ফলের রাজা আম, পাকলে হয় অত্যন্ত সুস্বাদু। গ্রীষ্মের প্রচণ্ড গরমে গাছপাকা মিষ্টি আম এনে দেয় স্বস্তি ও প্রশান্তি। গ্রীষ্মকালীন মৌসুমি ফলের মধ্যে আমের জনপ্রিয়তা সর্বজনীন। ইতোমধ্যে বাজারে আম উঠতে শুরু করেছে।
তবে বাজারে বিশুদ্ধ, রাসায়নিকমুক্ত আম পাওয়া এখন একটি বড় চ্যালেঞ্জ। অনেক বিক্রেতা তাদের আমকে ‘রাসায়নিকমুক্ত’ দাবি করে বিক্রি করছেন, আর ক্রেতারাও তা বিশ্বাস করে কিনছেন।
তাই সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে—বিক্রেতার কথায় না গিয়ে নিশ্চিত হতে হবে, আমটি আসলেই রাসায়নিকমুক্ত কি না।
কেননা এর ওপরই নির্ভর করছে আমাদের সুস্বাস্থ্য। তাই এক নজরে দেখে নিন ফরমালিনমুক্ত আম চেনার উপায়।
কিছু লক্ষণ দেখে বোঝা সম্ভব কোন আমটি ক্ষতিকর কেমিক্যাল মুক্ত।
কেমিক্যালমুক্ত আমগুলো কাঁচা-পাকা রঙের হয়।
আমের গায়ে সাদা বা কালচে দাগ থাকতে পারে। বিপরীতে, যে আমগুলো অত্যন্ত হলুদ, অতিরিক্ত চকচকে ও একদম মসৃণ দেখায়, সেগুলোর ক্ষেত্রে কেমিক্যাল ব্যবহারের শঙ্কা বেশি।
আম কিনতে গেলে একটি বিষয় অবশ্যই খেয়াল করবেন, তা হলো-আমের ওপর মাছি বসে কি না। আমে রাসায়নিক ফরমালিন বা কার্বাইড দেওয়া থাকলে সে আমের ওপরে কখনোই মাছি বসবে না।
গাছপাকা আমের ত্বকে দাগ থাকে।
রাসায়নিকে পাকানো আমের গা হয় দাগহীন। কারণ কাঁচা অবস্থাতেই পেড়ে ফর্মালিন ও কার্বাইড দিয়ে পাকানো হয়।
আম কেনার পর সেই আম মুখে দেওয়ার পর যদি দেখেন যে আমে কোনো সৌরভ নেই কিংবা আমে টক-মিষ্টি কোনো স্বাদই নেই, তাহলে বুঝবেন যে সে আমে ফর্মালিনজাতীয় কোনো রাসায়নিক দ্রব্য দেওয়া হয়েছে।
আম কেনার পর কিছুক্ষণ রেখে দিন। এমন কোথাও রাখুন যেখানে বাতাস চলাচল করে না। গাছপাকা আম হলে কিছুক্ষণ পর গন্ধে ম ম করবে চারপাশ। ওষুধ দেওয়া আমে এই সুমিষ্ট গন্ধ পাওয়াই যাবে না।
গাছপাকা আমের গায়ের রংও আলাদা। গোড়ার দিকে একটু গাঢ় রং থাকে গাছপাকা আমে। রাসায়নিক পদার্থ দিয়ে পাকানো আমের আগাগোড়া হলদে রং হয়ে যায়। হিমসাগরসহ আরো বেশ কিছু জাতের আম পাকলেও সবুজ থাকে। গাছপাকা হলে এসব আমের ত্বকে কালো কালো দাগ পড়ে। রাসায়নিক দিয়ে পাকানো হলে আমের ত্বক হয় মসৃণ ও সুন্দর।
ফরমালিনমুক্ত আম চেনার একটি উপায় হচ্ছে গন্ধ শুকে দেখা। আম কেনার আগে নাকের কাছে নিয়ে ভালো করে শুকুন। গাছপাকা আম হলে অবশ্যই বোঁটার কাছে চেনা গন্ধ পাবেন। ওষুধ দেওয়া আমে গন্ধ খুব বেশি থাকে না কিংবা বাজে বা ঝাঁজালো গন্ধ থাকে। ফলে বোঝা যায় যে আমটা আসলে গাছপাকা না।
বাজার থেকে আম কিনে আনার পর খাওয়ার আগে অন্তত ১৫ মিনিট পানিতে ভিজিয়ে রাখুন, এরপর ভালোভাবে ধুয়ে খোসা ছাড়িয়ে উপভোগ করুন মৌসুমি এই পুষ্টিকর ও সুস্বাদু ফলটি।
আরএ