কুমিল্লার দেবীদ্বারে মধ্যেরাতে সড়কে কুড়িয়ে পাওয়া ২৭ লাখ টাকার ভাগবাটোয়ারা নিয়ে দ্বন্দ্বে একজনকে আটক করা হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার (১৫ মে) রাত সাড়ে ১২টায় মো. সোহেল (৩৫) নামে একজনকে মারধর করে এলাকার কয়েকজন লোক থানায় নিয়ে আসে। এসময় পুলিশ ৪ জনকে হেফাজতে নিলেও জিজ্ঞাসাবাদের পর ৩ জনকে ছেড়ে দেওয়া হয়। সোহেল (৩৫) নামে একজনকে আটকে রাখা হয়।
শুক্রবার (১৬ মে) সকাল থেকে ৪৫ লাখ টাকার কথা ফেসবুকে ভাইরাল হলেও আটক সোহেলকে জিজ্ঞাসাবাদে ২৭ লাখ টাকার কথা স্বীকার করে এবং সেই টাকা সোহেলসহ ওরা তিন বন্ধু সমানভাবে বন্টন করে নেয় বলে জানিয়েছে পুলিশ। তবে সেই টাকা এখনো উদ্ধার করা যায়নি এবং অপর দুইজন হাবিব ও সুন্দর পলাতক আছে বলে জানা গেছে। টাকার প্রকৃত মালিক কে এখনো পর্যন্ত তা জানা যায়নি।
ঘটনা ও টাকার বিষয়ে আটক সোহেল জানায়, সে একজন ফেরি ব্যবসায়ী।
পিকাপভ্যানে করে বিভিন্ন সবজি ও ফলমূল বিক্রি করেন। গত ১ মে রাত দেড়টায় নিমসার থেকে মালামাল নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে হোসেনপুর উলশন কোল্ড স্টোরেজের সামনে দেবীদ্বারগামী একটি মোটরসাইকেল থেকে একটি খরচের সাদা বেগ ছিটকে পড়ে যায়। তখন সে ব্যাগটা তুলে নিয়ে আসি। এ সময় একই এলাকার হাবিব সঙ্গে ছিল।
ব্যাগ খুলে দেখি ব্যাগের ভেতরে টাকা ভর্তি। তখন আমরা ব্যাগটি বাড়িতে না নিয়ে বাড়ির কাছাকাছি একটি ময়দার মেইলের পাশে ঘাসের ঝুপড়ির নিচে ঢেকে রাখি। গত ১৪ মে দুপুরের বৃষ্টির সময় তিন বন্ধু সোহেল, হাবিব ও সুন্দর আলী প্রতিজন ৯ লাখ টাকা করে ২৭ লাখ টাকা ভাগবাটোয়ারা করে নেয়। এ সময় বিষয়টি অনেকের মধ্যে জানাজানি হয়ে গেলে টাকার ভাগ না দেওয়ায় ঘটনাটি প্রকাশ্যে চলে আসে। সোহেল তার ভাগের ৯ লাখের মধ্যে ৫ লাখ টাকা তার শ্বশুরের কাছে জমা রাখে, ৩ লাখ টাকা তার বন্ধুকে গাড়ি কেনার জন্য ঋণ দেয় এবং ১ লাখ টাকা জুয়া খেলে খরচ করে বলে জানায়।
সোহেল আরো জানায়, ৪৫ লাখ টাকা উদ্ধার করে নিয়ে যেয়ে ৩ দফায় কালিকাপুর, জাফরগঞ্জ ও দেবীদ্বারের ৩ গ্রুপের রোষাণলে পড়েছি। টাকার জন্যে ওরা প্রচুর মারধর করেছে। অবশেষে দেবীদ্বারের গ্রুপ টাকা না পেয়ে আমাকে পুলিশে সোপার্দ করে।
আটক সোহেল উপজেলার জাফরগঞ্জ ইউনিয়নের পূর্ব আলিয়াবাদ গ্রামের অহিদ মিয়ার ছেলে। এছাড়া হাবিব একই গ্রামের মৃত মোহর আলীর ছেলে এবং সুন্দর আলী একই এলাকার সাহেব আলীর ছেলে।
এ বিষয়ে দেবীদ্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামসুদ্দীন মোহাম্মদ ইলিয়াছ বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ৪৫ লাখ টাকার কথা ছড়লেও আটক সোহেলকে জিজ্ঞাসাবাদে ২৭ লাখ টাকার কথা জানা গেছে। ওই টাকা তারা ৩ জন সমান ভাবে প্রতিজন ৯ লাখ টাকা করে ভাগ করে নেয়। এ টাকার প্রকৃত মালিক এখনো চিহ্নিত করা যায়নি। তাছাড়া এ বিষয়ে কেউ কোনো অভিযোগ করেননি। হাবিব ও সুন্দর পলাতক আছেন। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এসএম/টিএ