ট্রাম্পের হস্তক্ষেপের পর পাকিস্তানকে নতুন বার্তা চীনের

চারদিন ধরে চলা ভারত-পাকিস্তান সশস্ত্র সংঘর্ষে যখন দক্ষিণ এশিয়ার আকাশে বারুদের গন্ধ, তখন আন্তর্জাতিক মহলে বাড়ছিল উদ্বেগ। সীমান্ত পার হওয়া গোলাগুলির এই খেলায় মূলত যুদ্ধমুখী হয়ে উঠেছিল দুই প্রতিবেশী রাষ্ট্র। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, এই সংঘাতের আসল ‘নাটের গুরু’ চীন, যার প্রত্যক্ষ সমর্থনেই পাকিস্তান ভারতের বিরুদ্ধে এতটা আগ্রাসী হয়ে উঠেছিল।

ভারত হয়তো আন্দাজও করতে পারেনি, পাকিস্তান এমন পাল্টা জবাব দেবে। যুদ্ধের ময়দানে ব্যবহৃত হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, চীন, রাশিয়া, ফ্রান্স, তুরস্ক এবং ইসরাইলের অস্ত্রশস্ত্র। এই সংঘাতে অস্ত্র বাজারের নতুন ‘রাজা’ নির্ধারণের প্রতিযোগিতাও যেন স্পষ্ট হয়ে ওঠে।

চূড়ান্ত রক্তক্ষয় রোধে এগিয়ে আসেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। যদিও কিছুদিন আগেই তিনি জানিয়েছিলেন, ভারত-পাকিস্তানের দ্বন্দ্বে তিনি হস্তক্ষেপ করতে চান না। এমনকি ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভান্স বলেছিলেন, “এই সংঘাত যুক্তরাষ্ট্রের মাথাব্যথা নয়।” তবে পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছায়, যেখানে পশ্চিমা আধুনিক যুদ্ধবিমান চীনা প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে ভূপাতিত হওয়ায় নাটকীয় মোড় নেয় কূটনৈতিক চিত্রপটে।

বিশ্লেষকদের মতে, এই ঘটনাই হয়তো ট্রাম্পকে বাধ্য করে ভারত-পাকিস্তানকে থামাতে। ফলে হঠাৎ যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়, থামে গোলাগুলি। যদিও এতে সাময়িকভাবে চীনের ‘জয়যাত্রা’ থেমে যায়, কিন্তু বেইজিং থামার কোনো বার্তা দেয়নি।

শনিবার চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই ফোনে পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দারকে বলেন, “পাকিস্তানের সার্বভৌমত্ব, ভৌগোলিক অখণ্ডতা এবং স্বাধীনতার প্রতি চীনের দৃঢ় সমর্থন রয়েছে।”
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, আলাপকালে ইসহাক দার আঞ্চলিক পরিস্থিতি তুলে ধরেন এবং পাকিস্তান যে সংযমের পরিচয় দিয়েছে, তা প্রশংসনীয় বলে মন্তব্য করেন ওয়াং ই। পাশাপাশি তিনি বলেন, “কৌশলগত সহযোগী ও আস্থাভাজন বন্ধু হিসেবে চীন পাকিস্তানের পাশে আছে এবং থাকবে।”

এই যুদ্ধ যেন শুধু একটি আঞ্চলিক দ্বন্দ্ব ছিল না, বরং আন্তর্জাতিক পরাশক্তিদের আধিপত্যের লড়াইয়ের প্রেক্ষাপটে এক মোড়বদলের নাম। অস্ত্র, অর্থনীতি ও কূটনীতি, সব মিলিয়ে ভারত-পাকিস্তানের সংঘাত আরও একবার সামনে নিয়ে এসেছে বৃহৎ শক্তিগুলোর ভূরাজনৈতিক খেলা।

এসএন 

Share this news on: