আইএমএফের কঠোর শর্ত: বাংলাদেশ ছাড় দেওয়ার পক্ষে নয়

আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিলের (আইএমএফ) সঙ্গে বাংলাদেশের চলমান ঋণ কর্মসূচির চতুর্থ কিস্তি আটকে আছে মূলত একটি প্রধান শর্ত নিয়ে—ডলারের বিপরীতে টাকার বিনিময় হার পুরোপুরি বাজারভিত্তিক করে দেওয়া। বাংলাদেশ সরকার সাফ জানিয়ে দিয়েছে, এই মুহূর্তে এ শর্ত বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। অন্যদিকে, আইএমএফ বলছে, বিনিময় হার বাজারের ওপর ছেড়ে না দিলে কিস্তি ছাড়ও নয়। ফলে দুই পক্ষের মধ্যে আলোচনায় কোনো পক্ষই আপস করছে না।

সূত্র জানিয়েছে, এর আগে তিনটি প্রধান শর্ত ছিল—বাজারভিত্তিক বিনিময় হার, রাজস্ব আয়ের লক্ষ্য বৃদ্ধি এবং ব্যাংক খাত সংস্কার। রাজস্ব ও ব্যাংক খাত বিষয়ে সমঝোতায় পৌঁছালেও বিনিময় হার নিয়ে মতভেদ থেকেই যাচ্ছে। সরকার বলছে, বাজারে এখন ডলারের সরবরাহ ভালো এবং মূল্য স্থিতিশীল। এই অবস্থায় বিনিময় হার ছেড়ে দিলে ডলারের দাম বেড়ে মূল্যস্ফীতির চাপ বাড়তে পারে, যা সরকারের নিয়ন্ত্রণ নীতির বিরুদ্ধে যাবে।

২০২২ সালে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সংকটের সময় বাংলাদেশ আইএমএফের কাছে ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ চায় এবং ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে তা অনুমোদন পায়। প্রথম তিন কিস্তি মিলিয়ে ২৩১ কোটি ডলার ছাড় হয়। চতুর্থ কিস্তির জন্য ২০২3 সালের ডিসেম্বরে আলোচনা হলেও তখন সমঝোতা হয়নি, পরে সময় বাড়তে বাড়তে এপ্রিলে গিয়েও তা আটকে আছে।

আইএমএফের দৃষ্টিকোণ থেকেও এই আলোচনা গুরুত্বপূর্ণ, কারণ বাংলাদেশ প্রোগ্রাম বাতিল করলে আন্তর্জাতিকভাবে তাদের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। ফলে উভয় পক্ষই আলোচনায় আগ্রহী থাকলেও, কিস্তি ছাড় নিয়ে দরকষাকষি এখনও চলছে। সর্বশেষ দুই দফা বৈঠকেও কোনো অগ্রগতি হয়নি, তবে একটি বৈঠক চলতি মে মাসেই অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক ইতোমধ্যে বিনিময় হার সামান্য ছাড়ের দিকে যেতে রাজি হয়েছে। এখন দেখা যাচ্ছে—এই একটি শর্ত ঘিরেই মূল সমঝোতা আসছে কি না, সেটিই নির্ধারণ করবে চতুর্থ কিস্তির ভাগ্য।


এসএস

Share this news on:

সর্বশেষ