বিস্কুট আমাদের জীবনের সহজ একটি অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে—সকালের চায়ের সঙ্গে হোক কিংবা শিশুদের টিফিনে। অতিথি আপ্যায়ন বা হালকা ক্ষুধা মেটাতে বিস্কুটই যেন সবার ভরসা। কিন্তু এই সহজলভ্য খাবারের পেছনে লুকিয়ে আছে নানান স্বাস্থ্যঝুঁকি, যা নিয়ে সতর্ক করছেন চিকিৎসক ও পুষ্টিবিদরা।
বলা হচ্ছে, নিয়মিত বিস্কুট খাওয়ার অভ্যাস শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। কারণ, বিস্কুট সাধারণত উচ্চ তাপে তৈরি হয়, ফলে এতে তৈরি হয় অ্যাক্রালামাইড নামক রাসায়নিক, যা ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। শুধু তাই নয়, বিস্কুট তৈরিতে ব্যবহৃত হয় ময়দা, পাম অয়েল, ট্রান্স ফ্যাট এবং রিফাইন্ড সুগার—যেগুলো স্থূলতা, ডায়াবেটিস ও হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়াতে সহায়ক।
ছোটদের দেওয়া ক্রিম বিস্কুটে এই ক্ষতি আরও প্রকট হতে পারে।
অনেকে ভাবেন ডাইজেস্টিভ বা হাই-ফাইবার লেখা বিস্কুট স্বাস্থ্যকর। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের মতে, এতে ব্যবহৃত মূল উপকরণ একই, আর প্রস্তুত প্রক্রিয়াও একই রকম ক্ষতিকর। বিস্কুটের প্যাকেটে লেখা আইএনএস নাম্বার গুগলে সার্চ করলেই বোঝা যাবে কোন অ্যাডিটিভ বা প্রিজারভেটিভ ব্যবহার হয়েছে এবং তা শরীরের জন্য কতটা ক্ষতিকর হতে পারে।
বিস্কুট পুরোপুরি বাদ দেওয়া হয়তো বাস্তবসম্মত নয়। এটি একটি দ্রুত এনার্জির উৎস। তবে বিস্কুট খাওয়ার পরিমাণ ও ঘনত্ব কমানোই সবচেয়ে ভালো উপায়। চিকিৎসক ও পুষ্টিবিদদের পরামর্শ, বিস্কুট বা কেক নয়—বাচ্চাদের দিতে পারেন চিড়ার নাড়ু, মুড়ির মোয়া, ছাতু বা বেসনের লাড্ডু। এ ধরনের প্রাকৃতিক খাবারে নেই প্রিজারভেটিভ বা কৃত্রিম ফ্লেভার, আবার সহজপাচ্যও।
বিস্কুট পুরোপুরি বর্জন করা সম্ভব না হলেও অভ্যাসকে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। বিশেষ করে ছোট বয়স থেকেই সচেতনতা শুরু হলে দীর্ঘমেয়াদে ভালো ফল মিলবে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
আরএ/এসএন