পাকিস্তানের সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতার পক্ষে সুদৃঢ় সমর্থন জানানোয় চীনের প্রশংসা ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন পাকিস্তানের ডেপুটি প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার।
মঙ্গলবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ডনের খবরে বলা হয়, সোমবার তিনদিনের সরকারি সফরে বেইজিং পৌঁছান ইসহাক দার। চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই’র আমন্ত্রণে এ সফর অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
সফরকালে ইসহাক দার চীনের কমিউনিস্ট পার্টির আন্তর্জাতিক বিভাগের মন্ত্রী লিউ জিয়ানচাও-এর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সফরের উদ্দেশ্য ছিল সাম্প্রতিক পাকিস্তান-ভারত উত্তেজনার প্রেক্ষিতে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা নিয়ে আলোচনা করা।
বিবৃতি অনুযায়ী, দুই নেতা পাকিস্তানের রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে চীনের কমিউনিস্ট পার্টির সম্পর্ক আরো গভীর করার বিষয়ে একমত হন। লিউ জিয়ানচাও বলেন, ‘সর্বকালের কৌশলগত সহযোগী’ ও ‘ঘনিষ্ঠ বন্ধু' হিসেবে চীন পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ককে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে আসছে এবং ভবিষ্যতেও তা অব্যাহত থাকবে।
এই সফর এমন সময় হচ্ছে যখন পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে পেহেলগাম হামলার পর চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। ভারত প্রমাণ ছাড়াই ওই হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করে আসছে। এর প্রেক্ষিতে ৬-৭ মে ভারত পাঞ্জাব ও আজাদ কাশ্মীরে বিমান হামলা চালায়, যাতে বেসামরিক মানুষ হতাহত হয়।
এর পরিপ্রেক্ষিতে পাকিস্তান পাঁচটি ভারতীয় যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করে। ড্রোন প্রতিহত ও বিমানঘাঁটিতে পাল্টা হামলার ঘটনা ঘটে। পরে ১০ মে মার্কিন হস্তক্ষেপে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। ভারত এখনও কঠোর অবস্থানে রয়েছে, আর পাকিস্তান উত্তেজনা বৃদ্ধির বিষয়ে সতর্ক করে শান্তিপূর্ণ আলোচনার আহ্বান জানিয়েছে।
সফরের সময় ইসহাক দার তার চীনা সমকক্ষের সঙ্গে দক্ষিণ এশিয়ার বর্তমান পরিস্থিতি এবং আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার ওপর এর প্রভাব নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবেন। দুই পক্ষ পাকিস্তান-চীন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের সামগ্রিক বিষয় পর্যালোচনা করবে এবং আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক পারস্পরিক আগ্রহের বিষয়ে মতবিনিময় করবে।
আফগানিস্তানের অন্তর্বর্তী পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুতাক্কিও বেইজিংয়ে উপস্থিত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি আঞ্চলিক শান্তি ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত আলোচনায় অংশ নেবেন।
চীন সফরের পূর্বে দার সাংবাদিকদের জানান, চীন পাকিস্তানের অন্যতম প্রধান বাণিজ্যিক অংশীদার এবং দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক অনেক ঘনিষ্ঠ। বৈঠকে তার চীনা নেতৃবৃন্দের সঙ্গে রাজনৈতিক, স্থানীয়, আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে, যার মধ্যে পাকিস্তান-ভারত সাম্প্রতিক উত্তেজনাও অন্তর্ভুক্ত।
আরআর/এসএন