আর্জেন্টিনা ফুটবল নিয়ে বাংলাদেশে উন্মাদনার কথা কারো অজানা নয়। ২০২২ সালে কাতার বিশ্বকাপ চলাকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কল্যাণে যা নজর কাড়ে লিওনেল মেসি-আনহেল দি মারিয়াদেরও। এর জেরে দীর্ঘদিন পর ঢাকায় চালু হয় আর্জেন্টিনার দূতাবাস। এরপর ফুটবল নিয়ে বাংলাদেশে ভালো কিছু করার পরিকল্পনার কথাও জানিয়েছিল আর্জেন্টিনা।
হামজা চৌধুরী, সামিত সোমদের নিয়ে বাংলাদেশ এখন ফুটবলের নতুন জোয়ার দেখছে। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সভাপতি তাবিথ আউয়াল জানিয়েছেন, দেশের ফুটবলের উন্নয়নে আর্জেন্টিনার সঙ্গে চুক্তি হয়েছে। তাই আর্জেন্টিনার রাষ্ট্রদূত মার্সেলো কার্লোস সিসা নিজেই বাংলাদেশের তৃণমূল পর্যায়ে ফুটবলারদের দেখতে ছুটে এসেছেন।
শুক্রবার (২৩ মে) যশোর শামস-উল-হুদা ফুটবল একাডেমিতে ১৫টি ফুটবল একাডেমির ৬০০ ফুটবলারকে নিয়ে তৃণমূল ফুটবল দিবস ও বিশ্ব ফুটবল সপ্তাহ পালন করেছে বাফুফে। সেখানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আর্জেন্টিনার রাষ্ট্রদূত মার্সেলো কার্লোস সিসা। একই অনুষ্ঠানে বেলুন উড়িয়ে ‘ভাষা সৈনিক মুসা ভবনের’ উদ্বোধন করেন তিনি।
আর্জেন্টিনার রাষ্ট্রদূত মনে করেন, ভবিষ্যতে ফুটবলে শক্তিশালী দল হয়ে উঠবে বাংলাদেশ। তিনি বলেন, ‘খেলোয়াড়দের আরও ভালো করে তুলতে এখানে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। বাংলাদেশও ভবিষ্যতে একটি শক্তিশালী জাতীয় দল গড়বে বাকি দেশগুলোর মতো। তবে ফুটবল খেলার সুযোগ উন্মুক্ত থাকতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘আর্জেন্টিনায় আমরা দুই বা তিন বছর বয়স থাকতেই একটি করে ফুটবল হাতে পাই। ছেলে হোক বা মেয়ে—আমরা খেলতে শুরু করি।
কারণ, ফুটবল খেলতে নির্দিষ্ট জায়গার দরকার হয় না, শুধু খেলতে ও উপভোগ করতে জানলেই হয়। আর যদি দেশ সহায়তা করে, তাহলে সবাই শেখে এবং ভালো খেলোয়াড় হয়ে ওঠে।’
মারসেলো কারলোস সিসা আরও বলেন, 'বাংলাদেশে ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনা নিয়ে ফুটবল খেলা হয়। এখানে ধনী-গরিব, ছোট-বড় সব স্তরের মানুষই ফুটবল খেলা দেখতে মাঠে আসে। ফুটবল খেলার আনন্দ সকলেই ভাগাভাগি করে নেয়। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, বাংলাদেশে ফুটবলের সফলতা আসবে।'
এ সময় তাবিথ আউয়াল বলেন, 'আমরা চাই, শামস্-উল-হুদা ফুটবল একাডেমি যা করছে, তাতে গ্রামপর্যায় থেকে ফুটবলের উন্নয়ন হবে। ফুটবলের উন্নয়নে আমরা এমন মাঠই চাই। আমরা তৃণমূল পর্যায়ের ফুটবলারদের উন্নয়ন করতে চাই। গ্রাসরুটস ফুটবল দিবস ও বিশ্ব ফুটবল সপ্তাহে তৃণমূল থেকে ছয়শ ফুটবলার অংশ নিয়েছে। এটা একটি বড় রেকর্ড।'
তিনি আরও বলেন, 'বাফুফের অন্তর্ভুক্ত রয়েছে ২২২টি একাডেমি। প্রতিটি একাডেমির পেছনে বাফুফে কোনো না কোনোভাবে সাপোর্ট দিয়ে থাকে।
কারণ গ্রাসরুটস লেভেলে আমাদের খেলোয়াড় ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। আমরা এসব ফুটবলারের যথাযথ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ করে গড়ে তুলতে চাই।'
বাফুফের সহসভাপতি ও যশোরের শামস-উল-হুদা একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা নাসের শাহরিয়ার জাহেদী বলেন, ‘ফিফা ও এএফসির এই অনুষ্ঠানে অনেক একাডেমি থেকে সব মিলিয়ে ছয় শতাধিক বাচ্চা আমাদের একাডেমিতে আসায় আমরা অনুপ্রাণিত। বেসরকারি উদ্যোগে এ রকম একাডেমির মাধ্যমে আমাদের ফুটবল এগিয়ে যাবে। বাফুফে সভাপতি ফেডারেশনের পক্ষ থেকে একাডেমিগুলোকে সহায়তা করার ঘোষণাও দিয়েছে।’
আরএম