অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব নেয়ার পর প্রথমবারের মতো চট্টগ্রাম সফরে যাচ্ছেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
বুধবার (১৪ মে) একদিনের এই সফরে যোগ দেবেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে। এর আগে পরিদর্শন করবেন চট্টগ্রাম বন্দর। এ ছাড়া কালুরঘাট সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনেরও কথা রয়েছে তার।
১৮৮৮ সালে ব্রিটিশদের চিটাগাং পোর্ট কমিশনার্স অ্যাক্ট গঠনের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয় দেশের প্রধান সমুদ্র বন্দর চট্টগ্রাম বন্দরের। বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বার্ষিক ১২৫ বিলিয়ন ডলার বাণিজ্যের প্রায় ৯২ শতাংশ পরিচালিত হয় এ বন্দর দিয়ে।
দেশের অর্থনীতির স্বর্ণদ্বার খ্যাত এ বন্দরে সব খাতের প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বে-টার্মিনাল নির্মাণ কাজ শেষ করা ও বন্দরে আধুনিকায়নের সংকট কাটিয়ে উঠার তাগিদ বন্দর ব্যবহারকারীদের।
বিজিএমইএর সাবেক সহ-সভাপতি রাকিবুল আলম চৌধুরী বলেন, যেভাবে বন্দরকে আধুনিকায়ন করা হবে বলা হয়েছিল, এখনও সেভাবে হয়নি। এখনও গতানুগতিক পদ্ধতিতে পণ্য লোড-আনলোড করা হচ্ছে। সুবধিা বাড়িয়ে এসব পরিবর্তন করতে হবে।
ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ফোরামের চেয়ারম্যান এস এম আবু তৈয়ব বলেন, বন্দরকে গতিশীল করার জন্য আধুনিক যন্ত্রপাতি স্থাপন করতে হবে। বন্দরের আধুনিকায়নে প্রধান উপদেষ্টার কাছে আবেদন থাকবে।
দেশের নীতি নির্ধারণীর সর্বোচ্চ পর্যায়ে থেকে বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধি ও বিশ্বমানের সেবা নিশ্চিতে প্রতিনিয়ত তদারকি করা হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় প্রথমবারের মতো চট্টগ্রাম সফরে এসে প্রধান এ সমুদ্র বন্দর পরিদর্শন করবেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। মতবিনিময় করবেন বন্দর ব্যবহারকারী ব্যবসায়ী ও বিভিন্ন সংস্থার নেতাদের সঙ্গে।
দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা চট্টগ্রাম বন্দরের অপার সম্ভাবনা থাকলেও নানা কারণে বিশ্ব প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে রয়েছে এ বন্দর। পিছিয়ে থাকার অন্যতম কারণ হচ্ছে দক্ষ জনবলের অভাব, অর্থনৈতিক সক্ষমতা ও উন্নত যন্ত্রপাতি না থাকা। তবে এরই মধ্যে আশার আলো হচ্ছে বড় বড় বিদেশি বিনিয়োগ এগিয়ে আসছে এ বন্দরে।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্সের সহ-সভাপতি এএম মাহবুব চৌধুরী বলেন, প্রধান উপদেষ্টার নেটওয়ার্ক কাজে লাগিয়ে বিদেশি বিনিয়োগ আনা সম্ভব। বিনিয়োগ এলে বন্দরের সক্ষমতা বাড়বে। ব্যবসায়ীরাও সুযোগ পাবে ব্যবসা সম্প্রসারণে।
সফরে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে থেকে, ১১ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে কর্ণফুলী নদীর ওপর কালুরঘাট সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর উন্মোচন করবেন প্রধান উপদেষ্টা। যার মধ্যদিয়ে দক্ষিণ চট্টগ্রামের কোটি মানুষের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন বাস্তবায়নের বুনন শুরু হবে।
কালুরঘাট সেতু বাস্তবায়ন পরিষদের সদস্য সচিব মুস্তফা নঈম বলেন, যত দ্রুত সম্ভব এটি নির্মাণ হবে। অনিয়ম-দুর্নীতি ঠেকাতে সরকারের কঠোর নজরদারি রাখতে হবে।
সফরসূচির শেষ পর্যায়ে দুপুরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫ম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন প্রধান উপদেষ্টা। এতে অংশ নেবেন ২২ হাজার ৬০০ গ্র্যাজুয়েট।
এসএম/এসএন