প্রকৃতিতে দেখা মিলছে রোদ-বৃষ্টির খেলা। যদিও বলা হয়ে থাকে ভোর দেখলেই বোঝা যায় দিন কেমন যাবে, তবে বর্ষায় বাংলার প্রকৃতি এই প্রবাদকে মিথ্যে করে ছাড়ে। সকালে বের হয়ে দেখলেন মিষ্টি রোদ উঠেছে, কিন্তু বেলা গড়াতেই নামতে পারে অঝোর শ্রাবণ ধারা। তখন পড়তে হতে পারে বিপদে। তাই বর্ষার প্রস্তুতি নিয়েই ঘর থেকে বের হতে হবে। এই সময়ে বিশেষ নজর দিতে হবে নিত্যদিনের ব্যাগ নির্বাচনে।
যদি আপনি ব্যাগপ্রিয় হন, তবে বর্ষাকাল ভাবিয়ে তুলতে পারে কেমন ব্যাগ এখন উপযোগী। বর্ষায় ব্যবহারের জন্য আকারে একটু বড় ব্যাগ নির্বাচন করা ভালো। কেননা বর্ষা দিনে আনুষঙ্গিক জিনিস বেড়ে যাওয়ায় বড় ব্যাগগুলোই বেশি উপযোগী। ফ্যাশনেবল ও মানানসই ব্যাগ বর্ষায় করতে পারে সবার থেকে আলাদা।
এমন দিনে যেকোনো সময় বৃষ্টির ফোঁটা এসে আপনাকে এবং সঙ্গে থাকা প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র বোঝাই ব্যাগটিকে ভিজিয়ে দিতে পারে। এতে ব্যাগের মধ্যে থাকা জিনিসপত্র নষ্ট হবে। তাই ব্যাগ নিয়ে বর্ষায় চাই বিশেষ ধরনের প্রস্তুতি। পানি প্রতিরোধী উপকরণ দিয়ে তৈরি ব্যাগ ব্যবহার করাই উত্তম, যা সহজে পরিষ্কার করা যায় এবং অতিরিক্ত যত্ন নেওয়ার দরকার হয় না। এ ক্ষেত্রে গ্লসি ফিনিশের প্লাস্টিক ও অ্যাক্রেলিক ব্যাগই হবে সেরা পছন্দ। বৃষ্টির পানিকে সহজেই এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব ব্যালিস্টিক নাইলন ও পলিইউরেথিন কোটিং দেওয়া পানিরোধক ব্যাগ দিয়ে। এখন নানা রঙের, নানা ডিজাইনের ওয়াটারপ্রুফ ব্যাগ পাওয়া যায় বাজারে। ব্যাগগুলো বর্ষায় ট্রেন্ডি হওয়ায় হাল ফ্যাশনও বজায় থাকে।
যাদের চামড়ার ব্যাগ পছন্দ এবং বর্ষায়ও নিজের পছন্দের ব্যাগটি বদলাতে চান না, তাদের নিতে হবে বিশেষ প্রস্তুতি। যদিও বর্ষায় চামড়া ও কাপড়ের ব্যাগ ব্যবহার না করাই উত্তম। একান্তই যদি করতে হয় তবে বের হওয়ার সময় অবশ্যই সঙ্গে ব্যাকপ্যাক কভার অথবা একটি পলিথিনের বড় ব্যাগ নিয়ে বের হবেন। যখনই বৃষ্টি আসবে, পলিথিন দিয়ে মুহূর্তেই ব্যাগটি মুড়িয়ে নিতে পারেন।
চামড়ার ব্যাগ বৃষ্টির পানিতে ভিজে গেলেই বাঁধবে বিপত্তি। তবে তা ওয়াটার প্রুফ কি না তা নিশ্চিত হয়ে নিন। তবে চামড়ার ব্যাগ ব্যবহার করলে কিছু বিষয় লক্ষ রাখতে হয়। ব্যাগের আঠা ছুটে যেতে পারে, আবার চামড়াও উঠে যেতে পারে। ভালো করে শুকিয়ে না রাখলে ড্যাম্প পড়ে চামড়ার ব্যাগ নষ্ট হতে পারে।
চামড়ার ব্যাগের যত্ন
চামড়ার ব্যাগ ভিজে গেলে গন্ধ বের হয়, সেই সঙ্গে ফাঙ্গাল আক্রমণও হতে পারে। তাই নিতে হবে বিশেষ যত্ন।
যদি বৃষ্টিতে পছন্দের চামড়ার ব্যাগটি ভিজেই যায়, তাহলে কড়া রোদে বা ড্রায়ার দিয়ে শুকাবেন না। বাইরে থেকে তাপ দিলে চামড়ার নিজস্ব তেলের আস্তর শুকাতে আরম্ভ করবে। ফলে ব্যাগ শক্ত হয়ে যাবে। বাইরের স্তরে ফাটলও দেখা দিতে পারে। তার চেয়ে সারা রাত ফ্যানের নিচে রেখে দিন। খবরের কাগজ বা টিস্যু পেপার ব্যাগের মধ্যে রেখে দিন। এতেও ভেজা ভাব কমে আসবে।
খবরের কাগজ অথবা টিস্যু পেপার দিয়ে শুকনো করে নেওয়ার পরে সামান্য ট্যালকম পাউডার ছড়িয়ে দিলে সেটির মধ্যকার সব আর্দ্রতা চলে যাবে।
ব্যাগ রেখে দেওয়ার জায়গাটা যদি কাঠের তৈরি হয় তা হলে কিন্তু এই দিনে ফাঙ্গাস বা পোকামাকড়ের আক্রমণ হওয়াটাই স্বাভাবিক। আজকাল বাজারে নানা ধরনের প্লাস্টিক জাতীয় ব্যাগ স্টোরেজ পাওয়া যায়। সেগুলো ব্যবহার করতে পারেন। বদ্ধ জায়গায় চামড়ার ব্যাগ রাখলে তা ফেটে যায়। একান্তই যদি রাখতে হয় তাহলে ব্যাগগুলোকে সুতি কাপড়ে মুড়িয়ে স্টোর করুন।
দরদাম : রেক্সিন, সিনথেটিক, আনস্টিচ লেদার ও প্লাস্টিক ব্যাগ সব কটিই এই মৌসুমের জন্য উপযোগী। কাপড়ের ব্যাগগুলো কটন ও পলিয়েস্টারের দুটি মিশ্রণে তৈরি, যা বৃষ্টি হলেও পানি ভেতরে ঢুকতে পারবে না। এর দাম পড়বে ৩০০ থেকে ৬০০ টাকার মধ্যে। আনস্টিচ লেদারের ব্যাগের দাম পড়বে ৮০০ থেকে দুই হাজার টাকা। এই সময়ের সবচেয়ে উপযোগী ব্যাগটির নাম ট্রান্সপারেন্ট ব্যাগ। ফ্যাশন ও স্টাইল দুটি বিষয়ের সঙ্গে মানিয়ে যায় এ ব্যাগটি। এই ব্যাগও পেয়ে যাবেন ৫০০ থেকে দুই হাজার টাকার মধ্যে।
এফপি/টিএ