুখ।
আরএ