দেশে এখন বিনিয়োগের সার্কাস চলছে: আমির খসরু

দেশে এখন বিনিয়োগের সার্কাস চলছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, আমরা তো এখন বিনিয়োগের সার্কাস দেখছি। যারা বিনিয়োগ বুঝে, তারা জানে বিনিয়োগ হবে না। যখন জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার হবে তখনই বিনিয়োগকারীরা আশ্বস্ত হবে। নির্বাচিত সরকারের পলিসি দেখে বিনিয়োগকারীরা সিদ্ধান্ত নেবে।

শুক্রবার (৯ মে) বিকেলে চট্টগ্রাম কাজীর দেউরী ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের আয়োজিত ‘তারুণ্যের ভবিষ্যৎ ভাবনা, ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ’ শীর্ষক চট্টগ্রাম ও কুমিল্লা বিভাগীয় সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

আমির খসরু মাহমুদ বলেন, এই সেমিনারে এসে আপনারা কি শিখলেন? এখান থেকে কি শিক্ষা নিয়ে যাচ্ছেন? আজকের এই সেমিনার থেকে আপনারা তিনটি শিক্ষা নিয়ে যাচ্ছেন। আর এ তিনটি শিক্ষা রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে অনেক বড় পরিবর্তনের প্রমাণ করেছে।

তিনি বলেন, তিনটি শিক্ষার মধ্যে প্রথমটা হচ্ছে, সম্বোধনের পালা থেকে মুক্তি পেয়েছি। এখানে কেউ সম্বোধন করে নাই। সম্বোধন করার দিন শেষ হয়ে গেছে এখন। হাতে এখন সম্বোধন করার সময় নেই।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, দ্বিতীয় শিক্ষা হচ্ছে দেশের একটি রাজনৈতিক দলের কর্মসূচিতে এখানে যারা বসে আছেন, তাদের উপস্থিতি সাধারণত থাকে না। কিন্তু বিএনপি একটা নজির স্থাপন করেছে ৷ যারা বিএনপি করে না কিন্তু বিএনপির ফোরামে এসে তারা তাদের কথাগুলো বলতে পারে। এটা অনেক বড় পরিবর্তন পলিটিক্যাল কালচার হিসেবে। মানে রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে অনেক বড় পরিবর্তন।

তিনি বলেন, তৃতীয় শিক্ষাটি হলো সামনে নেতারা বসে আছেন। কিন্তু কেউ বক্তৃতা দেননি। এটা বিএনপির রাজনীতিতে, বিএনপির সংস্কৃতি, রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে যে পরিবর্তন এসেছে তা আজকের এ অনুষ্ঠান প্রমাণ করেছে।

খসরু বলেন, শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পরে দেশের জনগণের মনোজগতে যে বিশাল পরিবর্তন এসেছে যারা তা অনুধাবন করতে পারবে না তাদের কোনো রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নেই। সে দলেরও নেই, রাজনীতিবিদেরও নেই। আমি মনে করি আমরা (বিএনপি) ধারণ করতে পেরেছি।

কর্মসংস্থান ও বহুমাত্রিক শিল্পায়ন নিয়ে তিনি বলেন, চাকরি পেতে হলে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে বিনিয়োগ। বিনিয়োগ না হলে আত্মকর্মসংস্থান বা চাকরির হোক কোনো দিনও সফল হতে পারবো না।

তিনি আরও বলেন, এ জন্য বিএনপির রাজনীতি কিন্তু শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান সেখান থেকে শুরু করেছিলেন সকলের জন্য মুক্ত বাজার অর্থনীতি, গণতান্ত্রয়ণ। কারণ এসব না হলে বিনিয়োগ আসবে না। আর বিনিয়োগ আনতে হলে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রথমে দরকার।

রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার কথা উল্লেখ করে আমির খসরু মাহমুদ বলেন, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা কখন হয়? যখন জনগণের ভোটে সরকার গঠন করা হয়, যেই সরকার জনগণের কাছে জবাবদিহি থাকে, নির্বাচিত হওয়ার জন্য জনগণের কাছে বার বার যেতে হয়, তখনই রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা থাকে।

তিনি বলেন, আমাদের দেশে কিন্তু এখনো নির্বাচিত সরকার হয়নি। দেশের জনগণের কাছে জবাবদিহির সরকার হয়নি। যতক্ষণ সেটা না হবে, ততক্ষণ রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা আসবে না, আর ততক্ষণে বিনিয়োগ হবে না।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের উপদেষ্টা মাহদী আমিনের উপস্থাপনায় বিভিন্ন বিষয়ের উপর বক্তব্য রাখেন জনপ্রিয় টিভি টকশো ব্যক্তিত্ব ডা. জাহেদ উর রহমান, বিএনপি চেয়ারপারসন ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিটির সদস্য ইসরাফিল খসরু, ইস্ট ডেলটা ইউনিভার্সিটির ভিসি অধ্যাপক নাজিম উদ্দিন, স্টেট ইউনিভার্সিটির ভিসি অধ্যাপক আকতার হোসেন খান, প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির ভিসি অধ্যাপক ড. নসরুল কদির, ইউনিভার্সিটি অব ডালাস টেক্সাসের শিক্ষক শাফকাত রাব্বি, ইস্ট ডেলটা ইউনিভার্সিটির ফাউন্ডার সাঈদ আল নোমান, কনটেন্ট ক্রিয়েটর সাইয়েদ আবদুল্লাহ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো ভিসি অধ্যাপক কামাল উদ্দিন, চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ডা. ওমর ফারুক ইউছুপ, যুক্তরাষ্ট্রের ওরাকলের সি. ইঞ্জিনিয়ারিং ম্যানেজার মুনতাসীর মুনির, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক ড. নাহরিন আই খান, চলচ্চিত্র নির্মাতা মাবরুর রশীদ বান্নাহ, যুক্তরাষ্ট্রের কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক জামাল উদ্দিন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক আবদুল্লাহ আল মামুন।

আরএম 

Share this news on:

সর্বশেষ

img
পার্শ্ববর্তী দেশের উস্কানিতে আ.লীগের দালালরা নির্বাচন বানচালের চেষ্টা চালাচ্ছে : খোকন Dec 14, 2025
img
সরকার পতনের তিন মাস পর নেপালে ফের অলির জোয়ার Dec 14, 2025
img
খুলনায় অস্ত্র কারখানার সন্ধান, গ্রেপ্তার ৩ Dec 14, 2025
img
উত্তরায় জুলাই রেবেলস সংগঠনের এক সদস্যের ওপর হামলা Dec 14, 2025
img

দ্য ডিসেন্টের বিশ্লেষণ

হাদির ওপর হামলার ঘটনায় দ্বিতীয় সন্দেহভাজন শনাক্ত Dec 14, 2025
img
খালেদা জিয়ার সুস্থতা মানেই গণতন্ত্রের আশা : আজহারুল ইসলাম মান্নান Dec 14, 2025
img
বিদায়ী ম্যাচের আগে জন সিনার হৃদয়স্পর্শী বার্তা Dec 14, 2025
img
পঞ্চগড় সীমান্তজুড়ে বিশেষ সতর্কতা Dec 14, 2025
img
দেশব্যাপী বিশেষ অভিযানে গ্রেপ্তার ১৫০৬ Dec 14, 2025
img
আহত শান্তিরক্ষীদের চিকিৎসা নিশ্চিত করতে জাতিসংঘকে অনুরোধ Dec 14, 2025
img
সাফল্যের পেছনে ভাগ্য নয়, কর্মই আসল : কাজল Dec 14, 2025
img
ঢাকার ৩ এলাকায় ককটেল বিস্ফোরণ Dec 14, 2025
img
একজন মা হিসেবে সচেতন হওয়ার বার্তা দিলেন কোয়েল Dec 14, 2025
img
শান্তিরক্ষীদের হতাহতের ঘটনায় জামায়াত আমিরের শোক Dec 14, 2025
img
ফাস্ট অ্যান্ড ফিউরিয়াসে ক্যামিও চরিত্রে আসছেন রোনালদো, ইঙ্গিত ভিন ডিজেলের Dec 14, 2025
img
আজ শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস Dec 14, 2025
img
লোকদেখানো আবেগের কোনো মূল্য নেই বললেন অভিনেতা Dec 14, 2025
img
সুদানে বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী হতাহতের ঘটনায় তারেক রহমানের শোক Dec 14, 2025
img
সুদানে হতাহতের ঘটনায় প্রধান উপদেষ্টার শোক প্রকাশ Dec 14, 2025
img
দারিদ্র্য আর অশিক্ষা এক নয় বললেন অভিনেতা Dec 14, 2025