মিয়ানমারের গৃহযুদ্ধ নিয়ে দুটি বিশেষ বৈঠক করবে দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় জোট আসিয়ান । আগামী সপ্তাহে তাদের শীর্ষ সম্মেলনের আগে এ বৈঠকগুলো হবে। জোটের মহাসচিব কাও কিম হাউর্ন বুধবার (২১ মে) এ তথ্য জানিয়েছেন। মিয়ানমারে শান্তি ফেরাতে দীর্ঘদিন চেষ্টা চালাচ্ছে আসিয়ান। এ দুটি বৈঠক সেগুলোরই অংশ।
২০২১ সালে অং সান সুচির নির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে দেশটির সেনাবাহিনী। সামরিক এ অভ্যুত্থানের পর থেকে মিয়ানমারে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। চলমান এ যুদ্ধে প্রায় ৩৫ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
ওই বছর আসিয়ান জোট শান্তি প্রস্তাব দিয়েছিল। যেটিতে সহিংসতা বন্ধ এবং আলোচনার তাগিদ দেওয়া হয়েছিল। তবে এই প্রস্তাব কার্যকর না হওয়ায় মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর জেনারেলদের আসিয়ান সম্মেলনে যোগ দেওয়া থেকে বাদ দেওয়া হয়।
কাও কিম হাউর্ন বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে বৈঠক দুটির ব্যাপারে বলেছেন, "এটি (বৈঠকগুলো) একটি নতুন বিষয় যা বিশেষভাবে মিয়ানমারকে কেন্দ্র করে হবে। এতে অন্য কিছু থাকবে না। বৈঠকগুলো হবে মালয়েশিয়ায়।”
তবে কী কী বিষয়ে আলোচনা হবে অথবা কী প্রস্তাব দেওয়া হবে সে ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু জানাননি কাও কিম হাউর্ন।
দুটি বৈঠকের প্রথমটি হবে আসিয়ানের সাবেক, বর্তমান ও পরবর্তী সভাপতি দেশগুলোর মধ্যে। সেগুলো হলো মালয়েশিয়া, লাওস এবং ফিলিপাইন। অপরদিকে দ্বিতীয় বৈঠকটি হবে জোটের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের মধ্যে।
২০২১ সালের সেনাবাহিনীর সামরিক অভ্যুত্থানের আগে মিয়ানমারে অর্থনৈতিক উন্নয়নের একটি সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল। কিন্তু এই অভ্যুত্থানের প্রভাবে গৃহযুদ্ধ শুরু হলে সবকিছু বিনষ্ট হয়। এছাড়া সামরিক বাহিনী সাধারণ মানুষ ও বিদ্রোহীদের ওপর বর্বর হামলা চালানো শুরু করে। তবে দেশটির সামরিক জান্তার দাবি, পশ্চিমা দেশগুলো তাদের নিয়ে প্রোপাগান্ডা ছড়িয়েছে।
‘আমরা সবাই খুবই অধৈয্যশীল’
মিয়ানমারে এতদিন ধরে সংঘাত চললেও আসিয়ান কেন কিছু করতে পারেনি। এমন প্রশ্ন করলে কাও কিম হাউর্ন বলেন, “যদি কেউ এই সমস্যার দ্রুত সমাধান চায় তাহলে এটি সঠিক হবে না। আমরা এ ব্যাপারে কাজ করছি। কিন্তু বিষয়টি সমাধানে সময় লাগতে পারে। দেখুন, বিষয় হলো আমরা খুবই অধৈর্য্যশীল।”
গত মার্চে মিয়ানমারে শক্তিশালী ভূমিকম্পে হাজার হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। ওই সময় সামরিক জান্তা ও বিদ্রোহীদের মধ্যে যুদ্ধবিরতি হয়। কিন্তু তা সত্ত্বেও হামলা পাল্টা হামলা চলতে থাকে। এমনকি বিভিন্ন জায়গায় বিমানবাহিনীর বিমান হামলা এবং গোলাবর্ষণের তথ্যও পাওয়া গেছে। এ ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে আসিয়ানের মহাসচিব বলেন, কারা যুদ্ধবিরতি আগে লঙ্ঘন করেছে সেটি স্পষ্ট নয়।
এদিকে আসিয়ান-এর ১১তম সদস্য হিসেবে পূর্ব তিমুরকে অন্তর্ভুক্ত করার ক্ষেত্রে ভালো অগ্রগতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। সদস্য হতে যেসব মানদণ্ড প্রয়োজন সেগুলোর কিছু পূর্ব তিমুর পূরণ করতে পেরেছে বলে মন্তব্য করেন কাও কিম হাউর্ন।
সূত্র: রয়টার্স
আরএম/এসএন