গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে হামলা ও হাতুড়ি দিয়ে দরজা-জানালা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় কার্যালয়ের ভিতর থেকে চেয়ার-টেবিল বের করে ওই ভবনের সামেনে আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়।
শনিবার (১০ মে) বিকাল ৫ টার দিকে পলাশবাড়ী উপজেলা পরিষদের গেট সংলগ্ন বঙ্গবন্ধু মার্কেট ভবনের দ্বিতীয় তলায় দলীয় কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানান, হঠাৎ করে ঘাড়ে ব্যাগসহ স্কুল ড্রেস পড়া ৫-৭ জন তরুন ও যুবক দৌড়ে আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে আসে। পরে তারা হাতুড়ি দিয়ে দরজা-জানালা ভেঙে ভিতরে ঢুকে ভাঙচুর চালায়। এ সময় কার্যালয়ে থাকা চেয়ার-টেবিল উপর থেকে নিচে ফেলে দেওয়া হয়। পরে ওই ভবনের সামনে সেগুলোতে আগুন ধরিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। এরপর কয়েকজনকে খুলে ফেলা জানালার গ্রিল ও লোহার রড হাতে নিয়ে চলে যেতে দেখা যায়। তবে হামলাকারী যুবকদের পরিচয় ও তাদের কাউকে চিনতে পারেনি বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, ব্যাগ ঘাড়ে দুই যুবকের একজন স্কুল ড্রেস পড়ে জানালার লোহার গ্রিল হাতে নিয়ে পায়ে হেটে চলে যাচ্ছে। তাদের পিছনে আরও দুজনকে হাতে লোহার রড় নিয়ে বের হতো দেখা যায়।
ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে পলাশবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জুলফিকার আলী ভুট্টু বলেন, বিকালে চৌমাথা মোড়ে ছাত্র-জনতার ব্লকেট ও অবস্থান কর্মসূচি চলছিলো। পরে হঠাৎ করে আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে হামলার ঘটনার খবর পাই। হামলাকারীরা তালা ভেঙে সেখানে থাকা চেয়ার-টেবিল বের করে আগুন দিয়ে চলে যায়। তবে তাৎক্ষণিভাবে কেউ হামলাকারীদের পরিচয় জানাতে পারেনি।
এরআগে, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে রংপুর-ঢাকা মহাসড়কের পলাশবাড়ী উপজেলা শহরের চৌমাথা মোড়ে ব্লকেড এবং অবস্থান কর্মসূচি পালন করে ছাত্র-জনতা। পরে একটি বিক্ষোভ মিছিল মহাসড়ক প্রদক্ষিণ করে চৌমাথা মোড়ে এসে শেষ হয়। তবে মিছিলে অংশ নেওয়া কেউ আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে হামলা ও আগুন দেয়নি বলে দাবি পলাশবাড়ীর ছাত্র নেতাদের।
জেলা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মূখ্য সংগঠক মাসুদ রানা শেখ বলেন, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ, ফ্যাসিবাদের দোসরদের পালিয়ে যাওয়ার প্রতিবাদ ও জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র প্রকাশের দাবিতে শান্তিপূর্ণভাবে আমাদের কর্মসূচি শেষ হয়েছে। এই কর্মসূচী চলাকালিন সময়ে আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় তাদের কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া ছাত্র-জনতার কেউ জড়িত নন।
অপরদিকে, পলাশবাড়ী উপজেলা যুব জামায়াতের সভাপতি শামীম হোসেন বলেন, অবস্থান কর্মসূচিতে ছাত্র শিবিরের নেতাকর্মীরাও অংশ নেয়। তবে আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে ভাঙচুর ও আগুন দেওয়ার ঘটনায় তাদের কোন সম্পৃক্ততা নেই।
এফপি/টিএ