বাংলাদেশের ১৪টি নিটওয়্যার পণ্য রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের ৭০ লাখ ডলার দিচ্ছে না রাশিয়ার বেশ কয়েকটি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান। এক বছর ধরে পোশাক রপ্তানির এই বিশাল অঙ্কের অর্থ আটকে রেখেছে রাশিয়ান প্রতিষ্ঠানগুলো।
গতকাল বুধবার (৭ মে) রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে আয়োজিত ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানান বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম।
তিনি আরো বলেন, ‘ওই ১৪টি কারখানার মালিকরা রাশিয়ায় পোশাক রপ্তানি করে বিপাকে পড়েছেন।
এক বছর হয়ে গেল ৭০ লাখ ডলারের পেমেন্ট দিচ্ছে না রাশিয়ান প্রতিষ্ঠানগুলো। এ নিয়ে এক বছর ধরে আমরা রাশিয়া সরকার এবং বাংলাদেশে সরকারি পর্যায়ে দরবার করেছি, কিন্তু আজ পর্যন্ত কোনো সুরাহা হয়নি। এখন আমরা আলোচনা চালাচ্ছি রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পের বিলের সঙ্গে ওই অর্থ সমন্বয় করে রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলোকে অর্থ দেওয়া যায় কি না।
কারণ রূপপুরের জন্য তো বাংলাদেশ সরকার রাশিয়া সরকারকে অর্থ দিচ্ছেই।
সেখান থেকে ওই ৭০ লাখ ডলার কেটে রেখে দিলেই হয়ে যায়। বিষয়টি নিয়ে আমরা সরকারি পর্যায়ে আলোচনা চালাচ্ছি।’
নির্বাচনি ইশতেহার ঘোষণা : এদিকে গতকালের সংবাদ সম্মেলনে দেশের পোশাক খাতের নিটওয়্যার মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর নির্বাচনে মোহাম্মদ হাতেমের নেতৃত্বাধীন প্রগ্রেসিভ নিট অ্যালায়েন্স নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছে। রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে আয়োজিত ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে ১৫ দফা ইশতেহার ঘোষণা করা হয়।
কাস্টমস জটিলতা দূর, এইচএস কোডের জটিলতা নিরসন, নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস নিশ্চিতকরণে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণসহ ১৫ দফা ইশতেহার ঘোষণা করেছে এই প্যানেল।
প্রায় এক যুগ পর ভোটের মাধ্যমে আগামী ১০ মে বিকেএমইএর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এবার ৩৫টি পরিচালক পদে প্রার্থী ৩৮ জন। এর মধ্যে হাতেমের নেতৃত্বে গঠিত প্রগ্রেসিভ নিট অ্যালায়েন্স প্যানেলের প্রার্থী ৩৫ জন। এই নির্বাচনে মাত্র তিনজন স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছেন।
ফলে হাতেমের প্যানেলের জয় অনেকটাই অবধারিত। মোহাম্মদ হাতেম বর্তমানে সংগঠনটির সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন। ব্যবসায়ীদের অন্যতম শীর্ষ এই সংগঠনের নয় শর মতো সদস্য থাকলেও এবার ভোটারসংখ্যা ৫৮২। এর মধ্যে ঢাকায় ভোটারসংখ্যা ২২৪, নারায়ণগঞ্জে ২৭২ এবং চট্টগ্রামে ভোটারসংখ্যা ৭৬।
সংবাদ সম্মেলনে প্রগ্রেসিভ নিট অ্যালায়েন্স যে ইশতেহার তুলে ধরে তার মধ্যে রয়েছে কাস্টমস ও বন্ড জটিলতা নিরসনে জোরালো পদক্ষেপ। প্রগ্রেসিভ নিট অ্যালায়েন্সের ইশতেহারের প্রথমেই রয়েছে আমদানি ও রপ্তানিতে বিদ্যমান কাস্টমস জটিলতা দূরীকরণ। এইচএস কোড নিরসন, এফওসিতে কাঁচামাল আমদানি ও রপ্তানি প্রক্রিয়া সহজীকরণ, কম্পোজিট ইউনিটের ক্ষেত্রে আমদানি ও ব্যবহারের স্বচ্ছ নিয়ম প্রণয়ন, বন্ডেড থেকে নন-বন্ডেড প্রতিষ্ঠানে কাঁচামাল সরবরাহের বাধা দূর করাসহ বন্ড কমিশনারেটের অনিয়ম-জটিলতা নিরসনে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। এ ছাড়া নন-বন্ডেড প্রতিষ্ঠানগুলোকে জোর করে বন্ড লাইসেন্স করাতে গিয়ে যে রপ্তানির ব্যাঘাত সৃষ্টি হচ্ছে, তার প্রতিবন্ধকতাও দূর করার অঙ্গীকার রয়েছে।
আরএম/টিএ