বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ বলেছেন, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের পাশাপাশি তরুণ সমাজে মাদকের প্রভাব নিয়েও গুরুত্ব দিয়ে ভাবার সময় এসেছে। তিনি বলেন, “আমি বিএনপিকে বলবো এই ইস্যুটিকে অগ্রাধিকার দেওয়ার জন্য। কারণ, ‘বিএনপি টুডে ইজ দ্য ভয়েজ অব দ্য ন্যাশন’— বিএনপি আজ জাতির কণ্ঠস্বর।”
তিনি বলেন, বিএনপি কেবল আমাদের কণ্ঠস্বর নয়, এটি এখন সারা বাংলাদেশের মানুষের কণ্ঠস্বর। অনেকেই লজ্জায় মাদকের বিষয়ে মুখ খুলেন না, অনেক পরিবার এ নিয়ে চুপ থাকেন। অথচ আমার হিসাবে প্রায় ২৫ থেকে ৩০ লাখ তরুণ-তরুণী প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে মাদকের প্রভাবে আক্রান্ত। যদি প্রত্যেক নির্বাচনী আসনে গড়ে এক হাজার মাদকাসক্ত থাকে, তবে বছরে প্রায় তিন লাখ নতুন মাদকাসক্ত তৈরি হচ্ছে। প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে।
আন্দালিব রহমান পার্থ আরও বলেন, “বিএনপি যদি ক্ষমতায় আসে, তবে প্রতিটি জেলায় আন্তর্জাতিক মানের ড্রাগ রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টার নির্মাণ করা উচিত। কারণ, মাদক তরুণ সমাজকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। তাই বিএনপি যেন এই বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দেয়।”
শুক্রবার (১৬ মে) সন্ধ্যায় খুলনা প্রেসক্লাবের ব্যাংকুয়েট হলে ‘শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও মৌলিক অধিকার নিয়ে তারুণ্যের ভাবনা’ শীর্ষক খুলনা-বরিশাল বিভাগীয় সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।
সেমিনারের আয়োজন করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।
আন্দালিব রহমান পার্থ বলেন, গত ১৭ বছরে তরুণ সমাজ প্রযুক্তির মাধ্যমে ৭০ বছর এগিয়েছে। কিন্তু রাজনীতিবিদরা সেই অগ্রগতির সঙ্গে তাল মিলাতে পারেননি। এর ফলে তরুণদের রাজনীতিতে আগ্রহ কমে গেছে। তবে বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনগুলোর তরুণদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগের উদ্যোগকে আমি সাধুবাদ জানাই, যেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা বুঝতে পারে রাজনীতিবিদরা কোনো ভিন্ন গ্রহের মানুষ নন। আমরা তাদের মতোই মানুষ এবং তাদের মতোই ভাবি।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি যখন ৩১ দফা বা আন্দোলনের কর্মসূচি ঠিক করেছে, তখন আমাদের মতামত নিয়েছে। এজন্য আমরা কৃতজ্ঞ।
বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, “শিক্ষা সবার জন্য সমান হওয়া উচিত। অর্থ যেন কখনো শিক্ষার পথে বাধা হয়ে না দাঁড়ায়। ঢাকা সিটির ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলগুলোতে অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল পরিবারের সন্তানদের জন্যও পড়াশোনার সুযোগ থাকা দরকার।”
তিনি বলেন, “বিএনপি যদি আমাদের ডাকে, আমরা অনেক আইডিয়া শেয়ার করতে চাই। তারা তা গ্রহণ করুক বা না করুক, আমাদের দায়িত্ব বলা। জাতি আজ বিএনপির দিকে তাকিয়ে আছে। আমরা সবাই বিএনপির সঙ্গে কাজ করছি। অতীতে আন্দোলনে ছিলাম, ইনশাআল্লাহ সামনে থাকবো।”
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের উপদেষ্টা মাহদী আমিনের উপস্থাপনায় সেমিনারে বক্তব্য দেন বিডিজবস’র প্রতিষ্ঠাতা ফাহিম মাশরুর, ডিডব্লিউ একাডেমির প্রভাষক ড. মারুফ মল্লিক, চিন্তক ও সম্পাদক রেজাউল করিম রনি, এ এম জেড হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. সায়েম মোহাম্মদ, ইউনিভার্সিটি অফ সেন্ট্রাল ফ্লোরিডার অধ্যাপক ড. সাইফুল ইসলাম খন্দকার, শিখো’র প্রতিষ্ঠাতা শাহীর চৌধুরী, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. শামীমা সুলতানা এবং ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অফ সিঙ্গাপুরের সহযোগী অধ্যাপক ড. তৌফিক জোয়ার্দার।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, কেন্দ্রীয় ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল, তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বাবী হেলালসহ অনেকে।
এসএস/এসএন