আইপিএল বাতিল হলে লোকসান হতো ৩০১৫ কোটি, প্রতি ম্যাচে আয় কত

অর্থ, চাকচিক্য ও নানা জৌলুসে মোড়ানো টুর্নামেন্ট ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল)। যা ভারতীয় এই প্রতিযোগিতাকে বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় ফ্র্যাঞ্চাইজি আসরে পরিণত করেছে। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) দাপট কিংবা দেশি-বিদেশি ক্রিকেটারদের প্রবল আগ্রহ– সবমিলিয়ে এই টুর্নামেন্ট চলাকালে অন্য আন্তর্জাতিক ব্যস্ততাও থাকে না। কিন্তু অপরিহার্য এক সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতিতে ধাক্কা খেয়েছে আইপিএলের চলমান অষ্টাদশ আসর।

ভারত-পাকিস্তানের সামরিক উত্তেজনা ও সংঘাতের মাঝে এক সপ্তাহের জন্য স্থগিত করা হয়েছিল আইপিএল। সেই ঘোষণার ২৪ ঘণ্টা পরই গতকাল (শনিবার) যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দেশ। যদিও এখনও পরিস্থিতি পুরো স্বাভাবিক হয়নি। তবে এরই মাঝে আইপিএলের বাকি অংশ শুরু করতে বিসিসিআই তোড়জোড় চালাচ্ছে। একইসঙ্গে আলোচনা চলছে টুর্নামেন্টটির বড় অঙ্কের সম্ভাব্য লোকসানের প্রসঙ্গে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমসে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, এবারের আইপিএলে প্রতিটি ম্যাচ থেকে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড বিসিসিআই ১০০-১২৫ কোটি রুপি আয় করছে। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা ১৪২-১৭৭ কোটি টাকা। যেখানে সম্প্রচার স্বত্ত্ব, স্পন্সরশিপ ও টিকিট বিক্রির মূল্য অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। সেই কারণেই সম্ভবত নিরাপত্তা শঙ্কায় পরিত্যক্ত ঘোষণা করা ম্যাচ পুনরায় আয়োজনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে আইপিএল কর্তৃপক্ষ। গত বৃহস্পতিবার ধর্মশালায় চলমান পাঞ্জাব কিংস ও দিল্লি ক্যাপিটালসের ম্যাচের মাঝেই ফ্লাডলাইট বন্ধ হয়ে যায়। পরে ঘোষণা আসে ম্যাচটি পরিত্যক্ত।

পরিস্থিতির উন্নতি না হলে আইপিএলের বাকি অংশ হয়তো ভারতের বাইরে আয়োজন করা হতো। সেরকম কিছু ঘটলেও নির্ধারিত বাজেটের চেয়ে বেশি খরচ হওয়ার পাশাপাশি লাভের অঙ্ক কাটছাট করতে হতো বিসিসিআইয়ের। তবে আপাত দৃষ্টিতে তেমন কিছু ঘটবে না বলেই মনে হচ্ছে। বিসিসিআই চাচ্ছে চলতি মে মাসের মধ্যেই টুর্নামেন্টের বাকি ১৭ ম্যাচ সম্পন্ন করতে। এর বাইরে আসর গড়ালে বিদেশি ক্রিকেটারদের পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হবে। যুদ্ধবিরতির পরপরই খেলোয়াড় ও কোচদের সঙ্গে যোগাযোগ করে দ্রুত ফেরত আসার জন্য বলেছে কয়েকটি ফ্র্যাঞ্চাইজি।

যুদ্ধবিরতির ফলে পরিস্থিতি হঠাৎ–ই বদলে গেছে। কোনো কারণে পুরো আসরটিই বাতিল হলে অনেক বড় লোকসান গুনতে হতো বিসিসিআই থেকে শুরু করে সকল ফ্র্যাঞ্চাইজিকে। দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বলছে, এই পরিস্থিতিতে যদি টুর্নামেন্ট একেবারে বন্ধ হয়ে যেত, তাহলে বিসিসিআইকে আনুমানিক ২,১২৫ কোটি রুপি (৩০১৫ কোটি টাকা) লোকসানের মুখে পড়তে হত। বিমা সংস্থার সাহায্য যদি পাশে সরিয়েও রাখা যায়, তবুও সম্প্রচার স্বত্ত্ব এবং ম্যাচ সংক্রান্ত অন্যান্য উপার্জনের কথা মাথায় রেখে এই ক্ষতির পরিমাণ মোট আয়ের অর্ধেক বলা যেতেই পারে।

প্রসঙ্গত, স্থগিত হওয়ার আগে আইপিএলের অষ্টাদশ আসর থেকে ছিটকে গেছে চেন্নাই সুপার কিংস, সানরাইজার্স হায়দরাবাদ ও রাজস্থান রয়্যালস। বাকি সাতটি দল এখনও প্লে-অফের দৌড়ে আছে। অবশ্য এর মধ্যে শীর্ষে (যথাক্রমে গুজরাট টাইটান্স, রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু, পাঞ্জাব কিংস, মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স ও দিল্লি ক্যাপিটালস) থাকা দলগুলোরই সম্ভাবনা বেশি। এখনও বাকি ১২টি লিগ ম্যাচ ও চারটি প্লে অফ। যেগুলো দক্ষিণাঞ্চলীয় তিন শহর বেঙ্গালুরু, চেন্নাই ও হায়দরাবাদে হতে পারে।

এসএন 

Share this news on:

সর্বশেষ

img
ইসরায়েলের বাধায় থমকে গেছে যুদ্ধবিরতি ও বন্দি মুক্তি চুক্তি May 12, 2025
img
জুলাইকে অস্বীকার করে শান্তিতে থাকার সুযোগ নেই: আসিফ মাহমুদ May 12, 2025
img
বলিউডের তারকারা ভারত সরকারের বিরুদ্ধে নীরব : জাভেদ আখতার May 12, 2025
img
শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গণহত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন ট্রাইব্যুনালে দাখিল আজ May 12, 2025
img
আ. লীগ নিষিদ্ধের প্রজ্ঞাপন নিয়ে আজ শাহবাগে আনন্দ মিছিল May 12, 2025
img
দুপুরের মধ্যে ৭ অঞ্চলে ঝড়-বৃষ্টির পূর্বাভাস May 12, 2025
img
গাজায় প্রাণ গেল আরও ২৬ ফিলিস্তিনির May 12, 2025
img
৮৭ ঘণ্টা যুদ্ধে পাকিস্তানের চেয়ে ভারতের ক্ষতি ২২ গুণ বেশি May 12, 2025
img
ঢাকায় বজ্রবৃষ্টির পূর্বাভাস May 12, 2025
img
সোমবার রাজধানীর যেসব এলাকার মার্কেট বন্ধ May 12, 2025