ভারতের বেশিরভাগ ওষুধের মূল উপাদান (‘অ্যাক্টিভ ফার্মাসিউটিক্যাল ইনগ্রেডিয়েন্ট’ বা API) আসে চীন থেকে—তা সত্ত্বেও কেন্দ্র সরকার এসব ওষুধকে ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ তকমা দিচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছেন মেডিক্যাল ও সেলস রিপ্রেজেন্টেটিভদের সংগঠন। শনিবার কলকাতায় অনুষ্ঠিত এক সভায় এই অভিযোগ করেন ফেডারেশন অফ মেডিক্যাল অ্যান্ড সেলস রিপ্রেজেন্টেটিভস অ্যাসোসিয়েশনের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক পার্থ রক্ষিত।
সম্প্রতি ৭৪৮টি অত্যাবশ্যকীয় ওষুধের দাম বাড়ার বিষয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করা হয় সভায়। অভিযোগ করা হয়, কেন্দ্রীয় সংস্থা ন্যাশনাল ফার্মাসিউটিক্যাল প্রাইসিং অথরিটি (NPPA)-র অনুমোদনেই এই দাম বাড়ানো হয়েছে, যার বোঝা যাচ্ছে সাধারণ মানুষের ঘাড়ে।
সভায় অংশ নেন চিকিৎসক ফুয়াদ হালিম, আইনজীবী সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায়, সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক বাসব রায়চৌধুরী ও সদস্য শুভ্রাংশু ভট্টাচার্য। তারা বলেন, ভারতের ওষুধ শিল্পে একসময় সরকারি সংস্থাগুলোর দাপট থাকলেও কর্পোরেট বান্ধব নীতির ফলে সেসব প্রতিষ্ঠান এখন প্রায় অচল। উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরা হয় বেঙ্গল কেমিক্যালের কথা, যাদের কার্যক্রম ন্যাপথালিন ও ফিনাইল তৈরিতে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছে।
সভায় আরও বলা হয়, সুপ্রিম কোর্টের ‘জেনেরিক ওষুধ প্রেসক্রিপশন বাধ্যতামূলক’ রায়কে স্বাগত জানানো হলেও বাস্তবতা ভিন্ন। কারণ, গুণমান পরীক্ষায় ফেল করছে বেশিরভাগ জেনেরিক ওষুধ, যা দেশের সেন্ট্রাল ড্রাগ স্ট্যান্ডার্ড কন্ট্রোল অর্গানাইজেশন (CDSCO)-র প্রতিবেদনেও উঠে এসেছে।
অভিযোগ, সরকারি সংস্থা ফার্মাসিউটিক্যাল অ্যান্ড মেডিক্যাল ডিভাইসেস ব্যুরো অফ ইন্ডিয়া (PMBI) এমন সব প্রতিষ্ঠানকে বরাত দিচ্ছে, যারা বারবার নিম্নমানের ওষুধ সরবরাহ করছে।
এই প্রেক্ষাপটে সংগঠনের দাবি, ওষুধের মান নিশ্চিত করা, দাম নিয়ন্ত্রণে আনা ও সরকারি ওষুধ সংস্থাগুলোকে পুনরুজ্জীবিত করাই এখন সবচেয়ে জরুরি।