সংবিধান পুনর্লিখন করে একনায়কতন্ত্র আরো কার্যকর করা হয়েছে

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য ও বিশিষ্ট নাগরিক বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন, ‘বাংলাদেশের বিদ্যমান সাংবিধানিক, প্রাতিষ্ঠানিক ও আইনি কাঠামো মূলত ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত করার অনুকূল পরিবেশ তৈরি করেছে।’ তাঁর মতে, এসব কাঠামো স্বৈরাচার প্রতিষ্ঠার পথ প্রশস্ত করেছে।

মঙ্গলবার (১৩ মে)  ‘ইনসাইড আউট’ নামের এক আলোচনা অনুষ্ঠানে তিনি এসব মন্তব্য করেন। অনুষ্ঠানে উপস্থাপক প্রশ্ন রাখেন, ‘রাজনৈতিক দলের ভিতরে গণতন্ত্র চর্চা কতটা হয় সেটি আমরা অনেকভাবে দেখি।
আমাদের নির্বাচনি ব্যবস্থা কি দলের ভিতরে একনায়ক তৈরি করার সুযোগ করে দেয়?’

উত্তরে বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘১৯৭২ সালের সংবিধান বঙ্গবন্ধুকে সামনে রেখে প্রণয়ন করা হয়েছিল। সেই সময়েই সংবিধানে এমন কিছু বিধান রাখা হয়, যা পরবর্তীতে ক্ষমতা কুক্ষিগত করার সুযোগ তৈরি করে দেয়।’

২০০৮ সালের নির্বাচনে শেখ হাসিনার বিজয়ের প্রসঙ্গ টেনে বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘শেখ হাসিনা কোনো সামরিক বাহিনীর সহায়তায় ক্ষমতায় আসেননি, ট্যাংকে চড়ে আসেননি, এমনকি সংবিধান বাতিলও করেননি। তিনি নির্বাচনের মাধ্যমেই ক্ষমতায় আসেন।

যদিও সেই নির্বাচন নিয়েও বিতর্ক রয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘২০১১ সালে পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানে বড় ধরনের পরিবর্তন আনা হয়। বলা হয়েছিল, বাহাত্তরের সংবিধানে ফিরে যাওয়া হচ্ছে। কিন্তু বাস্তবে সংবিধানকে কার্যত পুনর্লিখন করে, সেটিকে আরও একনায়কতান্ত্রিক রূপ দেওয়া হয়েছে।

তাঁর মতে, এই পরিবর্তনগুলোর ফলে বর্তমান কাঠামো স্বৈরাচার প্রতিষ্ঠার আরও উপযোগী হয়ে উঠেছে। বদিউল আলম মজুমদার মনে করেন, রাজনৈতিক দলগুলোর অভ্যন্তরেও গণতন্ত্রচর্চার ঘাটতি রয়েছে, যা একনায়কসুলভ নেতৃত্বের উত্থানকে আরও সহজ করে তোলে। তাই তিনি রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে গণতান্ত্রিক অনুশীলনের ওপর জোর দেওয়ার আহ্বান জানান।


এসএন 

Share this news on: