বাংলাদেশিদের জন্য শ্রমবাজার আবারও খোলার জন্য কয়েকটি শর্ত জুড়ে দিয়েছে মালয়েশিয়া। শর্তগুলোর মধ্যে রয়েছে, জনশক্তি রফতানি সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে মানবপাচার ও মানিলন্ডারিংয়ের মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি করা, শ্রমিকের নিরাপত্তা ও স্বার্থ সংরক্ষণ করে অভিবাসন ব্যয় কমানো এবং অভিবাসন ব্যয় কমানোর লক্ষ্যে সহযোগী এজেন্সি প্রথা বাদ দেয়া।
বৃহস্পতিবার (১৫ মে) মালয়েশিয়ার পুত্রজয়ায় দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাইফুদ্দিন নাশুসন ইসমাইল এবং মানবসম্পদ মন্ত্রীর স্টিভেন সিম চি সঙ্গে যৌথসভা করেন প্রবাসী কল্যাণ উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। এ সময় শ্রমিক প্রেরণ সংক্রান্ত একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। সেই চুক্তিতে এসব শর্ত দেয়া হয়। বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, নেপাল, মিয়ানমার ও পাকিস্তানের কাছ থেকে শ্রমিক নেয়ার বিষয়েও চুক্তি করে মালয়েশিয়া।
সংশ্লিষ্টরা বলেন, রিক্রুটিং এজেন্সির বেশি টাকা নেয়ার সুযোগ থাকলে সেখানে বাণিজ্য হয়। শ্রমিক প্রেরণে ব্যয় কম রাখা হলে বাণিজ্য হওয়ার আশঙ্কা থাকে না। তাছাড়া, সহযোগী এজেন্সি (অ্যাসোসিয়েট বেয়ারার) পদ্ধতি অভিবাসন ব্যয় বাড়িয়ে দেয়। শ্রমিক কম টাকায় মালয়েশিয়া যেতে পারলে প্রতারিত হওয়ার আশঙ্কা থাকে না।
জানা গেছে, মালয়েশিয়া আগামী কয়েক বছরে প্রায় ১২ লাখ শ্রমিক নেবে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশের শ্রমিকদের জন্য বড় সুখবর রয়েছে।
শ্রমবাজার সংশ্লিষ্টরা জানান, দেশটিতে সাধারণ শ্রমিকের বেতন মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর চাইতে দ্বিগুণ বা তারও বেশি। কিছু জটিলতায় বিশাল এই শ্রমবাজার প্রায় একবছর ধরে ঝুলে ছিল। ধীরে ধীরে সেই জটিলতা কেটেছে। ফলে মালয়েশিয়ায় বৈধভাবে যাওয়ার সুযোগ তৈরি হয়েছে। এর মাধ্যমে দেশে রেমিটেন্স প্রবাহ বৃদ্ধি পাবে।
কুয়ালালামপুরের বাংলাদেশের দূতাবাসের কর্মকর্তারা বলেন, মালয়েশিয়া পর্যাপ্ত সংখ্যক শ্রমিক পাঠানো গেলে বছরে প্রায় পাঁচ বিলিয়ন ডলার বাড়তি রেমিটেন্স পাবে বাংলাদেশ। এক্ষেত্রে শ্রমিকদের কম অভিবাসন ব্যয় ও তাদের সুরক্ষার বিষয়টি নজর দেয়া হচ্ছে।
বৈঠকে থাকা একজন কর্মকর্তা বলেন, মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আমাদের ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। বৈঠকে দেশটিতে শ্রমবাজার খোলার বিষয়ে একটি ইতিবাচক ফলাফল এসেছে। আগামী ২১ মে ঢাকায় যৌথ ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এসএন