বাংলাদেশ নয়, ভবিষ্যৎ ভারতের মাটিতে খুঁজছেন এই তারকারা!

এক সময় বাংলাদেশের চলচ্চিত্র শিল্প ছিল কলকাতার তুলনায় অনেক বেশি সমৃদ্ধ। সত্তর, আশি ও নব্বই দশকে কাজের খোঁজে বহু কলকাতার শিল্পী ঢাকায় এসেছিলেন। তখন তারা বাংলাদেশের সিনেমায় অভিনয় করে ক্যারিয়ার টিকিয়ে রাখতেন। কিন্তু সময়ের পরিবর্তনে পাল্টে গেছে দৃশ্যপট। এখন কলকাতার বাজার শক্ত, আর ঢাকাই সিনেমা নতুন করে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে। এই ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগেই ঢাকামুখী হচ্ছেন কলকাতার কিছু অনিয়মিত শিল্পী।

সম্প্রতি ঢাকার সিনেমায় নিয়মিত কাজ করছেন কলকাতার ইধিকা পাল, মিমি চক্রবর্তী, নুসরাত জাহান, সায়ন্তিকা, দর্শনা বণিকদের মতো শিল্পীরা। অনেকের মতে, এদের অনেকেই কলকাতার মূলধারার কাজ থেকে ছিটকে পড়েছেন। বাংলাদেশে কাজ করে তারা নতুনভাবে ক্যারিয়ার গড়ার চেষ্টা করছেন।

অন্যদিকে বাংলাদেশি তারকারাও কলকাতার দিকে ঝুঁকছেন, তবে এদের মধ্যে কয়েকজনের ক্ষেত্রে বিষয়টি শুধুই পেশাগত নয়—রাজনৈতিক পরিস্থিতির সঙ্গে জড়িয়েও আলোচনায় এসেছেন তারা।

বিশেষত ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর ক্ষমতাসীন দলের ঘনিষ্ঠ কিছু তারকা কর্মক্ষেত্রে কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এদের কেউ কেউ এখন কলকাতায় স্থায়ী হওয়ার চিন্তা করছেন। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন চিত্রনায়ক আরিফিন শুভ, অভিনেত্রী নুসরাত ফারিয়া এবং সোহানা সাবা।

‘মুজিব: একটি জাতির রূপকার’ সিনেমায় বঙ্গবন্ধুর চরিত্রে অভিনয় করে আলোচনায় এসেছিলেন শুভ। তবে রাজনৈতিক ঘনিষ্ঠতার কারণে পরবর্তী সময়ে বিতর্কে জড়ান। ৫ আগস্টের পর থেকে তার উপস্থিতি প্রায় নেই বললেই চলে। গোপনে কলকাতায় গিয়ে ওয়েব সিরিজ ‘জ্যাজ সিটি’র শুটিং করেন এবং সেখানেই স্থায়ী হওয়ার ইচ্ছার কথা জানান।

আওয়ামী লীগের হয়ে সংরক্ষিত নারী আসনে মনোনয়ন চাওয়া ও আলোচিত হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে যুক্ত থাকার অভিযোগে আলোচনায় আসেন অভিনেত্রী সোহানা সাবা। পট পরিবর্তনের পর তার বিরুদ্ধেও মামলা হয়েছে। বর্তমানে কলকাতায় কাজের খোঁজ করছেন এবং সেখানেই স্থায়ী হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

‘মুজিব’ সিনেমায় শেখ হাসিনার চরিত্রে অভিনয় করে আলোচিত হন নুসরাত ফারিয়া। ছাত্র আন্দোলনের সময় তিনি দেশের বাইরে ছিলেন এবং সামাজিক মাধ্যমে বিতর্কিত ছবি পোস্ট করে সমালোচিত হন। দেশে ফিরলেও কাজের সুযোগ সীমিত হয়ে পড়েছে বলে জানান তিনি। কলকাতার নির্মাতাদের ‘পেশাদার’ হিসেবে উল্লেখ করে তারাও তার মূল ভরসা হয়ে উঠছেন।

শিল্পী যেখানে কাজ পাবেন, সেখানেই যাওয়ার অধিকার রাখেন—এমনটাই অনেকে মনে করেন। তবে পেশাদার সংকটের পাশাপাশি রাজনৈতিক দিক থেকেও কিছু তারকার দেশ ছাড়ার বিষয়টি এখন নেটিজেনদের আলোচনায়। কেউ এটিকে ‘চাকরি খোঁজার বাস্তবতা’ বলছেন, কেউ বা বলছেন ‘পালিয়ে যাওয়া’।


এসএস

Share this news on:

সর্বশেষ