উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেছেন, “আমি মনে করি, যারা প্রকৃত অর্থে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অংশ নিয়েছেন, তারা আমার ওপর হামলা করেননি। হামলা চালিয়েছে সেই গোষ্ঠী, যারা এই আন্দোলনের আড়ালে নাশকতা বা সেবোটাজ করতে চেয়েছে।”
বৃহস্পতিবার (১৫ মে) এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। মাহফুজ জানান, আন্দোলনকারী প্রতিনিধিদের সঙ্গে তার তিনটি বৈঠকের সময় নির্ধারিত ছিল—গতকাল রাত, আজ রাত এবং আগামীকাল সকাল। কিন্তু কোনও বৈঠকেই তারা উপস্থিত হননি। বরং পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই হঠাৎ করে কিছু অংশ পুরান ঢাকা থেকে কাকরাইল পর্যন্ত মিছিল করে আসে, যা ছিল একেবারেই অপ্রত্যাশিত।
তিনি বলেন, “আজ থেকে আমরা কঠোর অবস্থান নেব। যথেষ্ট হয়েছে। এমন রাজনৈতিক অপচেষ্টা আর সহ্য করা হবে না। যারা আন্দোলনের নামে নাশকতা করতে এসেছে, শিক্ষার্থীদের উচিত তাদের চিহ্নিত করা এবং আইনানুগ ব্যবস্থায় প্রশাসনকে সহযোগিতা করা।”
মাহফুজ আলম অভিযোগ করেন, “আমি যখন ঘটনাস্থলে আসি, তখন একটি বিশেষ গোষ্ঠী—যাদের আমি সেবোটার মনে করি—ইতোমধ্যে আন্দোলনে ঢুকে পড়েছিল। আমি কারও নাম বলছি না, তবে প্রশাসন ও গণমাধ্যমের দায়িত্ব তাদের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা বের করে আনা।”
তিনি আরও বলেন, গত আট মাস ধরে একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠী তার বিরুদ্ধে বিদ্বেষমূলক মনোভাব পোষণ করে আসছে এবং আজকের ঘটনাও সেই ধারাবাহিকতারই ফল হতে পারে।
আন্দোলনে পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন উপদেষ্টা। তার মতে, “শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা যখন রাস্তায় নামেন, তখন প্রথমেই সংলাপের চেষ্টা করা উচিত। সরাসরি বলপ্রয়োগ কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এটি আমাদের জাতীয় ট্রমার একটি অংশ।”
তিনি আজকের ঘটনায় আহত শিক্ষকদের প্রতি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, “আপনাদের আন্দোলন যদি ন্যায্য হয়, তবে সরকার তা শুনতে এবং আলোচনায় বসতে প্রস্তুত।”
মাহফুজ আরও বলেন, “আমি আন্দোলনকারীদের সামনে গিয়ে ৩০ মিটার দূর থেকে কথা বলতে চেয়েছি। কিন্তু তারা সে মর্যাদা দিতে পারেনি। সরকার চায়, যুক্তিপূর্ণ দাবি থাকলে তা নিয়ে বসে সমাধানে পৌঁছাতে।”
তিনি শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানান, “শাহবাগ বা কাকরাইলের মতো জায়গায় নামার আগে যেন সংলাপের পথ খোলা রাখা হয়। আলোচনার মাধ্যমেই অনেক সমস্যার সমাধান সম্ভব।”
শেষে তিনি জানান, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসন সংকটের বিষয়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ সংশ্লিষ্ট মহলকে অবহিত করা হয়েছে এবং দ্বিতীয় ক্যাম্পাস প্রতিষ্ঠার কাজ দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য শিগগির সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনায় বসা হবে।
এসএস