সিরাজগঞ্জের কামারখন্দে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মাত্র তিনজন চিকিৎসকের ওপর ভরসা করে প্রতিদিন চিকিৎসা নিতে আসছেন গড়ে ১২০-১৩০ জন রোগী। অথচ মোট ১১টি চিকিৎসক পদের বিপরীতে দীর্ঘদিন ধরে শূন্য পড়ে আছে ৮টি পদ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, আউটডোরে ভিড় লেগেই আছে। কেউ এসেছেন জ্বর-সর্দি নিয়ে, কেউবা গর্ভকালীন জটিলতা বা শিশুদের অসুস্থতা নিয়ে। অপেক্ষা করছেন ঘণ্টার পর ঘণ্টা, কিন্তু পর্যাপ্ত চিকিৎসক না থাকায় সেবা পেতে হচ্ছে চরম দুর্ভোগে। বাধ্য হয়ে কেউ ফিরে যাচ্ছেন বাড়ি, কেউ ছুটছেন জেলার অন্যান্য হাসপাতাল বা ব্যয়বহুল বেসরকারি ক্লিনিকে।
স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন ধরেই হাসপাতালে চিকিৎসক সংকট রয়েছে। প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি থাকলেও চিকিৎসা সেবা ব্যাহত হচ্ছে জনবল ঘাটতির কারণে। গরিব ও নিম্নআয়ের মানুষের একমাত্র ভরসা এ হাসপাতাল হলেও নিয়মিত সেবা না পাওয়ায় অসহায় হয়ে পড়ছেন তারা।
আগে সিজার করা হলেও, এখন সেটি বন্ধ হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন কয়েকজন ব্যক্তি।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, গাইনি, শিশু, সার্জারি, মেডিসিন, এনেস্থেসিয়াসহ ১১টি পদ থাকলেও বর্তমানে কর্মরত আছেন মাত্র তিনজন চিকিৎসক। জুন মাসে আরও দুইজন বদলির অপেক্ষায় এবং বছরের শেষ দিকে অবসরে যাবেন কয়েকজন তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী। এ দুই শ্রেণিতে ৮২টি পদের বিপরীতে কর্মরত আছেন মাত্র ৪২ জন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক চিকিৎসক বলেন, তিনজন চিকিৎসক দিয়ে ইনডোর, আউটডোর ও ইমার্জেন্সি চালানো অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়েছে। প্রতিদিন প্রায় ১২ ঘণ্টা কাজ করতে হয়।
স্থানীয় সাংবাদিক আব্দুল্লাহ আল মারুফ বলেন, প্রায়শ উপজেলার মানুষজন আমাদের কাছে এসে অভিযোগ করেন এই হাসপাতালের বিষয়ে। অথচ সমাধান নেই। চিকিৎসক সংকট দ্রুতই সমাধান করা উচিত।
এ প্রসঙ্গে কামারখন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. মমিন উদ্দিন জানান, মাত্র তিনজন চিকিৎসক দিয়ে পুরো হাসপাতাল চালানো প্রায় অসম্ভব। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন দপ্তরে জানানো হয়েছে। তবে শুধু কামারখন্দ নয়, এ সংকট সারাদেশ জুড়ে বিদ্যমান বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
এসএম/টিএ