দক্ষিণ-পূর্ব ইউরোপের দেশ নর্থ মেসিডোনিয়ায় শীঘ্রই প্রায় ১২ হাজার বাংলাদেশি কর্মী যাওয়ার সুযোগ পেতে যাচ্ছে। আগামী সপ্তাহে এ নিয়ে রাজধানী স্কোপজে বিশেষ বৈঠক ডেকেছে নর্থ মেসিডোনিয়ার সরকার।
বাংলাদেশের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ককে এক ধাপ এগিয়ে নেওয়ার আগ্রহের অংশ হিসেবে শ্রমবাজার খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে মেসিডোনিয়ার কূটনৈতিক সূত্র।
সূত্র জানায়, আগামী ১৯ মে মেসিডোনিয়ায় আলোচনার জন্য ডাকা হয়েছে নয়াদিল্লি থেকে বাংলাদেশের দায়িত্ব পালন করা নর্থ মেসিডোনিয়ার রাষ্ট্রদূতকে।
ডাকা হয়েছে বাংলাদেশে দেশটির নতুন অনারারি কনসাল জেনারেলসহ সংশ্লিষ্টদের। বাংলাদেশ থেকে বড় সংখ্যক কর্মী নেওয়ার প্রক্রিয়া নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতেই এ বৈঠক। বাংলাদেশ থেকে তারা মূলত দক্ষ কর্মী নিতে চায়।প্রাথমিকভাবে বাংলাদেশের জন্য ১২ হাজার কোটা নির্ধারণ করা হয়েছে।
গার্মেন্ট, কনস্ট্রাকশন ও ফ্যাক্টরি খাতে এসব কর্মী নেওয়া হবে। এরই মধ্যে সীমিত সংখ্যায় ওয়ার্ক পারমিট ও ভিসা দেওয়া শুরু হয়েছে। কিন্তু বড় সংখ্যক কর্মীর ক্ষেত্রে প্রক্রিয়া নিয়ে চূড়ান্ত করতে চায় দেশটি। সেই সঙ্গে এইআই বিষয়ে বাংলাদেশি ছাত্রদের জন্য শতাধিক স্কলারশিপ দেওয়ার আলোচনাও আছে।
জানা গেছে, পূর্ব ইউরোপে বাংলাদেশের শ্রমবাজার সম্প্রসারণের অংশ হিসেবে কয়েক বছর আগেই নর্থ মেসিডোনিয়াতেও আলোচনা শুরু করে বাংলাদেশ। সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ের আলোচনার পর নর্থ মেসিডোনিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশ থেকে দক্ষ কর্মী নেওয়ার বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করে গত বছরের শুরুতেই।
বর্তমান বিশ্বের আলোচিত এইআই প্রযুক্তির ক্ষেত্রে বিশ্বসেরা এই নর্থ মেসিডোনিয়া। এমনিতেই নর্থ মেসিডোনিয়ায় আইটি খাতে দক্ষ লোকের প্রয়োজন হয় বেশ। এখানকার লোকজন অন্য দেশে চলে যায়।
তাই কর্মী প্রয়োজন হয়। এ ছাড়া ইউরোপিয়ান হাইওয়ে তৈরির জন্য নির্মাণ শ্রমিকের বিষয়েও চিন্তা করছে দেশটি। এখানকার বেতন মধ্যপ্রাচ্যের যে কোনো দেশের চেয়ে ভালো। সঙ্গে খাবারের জন্য আলাদা বরাদ্দ থাকে।কর্মপরিবেশও ভালো হয়।
ইউরোপে দায়িত্ব পালন করা কূটনীতিকরা বলছেন, পূর্ব ইউরোপের দেশগুলোতে বাংলাদেশিদের ইমেজ সংকট একটা বড় সমস্যা। কাজ করতে আসা বাংলাদেশিদের মানসিকতার পরিবর্তন ও দেশপ্রেম প্রয়োজন।
রোমানিয়া, বুলগেরিয়া ও নর্থ মেসিডোনিয়ার মতো দেশগুলোকে ট্রানজিট হিসেবে ব্যবহার করার দুরভিসন্ধি বন্ধ করতে হবে। নিয়োগকর্তার সঙ্গে হওয়া চুক্তির মেয়াদ পূরণ না করে পালিয়ে অন্য দেশে যাওয়ায় নিয়োগকর্তারা বাংলাদেশিদের ওপর ভরসা করতে চান না। এক দেশ থেকে আরেক দেশে প্রবাসীরা যাবেন এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু মেয়াদ পূরণ করে যাওয়া প্রয়োজন। না হলে অন্যদের জন্য সুযোগ নষ্ট হয়, নষ্ট হয় দেশের সম্ভাবনাময় শ্রমবাজার। কঠিন হয়ে যায় টেকসই একটি শ্রমবাজার প্রতিষ্ঠা করা।
আরএম/এসএন