কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহারে বাড়ছে সাইবার ঝুঁকি

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) দ্রুত উন্নতির ফলে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে সাইবার হামলা শুধু বাড়বেই না, বরং তা হবে আরও অনেক বেশি জটিল, কার্যকর এবং শনাক্ত করা কঠিন—এমনটাই সতর্ক করেছে যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল সাইবার সিকিউরিটি সেন্টার (এনসিএসসি)।

সম্প্রতি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৭ সালের মধ্যে এআই-চালিত সাইবার অপরাধ বিশ্বজুড়ে বড় হুমকি হিসেবে দেখা দেবে। যে সব প্রতিষ্ঠান প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা উন্নত করছে না, তারা হতে পারে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ।

জেনারেটিভ এআই-এর মতো প্রযুক্তির ফলে এখন বাস্তবসম্মত ফিশিং ই-মেইল তৈরি, ম্যালওয়্যার কোড লেখা, এমন কি ব্যক্তি বিশেষকে লক্ষ্য করে কনটেন্ট তৈরি করাও খুব সহজ হয়ে গেছে। এতে সাইবার অপরাধে জড়াতে এখন আর বিশেষ দক্ষতার প্রয়োজন নেই।

এনসিএসসি জানিয়েছে, যুক্তরাজ্যের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া, বিদ্যুৎ, পানি, স্বাস্থ্যসেবাসহ গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোগুলো এখন বেশি ঝুঁকির মুখে। আর এ ঝুঁকি কেবল যুক্তরাজ্যেই নয়—বিশ্বজুড়ে বাড়ছে।

সাইবার নিরাপত্তা সংস্থা মাইমকাস্ট-এর এক বৈশ্বিক জরিপে দেখা গেছে, ৫৫ শতাংশের বেশি প্রতিষ্ঠান এখনো এআই-নির্ভর হুমকির বিরুদ্ধে কোনো কার্যকর পরিকল্পনা নেয়নি। এতে আগামী দিনে দুই ধরনের প্রতিষ্ঠানের পার্থক্য সৃষ্টি হবে—যারা নিরাপদ এবং যারা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রযুক্তি, বাজেট ও দক্ষ জনবল যেখানে বেশি থাকবে, তারা এআই-চালিত সাইবার ঝুঁকির বিরুদ্ধে ভালোভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারবে। অন্যদিকে দুর্বল প্রতিষ্ঠানগুলো হতে পারে বড় ক্ষতির শিকার।

এআই প্রযুক্তি শুধু হামলার কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে না, বরং অনেক প্রতিষ্ঠান এটিকে হুমকি শনাক্তকরণ ও ঝুঁকি বিশ্লেষণেও ব্যবহার করছে। তবে জেনারেটিভ এআই-এর ব্যবহারে তথ্য ফাঁসের আশঙ্কায় উদ্বিগ্ন রয়েছে ৮১ শতাংশ প্রতিষ্ঠান।

অ্যাবসলিউট সিকিউরিটি-এর কর্মকর্তা অ্যান্ডি ওয়ার্ড জানান, “এআই প্রযুক্তি সাইবার হামলার ধরনকে দ্রুত বদলে দিচ্ছে। এখন আক্রমণ আগের চেয়ে অনেক বেশি গতিময় এবং জটিল।”

সাইবার বিশেষজ্ঞদের মতে, এআই এখন প্রতিদিনের ডিজিটাল জীবনের অংশ। তাই প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের উচিত এখন থেকেই শক্তিশালী সাইবার নিরাপত্তা ব্যবস্থা তৈরি করা এবং এআই কীভাবে প্রতিরক্ষা ও আক্রমণ দুইভাবেই ব্যবহৃত হতে পারে—তা বোঝা ও মোকাবিলায় প্রস্তুতি নেওয়া।

আরএম/এসএন

Share this news on:

সর্বশেষ

img
স্ত্রীসহ সাবেক সাব-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা Aug 13, 2025
img
বেসরকারি খাতে এখনো আস্থার সংকট : অর্থ উপদেষ্টা Aug 13, 2025
img
আজ দেশে কত দামে স্বর্ণ ও রুপা বিক্রি হচ্ছে? Aug 13, 2025
img
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে মালয়েশিয়ার শিক্ষামন্ত্রীর সাক্ষাৎ Aug 13, 2025
img
স্কোয়াড থেকে বাদ, ক্লাব ছাড়ছেন পিএসজির চ্যাম্পিয়ন গোলরক্ষক Aug 13, 2025
img
ব্রিটেনে এক বছরে ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে প্রবেশে রেকর্ড Aug 13, 2025
img
নৌকাসহ নাফ নদী থেকে ৫ জেলেকে ধরে নিয়ে গেছে আরাকান আর্মি Aug 13, 2025
img
প্রধান উপদেষ্টাকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি দিলো ইউকেএম Aug 13, 2025
img
অভিনেতাদের মধ্যে রাজনীতির রং আসা উচিত নয়: শতাব্দী রায় Aug 13, 2025
img
শেফালিকে ছাড়া প্রথম বিবাহবার্ষিকীতে পরাগের আবেগঘন পোস্ট Aug 13, 2025
img
চলে গেলেন ত্রিশালের সাবেক এমপি মাদানী Aug 13, 2025
img
টিউলিপের বাংলাদেশি নাগরিকত্ব মিলেছে! : ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের প্রতিবেদন Aug 13, 2025
img
কৃষি ঋণের আওতায় কাঁঠাল-কালোজিরাসহ নতুন ১০ ফসল Aug 13, 2025
img
স্বামীর পর এবার গ্রেপ্তার দক্ষিণ কোরিয়ার সাবেক ফার্স্ট লেডি Aug 13, 2025
img
বিশ্বের বায়ুদূষণের শীর্ষে জাকার্তা, মাঝারি অবস্থানে ঢাকা Aug 13, 2025
img
প্রবাসীদের রেমিট্যান্সে অর্থনীতি মজবুত অবস্থায় ঘুরে দাঁড়িয়েছে:প্রধান উপদেষ্টা Aug 13, 2025
img
সাত সকালে রাজধানীতে গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি Aug 13, 2025
img
ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপদসীমার ৭ সেন্টিমিটার ওপরে Aug 13, 2025
img
রুশ বাহিনীর নতুন অগ্রযাত্রায়ও অঞ্চল ছাড়তে অস্বীকৃতি জেলেনস্কির Aug 13, 2025
img
৩৪ বছর পর পাকিস্তানকে দ্বিপাক্ষিক সিরিজে হারাল উইন্ডিজ Aug 13, 2025